বছরের মাঝামাঝি বর্ষা অনেক সময়ই আশীর্বাদ হয়ে আসে বাংলার কৃষিজমির জন্য। কিন্তু এবার সেই বৃষ্টি আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ জেলায়। ২২ জুন থেকে রাজ্যে সক্রিয় হয়েছে একটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপ এবং মৌসুমী অক্ষরেখা—ফলে একটানা ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি বইছে ঝোড়ো হাওয়া।
দক্ষিণবঙ্গের মেদিনীপুর পূর্ব ও পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রাম—এই ৯টি জেলায় আগামী কয়েকদিন ধরে ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ৫০ কিমি/ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowএদিকে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে পরিস্থিতি আরও জটিল। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কুচবিহার, মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস মিলেছে। এই এলাকাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ পৌঁছতে পারে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। সঙ্গে বজ্রপাত ও ৩০–৫০ কিমি/ঘণ্টা বেগে হাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের তরফে জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা। নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়া, কাঁচা বাড়ির ক্ষতি, কৃষিজমির জলমগ্ন হওয়া, বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঝুঁকি, দৃশ্যমানতা কমে যাওয়া এবং যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূল এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর লাগোয়া এলাকায় সমুদ্রে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। সমুদ্রের বুকে বয়ে যেতে পারে ৩৫ থেকে ৫৫ কিমি/ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া। ফলে মাছ ধরার নৌকা নিয়ে সমুদ্রে নামা হতে পারে বিপজ্জনক।
এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তরফে প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। জেলা স্তরে উদ্ধারকারী দল মোতায়েন রাখা হয়েছে। নিচু অঞ্চলের মানুষজনকে সতর্ক করা হচ্ছে, পাশাপাশি কৃষকদের ফসল বাঁচাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গোটা রাজ্যে মৌসুমি ঝড়বৃষ্টির এই তাণ্ডব আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর। ফলে আপাতত ঘরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
FAQ: সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর
1. রাজ্যে এই মুহূর্তে কেমন আবহাওয়ার পরিস্থিতি?
একটি নিম্নচাপ ও মৌসুমী অক্ষরেখার প্রভাবে রাজ্যের বহু জেলায় চলছে ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া।
2. কোন কোন জেলায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে?
দক্ষিণবঙ্গের ৯টি জেলা এবং উত্তরবঙ্গের ৮টি জেলার ওপর বেশি প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
3. কী ধরনের সতর্কতা জারি হয়েছে?
আবহাওয়া দফতরের তরফে কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে—যার মানে হলো মাঝারি থেকে গুরুতর বিপদের সম্ভাবনা।
4. মৎস্যজীবীরা কী করবেন এই অবস্থায়?
সমুদ্র একদম না যাওয়াই ভালো, কারণ বায়ুর গতিবেগ অনেক বেশি এবং সমুদ্র উত্তাল।
5. এই পরিস্থিতি কতদিন স্থায়ী হতে পারে?
পরবর্তী কয়েকদিন এই বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো আবহাওয়া বজায় থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস মিলেছে।