ভারতে নাগরিকত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে বড়সড় পরিবর্তনের পথে কেন্দ্র। আর চলবে না শুধুমাত্র আধার কার্ড—চিহ্নিত করা হয়েছে একাধিক বিকল্প নথি। এই নীতিগত পরিবর্তনের ফলে নয়া চিন্তার মুখে পড়েছেন বহু সাধারণ মানুষ, বিশেষত যাঁদের কাছে আধার ছাড়া অন্য কোনও নাগরিকত্বের প্রমাণ নেই।
সরকারি নয়া নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, আধার কার্ড কেবলমাত্র পরিচয় ও ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য বৈধ। নাগরিকত্ব প্রমাণে এর আর কোনও গুরুত্ব থাকছে না। সুপ্রিম কোর্টের একাধিক পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আধার কার্ড কোনও নাগরিকের জন্মসূত্রে বা আইনগতভাবে ভারতীয় হওয়ার প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা যায় না।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowকী কী নথি লাগবে নাগরিকত্বের জন্য?
নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য আবশ্যিক হয়ে উঠছে একাধিক মূল নথি। যেমন:
জন্ম শংসাপত্র
ভোটার আইডি
পাসপোর্ট
বাবা-মায়ের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নথিপত্র
১৯৭১ সালের আগে বা সময়কালের জমির রেকর্ড ও শিক্ষাগত সনদ
স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া বাসস্থান সংক্রান্ত শংসাপত্র
এনআরসি বা এনপিআর সংক্রান্ত যেকোনও প্রমাণপত্র
এই পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে যাঁরা শুধুমাত্র আধার কার্ডেই সরকারি পরিষেবা পেয়ে আসছিলেন। গ্রামাঞ্চল, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল সম্প্রদায়, পরিযায়ী শ্রমিক ও যাঁদের পরিবারের নাগরিকত্ব ঘিরে বিতর্ক রয়েছে—এই পরিবর্তনে তাঁদের সমস্যার মুখে পড়ার আশঙ্কা বেশি।
প্রশাসনিক ব্যবস্থা কী?
জেলা প্রশাসকদের ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনওরকম নাগরিকত্ব সংক্রান্ত সরকারি কাজে আধার কার্ডকে একমাত্র প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে বিকল্প নথিপত্র যাচাই করতে বলা হয়েছে। নাগরিকদেরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনীয় নথি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংগ্রহ করে রাখতে ও সেগুলি ডিজিটালি সংরক্ষণ করতে।
নাগরিকদের করণীয় কী?
নাগরিকদের এখনই নিচের কাজগুলি সেরে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে:
জন্ম এবং পরিবার-সংক্রান্ত নথি সংগ্রহ
শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট এবং বাসস্থানের প্রমাণ
ই-ডকুমেন্টসের মাধ্যমে সব নথি ডিজিটালি সংরক্ষণ
প্রশ্নোত্তর: নাগরিকত্ব নিয়ে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন
১. আধার কার্ড কি এখন একেবারেই অপ্রয়োজনীয়?
না, আধার এখনও পরিচয় ও ঠিকানা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে, তবে নাগরিকত্ব প্রমাণে নয়।
২. কী ধরনের নথি নাগরিকত্ব প্রমাণে বৈধ?
জন্ম শংসাপত্র, পাসপোর্ট, ভোটার কার্ড, বাবা-মায়ের নাগরিকত্ব প্রমাণ, এনআরসি সংক্রান্ত কাগজপত্র ইত্যাদি।
৩. কারা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবেন?
যাঁদের কাছে শুধুমাত্র আধার কার্ড আছে, বিশেষত গ্রামীণ ও দরিদ্র সম্প্রদায়, পরিযায়ী শ্রমিকরা।
৪. কীভাবে এই নতুন নিয়ম কার্যকর করা হচ্ছে?
জেলা স্তরে প্রশাসনিক নির্দেশ জারি হয়েছে যাতে আধারকে নাগরিকত্বের একমাত্র প্রমাণ হিসেবে না নেওয়া হয়।
৫. কী করণীয় নাগরিকদের?
প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ ও সেগুলি ডিজিটালি সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।