ঘূর্ণিঝড় যশ, বিধানসভা নির্বাচন, সবকিছুর পরে এবারে একজন উচ্চপদস্থ আমলাকে নিয়ে কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে তুঙ্গে সংঘাত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে রিভিউ বৈঠক না করার পরেই সরাসরি চাপ এলো আমলা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। কিছুটা সেরকমই হলো আলাপনের সাথেও। নোটিশ জারি করে সরাসরি জানানো হলো, এবার আলাপন রাজ্যের নয় কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী হতে চলেছেন। ৩১ মে সকাল ১০তার মধ্যে দিল্লির নর্থ ব্লকে গিয়ে তাকে রিপোর্টিং করতে হবে। এই সিদ্ধান্তের পরেই রাজ্য রাজনীতি দোলাচলে।
তিনি কি গ্রহণ করবেন কেন্দ্র সরকারের প্রস্তাব? নাকি এখনো রাজ্যের জন্যই কাজ চালিয়ে যাবেন? এই প্রশ্নই এখন সবার মনে। নবান্ন সূত্রে জানানো হচ্ছে, এখনো আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়েনি নবান্ন। তাই তিনি এখনি দিল্লি যেতে পারছেন না, তিনি রাজ্য সরকারের কর্মী হিসেবে কাজ করবেন। তার পাশাপাশি এয়ার ইন্ডিয়া, এবং অন্যান্য দিল্লিগামী বিমানে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে কোন বুকিং নেই। সম্ভাবনা আছে তিনি এখনই রাজ্য ছাড়ছেন না। আজকে সকালেই নবান্নে ভিসি করার কথা আছে তার। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর ঘূর্ণিঝড় যশ নিয়ে ডাকা ক্ষয়ক্ষতির বৈঠকে আজ তিনি প্রতিনিধিত্ব করতে চলেছেন। সঙ্গে, দপ্তরের সব কর্মী এবং আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowসকাল দশটার মধ্যে দিল্লিতে রিপোর্টিং এর সময় ছিল। কিন্তু তার আগেই গতকাল সস্ত্রীক নবান্নে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন এই উচ্চপদস্থ আমলা। করোনাভাইরাস এবং যশের বিপর্যয়ের সময় শীর্ষ আমলাকে প্রয়োজন, এই কারণ দেখিয়ে রাজ্য সরকার এই বদলি আটকানোর চেষ্টা করবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তার পাশাপাশি, রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে বিস্তারিত বর্ণনা করে অনুরোধ করতে পারবে যদি এই বদলির নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয়। শুধু তাই নয় রাজ্য সরকারের কাছে আইনি রাস্তাও আছে।
তার সাথে যদি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল এবং হাইকোর্টে গিয়ে যদি নিজের কার্যকাল বৃদ্ধি করার প্রস্তাব না গ্রহণ করে যদি অবসর নেন, তাহলেও একটা রাস্তা আছে দিল্লিকে প্যাঁচে ফেলার। যাইহোক, এই আলাপন ইস্যুতে এখন রাজ্য এবং কেন্দ্রের সংঘাত চরমে। দিল্লিও বুঝেছে, রাজ্য বিজেপি নেতাদের মুখ ফস্কে অনেক সময় অনেক কথা বেরিয়ে পড়ে, যার ফলে আখেরে সমস্যায় পড়ে বিজেপি। সভাপতি দিলীপ ঘোষের রগড়ে দেবো মন্তব্য নিয়ে রাজ্য বিজেপির মধ্যে অনেক সমস্যা হয়েছে। অনেকেই দিলিপের এই সমস্ত মন্তব্যকে নির্বাচনে বিজেপির হারের কারণ হিসাবে ব্যাখ্যা করছেন। তাই শীর্ষ নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্যু নিয়ে রাজ্য বিজেপির কোন নেতার মুখে যেন কোনো কথা না শোনা যায়।