পুজো আসতে আর কিছুদিন বাকি। আনাচে-কানাচে ভরে উঠেছে পুজোর আনন্দ। আকাশে পেঁজাতুলোর মেঘ, আর বনের মধ্যে সাদা কাশফুলের দোলা। আমাদের জানান দেয় যে মা আসছেন।
মা এই কথাটির অর্থ হল নারী। নারী মানে মা, কন্যা। নারী হাজারো রূপে আমাদের কাছে আসীন হন। যদি বলি গণিকারাও নারী। কিন্তু আমাদের সমাজে তারা সম্মান পান না । তারা শুধুমাত্র পুরুষের কামনা-বাসনা লালসার শিকার। কিন্তু খুব অদ্ভুত ভাবেই মা দুর্গার মতন এমন পবিত্র উৎসবে মা দুর্গার মূর্তি তৈরি করতে প্রথম লাগে বেশ্যাবাড়ির মাটি।
এতে কিন্তু কেউই অবাক হন না। তারা খুব সহজেই তাদের বাড়ির মাটি নিয়ে এসে মা দুর্গার এই মূর্তি গড়া এই নিয়মটিকে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু অদ্ভুতভাবে এই মানুষগুলোকে এখনো সমাজ ভালো চোখে দেখতে পারেনা।
কথায় আছে, পতিতালয়ের প্রবেশদ্বারে শুদ্ধতম মাটি আছে পড়ে। যে স্থান সাধারণ মানুষের কাছে ঘৃণ্যতম স্থান। যে স্থানে দিনের আলোপ্রবেশ করতেও কুণ্ঠাবোধ করে বলে আমরা মনে করি। অথচ বাঙালির প্রিয় উৎসব দুর্গাপূজা দুর্গা ঠাকুর করতে সেই বেশ্যাবাড়ির মাটি লাগে।নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে চলুন জেনে নিই এর ইতিহাস।
সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেন, প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কামনা-বাসনা লালসার বাস। আর এই পতিতারা প্রত্যেকটা কামনা-বাসনা এবং লালসা নিজেদের মধ্যে ধারণ করেছেন। তারা নিজেদেরকে অশুদ্ধ অপবিত্র করে সমাজকে শুদ্ধ রাখতে চান। পবিত্র রাখতে চান। ফলে হাজার হাজার পুরুষের পুন্যে বেশ্যাদারের মাটি হয়ে ওঠে পবিত্র। সে কারণেই এই মাটি দিয়ে গড়তে হয় দেবী মূর্তি।
এর থেকেই মনে করা হয়েছে নারীরা হল পবিত্র। পুরুষের ঔরসে এই নারীর জন্ম। নারীকে পতিতা বানায় পুরুষরাই। পুরুষরাই অপবিত্র। নারীরা কখনো অশুদ্ধ হতে পারেনা। তারা মায়ের প্রতিনিধি। তারা জননীর আরেক রূপ। দুর্গা পুজোর সময় মা মহামায়া নয়টি রূপে পূজিত হন ইনি হল পতিতালয়ের প্রতিনিধি হিসাবে।
Written By – শ্রেয়া চ্যাটার্জি