নিউজরাজ্য

প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুনের প্রচেষ্টা, ‘পথের কাঁটা’ সরাতে গিয়ে পুলিশের জালে স্ত্রী সহ ৪

ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়া রঘুনাথপুরে

Advertisement
Advertisement

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের বাধা দিয়েছিলেন স্বামী, তাই পথের কাঁটা স্বামীকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন স্ত্রী। সঙ্গী তার প্রেমিক। সেই পরিকল্পনা মাফিক কাজটা হয়েও গিয়েছিল। কিন্তু, প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাধা বোধহয় আর হল না। নিজের স্বামীকে খুন করার অভিযোগ উঠল স্ত্রী এবং তার প্রেমিকের উপর। পুরুলিয়ার নিতুরিয়া থানার মুরগাবোনি এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ময়লা খাদান থেকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে ওই যুবকের নাম কামাল আনসারী। পুলিশ এ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। মৃতের স্ত্রী এবং তার প্রেমিক সহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। শুক্রবার তাদেরকে রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হয়। সেখানে বিচারক ওই মহিলা বাদে বাকিদের সাত দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement
Advertisement

পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, “বর্তমানে এই ঘটনার তদন্ত চলছে। চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” উঠেছে গত সোমবার রাতে। পুরুলিয়ার নিতুরিয়া থানার শর্বরী মধুকুণ্ডা রাস্তার ডানপাশে জল জমে থাকা একটি ময়লা খাদান থেকে উদ্ধার হয় রঘুনাথপুরের বছর ৩২ এর যুবক দিনমোজুর কামাল আনসারীর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ। দেহে একাধিক ক্ষতের চিহ্ন মিলেছে তার দেহ থেকে। ঐদিন রাতে তার শ্যালক আব্দুল সামাদ আনসারী কিছু অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের এবং খুন করার অভিযোগ আনেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের তরফ থেকে তদন্ত শুরু করা হয়।

Advertisement

এই ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমে ওই যুবকের মোবাইল ফোন চেক করে পুলিশ। সেই মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে খুঁজে পাওয়া যায় আরো এক যুবককে যার নাম হাসিমুদ্দিন। জানা গিয়েছে ওই বিবাহিত যুবক হাসিমউদ্দিন এর সঙ্গে বছর দেড়েক আগে ফেসবুকে আলাপ হয়েছিল দুই সন্তানের মা বছর ২৬ এর স্ত্রী সালমার। ধীরে ধীরে উভয়ের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে, তারা দুজনে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হন। আর এই সম্পর্কেই মূল কাঁটা হয়ে উঠেছিলেন তার স্বামি। তাই তাকে সরানোর জন্যই এই সমস্ত প্ল্যানিং।

Advertisement
Advertisement

স্বামীকে সরানোর জন্য স্ত্রী সালমা তার প্রেমিক শেখ হাসিমউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে স্বামী কামালকে খুন করার ছক করতে থাকে। প্রথমে কামালের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি করতে শুরু করে হাসিম উদ্দিন। এই বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার জন্য তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে পার্টি দেওয়াতো সে। এর আগেও তাকে দুবার খুন করার ছক কষেছিল সে। কিন্তু দুবারই ব্যর্থ। অবশেষে তৃতীয়বার খুন করার ছক কষে ১ মাস আগে স্ত্রী সালমা এবং তার প্রেমিক হাসিম উদ্দিন।

পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার কামালকে বাইকে করে নিয়ে যায় হাসিম উদ্দিন এবং তার দুইজন বন্ধু। তাকে সরাসরি নিয়ে আসে আসানসোলের নিয়ামতপুরে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া করার পরে নিতুড়িয়ার সর্বরীতে ফিরে আসে সে। সেখানকার একটি দোকান থেকে মদ এবং ছুরি কেনে হাসিম উদ্দিন। মদের আসর বসানোর পরেই সুযোগ বুঝে ৩ বন্ধু একসাথে মিলে কামালকে কুপিয়ে খুন করে তারা এলাকা ছেড়ে পালিযে যায়। খাদানে দেহ ফেললে খুঁজে পাওয়া যাবে না এটাই ভেবেছিলো তারা। কিন্তু তাদের এই মাস্টার প্ল্যানে বাধ সাধে বৃষ্টি। খাদন জলে ভরা থাকায় মৃতদেহ ভেসে ওঠে। তারপরে লোক জানাজানি হয়ে যায় এবং পুলিশ তদন্ত শুরু করে সালমা, হাসিম উদ্দিন এবং তার দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করে।

Advertisement

Related Articles

Back to top button