সাক্ষাৎকার

ক্ষমতায় আসবার জন্য বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে বিরোধিতার ভূমিকা দেখাচ্ছেন : বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য

Advertisement
Advertisement

আবারও একবার শিরোনামে ত্রিপুরা। দফায় দফায় সি পি আই এম ও বিজেপির সংঘর্ষে উতপ্ত হয়ে ওঠে পড়শি রাজ্য। সিটু অফিস , সি পি আই এমের দপ্তরে অগ্নি সংযোগের পাশাপাশি দুই বাম নেতার বাড়িতে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। যদিও শাসক বিজেপি হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে গেছে। এই হামলার প্রতিবাদে ত্রিপুরার পাশাপাশি কলকাতার মৌলালিতে পথে সি পি আই এম এল ও বাম সমর্থকেরা। ৭ ই আগস্ট ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতাকর্মী ও সংবাদ মাধ্যমের ওপর আক্রমণের খবরে উতপ্ত হয়ে ওঠে সেখানকার রাজ্য রাজনীতি। তার রেশ কাটতে না কাটতেই সি পি আই এমের উপর হামলার অভিযোগে আরো একবার অশান্ত রাজ্য রাজনীতি, আবারও শিরোনামে উঠে এলো ত্রিপুরা।

Advertisement
Advertisement

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য ভারত বার্তার প্রতিনিধি প্রীতম দাস যোগাযোগ করেছিলো মাননীয় বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সঙ্গে। তিনি তার ব্যক্তিগত মতামত আমাদের ভারত বার্তার প্রতিনিধিকে জানান।

Advertisement

১) ত্রিপুরাতে সি পি আই এমের দপ্তরে আগুন , ভাঙচুর। পুরো বিষয়টি নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দিতে চাইবেন ?

Advertisement
Advertisement

বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য : এটা তো পরিকল্পিত। আর এস এস গোটা দেশ জুড়ে অন্ধ কমিউনিস্ট বিরোধিতা ও ধর্মীয় বিদ্বেষ জারি রাখছেন হিটলার ও মুসোলিনির কায়দায়। যেখানে যেখানে কমিউনিস্ট পার্টির শক্তি আছে সেইসব জায়গায় প্রথমত আক্রমণ হচ্ছে , তথ্যগত দিক থেকে টাকা পয়সা দিয়ে মিথ্যা প্রচার করে একটা ধর্মান্ধতা তৈরী করা আর পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তার সঙ্গে ধর্মান্ধতার সংঘর্ষ হয় অতএব , বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তার যে মনস্কতা তৈরী করে কমিউনিস্ট পার্টি তাদের উপর আক্রমণ করা , এই দুই লক্ষ্য সামনে রেখে তারা এগোচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে তারা মমতাকে কাজে লাগিয়েছেন বামপন্থীদের দূর্বল করার জন্য ও তাতে কিছুটা সফল হয়েছেন। তীব্র আক্রমণ হয়েছে ২০১১’র পর থেকে। গ্রামে গ্রামে সি পি আই কর্মীদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে , সেটা হয়েছিলো মমতার নেতৃত্বে আর পেছন থেকে ছিল RSS এর মদত। ত্রিপুরাতে আরএসএস তারা সংঘর্ষে নেমে গেছে। তা নাহলে একইদিনে একইসঙ্গে সি পি আই এমের বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে আগুন লাগানো , এটা তো নিছক গুন্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়। হিটলারি কায়দায় এই আক্রমণ তারা করেছে। এই আক্রমণের মোকাবিলা করতেই হবে। আমরা আইন সংসদীয় পথে এবং প্রয়োজন হলে খানিকটা অসংসদীয় পথে আমাদের যেতেই হবে। এটা প্রতিরোধ হবে কারণ এই ধরণের গুন্ডামিকে মেনে নেয়া মানে সমাজে মানুষের স্বাধীন চিন্তা চেতনা সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে আমরা আছি। আমি ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতির কাছে সময় চেয়েছি। তার সঙ্গে কথা বলে আমরা বুঝতে চাই রাষ্ট্রপতি এই ঘটনাগুলোর সাথে কীভাবে মোকাবিলা করতে চায়। তার ভিত্তিতে ও সেই পরিপ্রেক্ষিতে দাড়িয়ে ভবিষ্যতে আমরা আন্দোলনের ঠিক – ঠিকানা , ঠিক করবো।

২) পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি বিরোধী গোষ্ঠী ও এখানে ভোট পরবর্তী হিংসার কথা বলছে কিন্তু ত্রিপুরাতে শাসক বিজেপির হাতে সি পি এম অথবা কিছুদিন আগে তৃণমূলের আক্রান্তের খবর আসছিল। তাহলে কি ক্ষমতার অবস্থান অনুযায়ী রাজনৈতিক অবস্থানও ভিন্নধর্মী ?

বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য : বিজেপির পরিকল্পনা সর্বত্রই এক। এক্ষেত্রে তারা একটা দ্বন্দ্ব তৈরী করতে চাইছে তৃণমূলের সঙ্গে , এই ভাবটা দেখানোর জন্য যে তারাই একমাত্র বিরোধী শক্তি। যাতে সরকার বিরোধী মানসিকতা প্রতিফলনে বামপন্থীরা নিজেদের সংঘবদ্ধ করতে না পারেন। এটি হচ্ছে ওদের কল্পনা। ভোট পরবর্তী হিংসা বামপন্থীরা প্রথম মামলা করেছিলেন , বিজেপিও মামলা করেছিলো। এখন সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে , অধিকাংশ ক্ষেত্রে যারা পুরোনো কালের বামপন্থী ছিলেন তারা বিক্ষিপ্ত ভাবে কখনো বিজেপিতে গেছেন , কখনো তৃণমূলে গেছেন। পরস্পরের সংঘর্ষে তাদের উপরেই আক্রমণটা নেমে আসছে। ক্ষমতায় আসবার জন্য তারা পশ্চিমবঙ্গে বিরোধিতার ভূমিকা দেখাচ্ছেন। ক্ষমতায় থাকবার জন্য তারা ত্রিপুরাতে ব্যাপক হিংসাত্মক হয়ে যাচ্ছেন।

[সাক্ষাৎকার গ্রহন : প্রীতম দাস]

Advertisement

Related Articles

Back to top button