আকাশে ওড়ার পর ৩০ সেকেন্ডও টিকতে পারেনি বিমানটি। আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI-171 আচমকা ভেঙে পড়ে হাসপাতালের হোস্টেলের উপর। প্রাণ হারিয়েছেন ২৪১ জন যাত্রী ও কর্মী, মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৮ জন নিরীহ মানুষজনের, আহত ষাটেরও বেশি। গোটা দেশ স্তব্ধ। আর এই ভয়াবহ ঘটনার কারণ নিয়ে মুখ খুললেন এক প্রাক্তন অভিজ্ঞ পাইলট।
কী ঘটেছিল সেদিন?
ঘটনার শুরু আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি টেকঅফের ঠিক ৩০ সেকেন্ড পরেই প্রায় ৬০০ ফুট উচ্চতায় ভেঙে পড়ে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, টেকঅফের ৬০ সেকেন্ডের মধ্যেই ‘মেডে’ সংকেত পাঠানো হয়েছিল।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowপাইলটের বিশ্লেষণ বলছে কী?
এক প্রাক্তন বাণিজ্যিক পাইলট জানিয়েছেন, টেকঅফের পর নির্দিষ্ট সময়ে ল্যান্ডিং গিয়ার তোলা হয়নি। সাধারণত, ১০০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছানোর পরেই গিয়ার উঠিয়ে ফেলা হয় যাতে অতিরিক্ত ড্র্যাগ না হয়। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, প্রায় ৪০০-৬০০ ফুট অবধিও গিয়ারটি নিচে ছিল।
এছাড়া, উইং ফ্ল্যাপও যথেষ্ট আগেই রিট্র্যাক্ট করে নেওয়া হয়, যা বিমানের লিফট কমিয়ে দেয়। এর ফলে আরও চাপ পড়ে ইঞ্জিনের উপর, যা হয়তো ইঞ্জিন থ্রাস্ট কমে যাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ভুল কি কো-পাইলটের?
বিশেষজ্ঞদের মতে, কো-পাইলট ভুল করে ফ্ল্যাপ কন্ট্রোল সক্রিয় করে ফেলেন গিয়ারের পরিবর্তে। অথবা গিয়ার সিস্টেমেই থাকতে পারে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি। বিমানে থাকা দুটি ইঞ্জিনের কোনও একটিতে থ্রাস্ট লস হওয়া বা দু’টি ইঞ্জিনই বিকল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
তদন্তে কী জানা গিয়েছে এখন পর্যন্ত?
ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার উদ্ধার করা গেলেও এখনও পর্যন্ত ককপিট ভয়েস রেকর্ডার খুঁজে পাওয়া যায়নি। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চালাচ্ছে ভারতের AAIB, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত সহায়তায়। ইতিমধ্যেই DGCA দেশের সমস্ত বোয়িং ৭৮৭ বিমানে জরুরি পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে।
এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেতে এখনও অপেক্ষা করতে হবে তদন্তের ফলাফলের জন্য। তবে প্রাথমিক বিশ্লেষণেই উঠে এসেছে বহু গাফিলতির ইঙ্গিত। AI-171 দুর্ঘটনা হয়তো ভারতীয় বিমান ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ ট্র্যাজেডি হয়ে থাকবে।