বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে ফের ঝড়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি এক অডিও বার্তায় অন্তর্বর্তী নেতা মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে তুললেন একাধিক গুরুতর অভিযোগ। দেশের সার্বভৌমত্ব থেকে শুরু করে মৌলবাদীদের পুনরুত্থানের অভিযোগ এনেছেন তিনি।
প্রধান অভিযোগ, মুহাম্মদ ইউনুস ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আঁতাঁত করে’ বাংলাদেশকে বিক্রি করে দিচ্ছেন। শেখ হাসিনার দাবি, ইউনুস সরকার গঠনের পর নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সহায়তায় ক্ষমতা দখল করেছেন এবং বন্দি মৌলবাদীদের মুক্তি দিয়ে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছেন। এতে করে দেশে মৌলবাদের উত্থান ফের একবার চোখে পড়ছে।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowশেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যা তিনি অসাংবিধানিক এবং অবৈধ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করা হয়েছে এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হাসিনা তাঁর বক্তব্যে ফিরে যান অতীতেও। উল্লেখ করেন জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের সাহসিকতার কথা—যিনি মার্কিন চাপে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছাড়তে অস্বীকার করেছিলেন। তাঁর মতে, ইউনুস সেই পথেই হেঁটেছেন, যা দেশের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করছে।
২০২৪ সালের ৭ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্বাসনের পর অন্তর্বর্তী নেতা হিসেবে ক্ষমতায় আসেন নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনুস। কিন্তু শেখ হাসিনা প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর সেই পদে থাকার সাংবিধানিক ভিত্তি নিয়েও। তাঁর মতে, জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া একজন ‘চিফ অ্যাডভাইজার’ হিসেবে ক্ষমতা দখল সম্পূর্ণ অবৈধ।
এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে ভবিষ্যতের দিশা কোন পথে? দেশের প্রশাসন কি মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে? ক্ষমতা পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়ায় জনগণের মতামত কীভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে? আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা কি দেশের গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে? মুহাম্মদ ইউনুসের আন্তর্জাতিক পরিচিতি ও নোবেল সম্মান কি তাঁর পদে থাকার ন্যায্যতা প্রমাণ করে? এই প্রশ্নগুলির জবাব সময়ই দেবে। তবে, শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বার্তা যে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।