রাজ্যজুড়ে ফের এক বড়সড় জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করল রাজ্য সরকার। আজ, ২ আগস্ট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হল ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ ক্যাম্পেইন। ২১ জুলাইয়ের সভার পর মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণামতো এই প্রকল্পের সূচনা হল। চলবে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। লক্ষ্য একটাই—সরকার পৌঁছবে মানুষের দরজায়, বুথ স্তরে। প্রশাসন সরাসরি শুনবে মানুষের অভিযোগ, জানবে তাঁদের সমস্যার কথা এবং করবে দ্রুত সমাধান।নবান্ন সূত্রে খবর, এই কর্মসূচির আওতায় মোট ১৬ ধরনের সরকারি পরিষেবা পাওয়া যাবে একটি নির্দিষ্ট শিবির থেকে। শহর হোক বা গ্রাম—প্রতি তিনটি বুথ মিলে গঠিত হবে একটি ক্যাম্প সেন্টার। সেখানে থাকবেন স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরা। বাধ্যতামূলকভাবে তাঁদের উপস্থিতিই নিশ্চিত করবে যে অভিযোগ শোনা হবে বাস্তবে এবং তা সমাধানের রাস্তায় এগোবে।
প্রধান পরিষেবাগুলি কী কী থাকছে এই প্রকল্পে?
পরিষেবার তালিকা দীর্ঘ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
নিকাশি ও পানীয় জলের ব্যবস্থা
নর্দমা ঢাকানো, কালভার্ট নির্মাণ, টিউবওয়েল বসানো, পানীয় জলের পাইপলাইন সংযোজন।
আলো ও শৌচালয়ের সুবিধা
এলইডি ও সোলার লাইট বসানো, বাজার এলাকায় শৌচালয় নির্মাণ।
স্কুল ও ICDS সেন্টার উন্নয়ন
দেওয়ালে ছবি আঁকা, বেঞ্চ, শৌচাগার, খেলার জায়গা, নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা।
সামাজিক পরিকাঠামো
পুকুর উন্নয়ন, ময়লা ফেলার জায়গা, বাজার সংস্কার, বাসস্টপে শেড ও ফুটপাত।
বিদ্যুৎ পরিষেবা ও সবুজায়ন
ট্রান্সফর্মার সংস্কার, কমিউনিটি হল ও স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ, খোলা জায়গায় জিম, পার্কে বেঞ্চ।সরকারি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রাজ্যজুড়ে মোট **২৭ হাজার শিবির** করা হবে, যা প্রায় **৮০ হাজারের বেশি বুথকে** কভার করবে। শিবির চলবে পুজো ও সরকারি ছুটি ছাড়া বাকি সব দিনে। শিবিরের যাবতীয় কাজ হবে সম্পূর্ণ **অনলাইনের মাধ্যমে**, স্বচ্ছতা বজায় রেখে। এতে যেমন সমস্যা সমাধানে গতি আসবে, তেমনই প্রশাসনের সঙ্গে মানুষের সরাসরি সংযোগ তৈরি হবে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ):
১. এই প্রকল্পে কোথায় কোথায় ক্যাম্প হবে?প্রতিটি ব্লকে এবং শহরের নির্দিষ্ট এলাকায়, প্রতি তিনটি বুথ মিলে একটি ক্যাম্প স্থাপন করা হবে।
২. কারা এই শিবিরে অংশ নিতে পারবেন?যেকোনো স্থানীয় বাসিন্দা যাঁরা পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্যা জানাতে চান বা সরকারি সহায়তা চান।
৩. শিবিরে কীভাবে অভিযোগ জানানো যাবে?প্রত্যেকটি অভিযোগ অনলাইনে নথিভুক্ত হবে এবং সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা সেটি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেবেন।
৪. কোনও অভিযোগ জানাতে কাগজপত্র লাগবে?প্রয়োজনীয় নথিপত্র সঙ্গে রাখা ভালো। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৌখিক অভিযোগ গ্রহণ করেই দ্রুত সমাধান করা হবে।
৫. এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য কী?সরকারি পরিষেবা মানুষের দরজায় পৌঁছে দেওয়া এবং সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা।নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ যেমন সহজেই সমস্যার সমাধান পাবেন, তেমনই সরকারের পক্ষ থেকেও উন্নয়নের কাজ হবে ত্বরান্বিত। ‘দুয়ারে সরকার’-এর মতোই, রাজ্যবাসীর প্রত্যাশা, এই প্রকল্পও হয়ে উঠবে সফল ও ফলপ্রসূ।