Trending

Video

Shorts

whatsapp [#128] Created with Sketch.

Join

Follow

রোজগার হচ্ছে দ্বিগুণ, B.Tech পাশ করে চাকরি ছেড়ে যোগ দিয়েছেন চাষাবাদে

শ্রেয়া চ্যাটার্জি : রাকেশ মাহান্তে তে b tech পাস করে চাকরি করতে ঢুকেছিলেন। পড়াশোনা শেষ করে প্রত্যেককেই জীবিকার প্রয়োজনে চাকরি করতে হয়। কিন্তু অনেকেই এই চাকরির মধ্যে দিয়ে আনন্দ খুঁজে…

Avatar

শ্রেয়া চ্যাটার্জি : রাকেশ মাহান্তে তে b tech পাস করে চাকরি করতে ঢুকেছিলেন। পড়াশোনা শেষ করে প্রত্যেককেই জীবিকার প্রয়োজনে চাকরি করতে হয়। কিন্তু অনেকেই এই চাকরির মধ্যে দিয়ে আনন্দ খুঁজে পান না। পেটটা ভরে ঠিক কথা কিন্তু মনে বিষন্নতা থাকে। অবসন্নতা কে কাটিয়ে উঠতে তিনি চাকরিটা ছেড়ে দেন। এবং তিনি খুঁজতে চেষ্টা করেন যে কাজটি করলে তিনি অনেকটা মনের আনন্দ পাবেন, সাথে টাকাও রোজগার হবে। তার মন প্রাণ পড়েছিল তাদের জমিতে। তিনি প্রায় কুড়ি একর জমি তার পূর্বপুরুষের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। তিনি অপেক্ষা করছিলেন কতক্ষণে উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি জমিটি পান। তার পরেই তিনি তার কাজ শুরু করেন। এরপরে তিনি ঝাড়খণ্ডের পাত্মাদা ব্লক এ প্রথম কমিউনিটি ফার্মিং দলবদ্ধভাবে চাষের কথা ভাবেন। ২০১৭ সালে তিনি শুরু করেন brook n bees। আশেপাশের চাষীদেরকে দলবদ্ধ করেন এবং তিনি জৈব ফসল উৎপাদন দিয়ে শুরু করেন।

আরও পড়ুন : এক আশ্চর্য ঘটনা, ডিম আর গুড় দিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন তামিলনাড়ুর এক ইঞ্জিনিয়ার

সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻

Join Now

এ বিষয়ে রাকেশ বলেন, তিনি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন। তাই গ্রামের পরিবেশ সম্পর্কে তিনি অনেকটা ওয়াকিবহাল। এছাড়া তিনি এটাও জানেন গ্রামের কতটা জলের অভাব। তার মনে হয়েছিল ওই গ্রামের মানুষ গুলোকে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে তুলে ধরার খুব প্রয়োজন আছে। আর সেই কারণেই তিনি তার চাকরিতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলেন না। তাই তিনি তার গ্রামে ফিরে আসেন এবং চাষাবাদের কাজ শুরু করেন। তবে তার প্রথমদিকে উদ্দেশ্য ছিল, কিছুদিন চাষাবাদের পর তিনি আবার ফিরে যাবেন। কিন্তু এতটাই সমস্যা তিনি লক্ষ্য করলেন তিনি আর ফিরে যেতে পারলেন না, তিনি থেকেই গেলেন। তিনি গ্রামের প্রায় ৮০ জন চাষীকে একত্রিত করে তার একটি ফার্ম তৈরি করেন। ৫০ একর জমির উপর যেখানে রাকেশের জমির পাশাপাশি নিজস্ব চাষি রাও জমি দিয়েছেন। রাকেশের জমিতে টমেটো, ব্রকলি, জুকিনি, লেটুস প্রভৃতি চাষ হয়। তবে সার হিসেবে ব্যবহৃত হয় সমস্ত জৈব সার। সার তৈরি করা হয় গোবর এবং সুস্বাদু নানান রকম ফেলে দেওয়া অংশ ও কেঁচো দিয়ে। কৃত্রিম সারের ব্যবহার করা হয়না । তারপরের দু’বছর রাকেশ চাষাবাদের পদ্ধতির উপরে জোর দিয়েছিল। শুধু চাষীরা নয় তাদের পরিবার ও যোগ দিয়েছিল এই চাষাবাদের কাজে। মাস গেলে তাদের রোজগার ছিল ২৪ হাজার টাকা।

রোজগার হচ্ছে দ্বিগুণ, B.Tech পাশ করে চাকরি ছেড়ে যোগ দিয়েছেন চাষাবাদে

এখানে বাস করতেন হেমব্রম পরিবার, যারা সাঁওতাল সম্প্রদায় থেকে উঠে এসেছিলেন আগে তাদের একমাত্র ভরসা ছিল বন, জংগলের উপরে। কিন্তু ও বন জঙ্গলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পরে এই পরিবারটি বেশ বিপদের মুখে পড়ে। কিন্তু রাকেশের ফার্ম টি তৈরি হওয়ার পরে, তারা বেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়। তাদের আগের অবস্থা তারা অনেকটা কাটিয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও আগে চাষীদের মাঠের কাজে সময় দিতে হতো ১০ ঘণ্টা, যা তাদের পক্ষে বেশ কষ্টকর ছিল কিন্তু পরবর্তীকালে রাকেশের ফ্রম এর ফলে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা মাঠের সময় দিলেই তারা তাদের উপযুক্ত কাজ করে নিতে পারে ফলে তাদের হাতে এসেছে অনেক অতিরিক্ত সময়। তারা চাষ করে সূর্যমুখী, মিলেট, সরষে এবং বিভিন্ন রকমের চাল যথা কালো চাল, লাল চাল। চাষাবাদের জন্য প্রয়োজন প্রচুর জলের কিন্তু তাদের গ্রামে যথেষ্ট জলকষ্ট। ছয় একর জমিতে তৈরি করা হয়েছে জল ধরে রাখার জন্য একটি জায়গা। যেখানে বর্ষাকালে বৃষ্টির জল কে ধরে রাখা যায় এবং যেখানে প্রায় এক লক্ষ লিটার এর ও বেশি জল ধরে।

রাকেশ তখন তার চাকরিতে ছেড়ে দিয়েছিল তখন তাকে অনেকের কাছ থেকে অনেক রকম কথা শুনতে হয়েছিল। এমনকি সেই সময় তার পাশে থাকেনি তার পরিবারের মানুষজনও। কিন্তু এখন রাকেশ দেখিয়ে দিয়েছে যে, মনের ইচ্ছা থাকলে সব কিছু করা যায়।

About Author