অরূপ মাহাত: মানুষের দেহ ও হস্তীর মস্তক সমন্বিত গণেশ দেবতার মূর্তি বহু কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। শুধু তাই নয়, গণপতি বাপ্পার একাধিক মূর্তি পূজিত হয় স্থান ও সময় ভেদে। তারই কিছু তুলে ধরছি আজ। তবে অন্যান্য দেবদেবীদের তুলনায় গণেশের মূর্তির মধ্যে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তনশীল বৈচিত্র্য ও স্বতন্ত্র নিদর্শন বেশি দেখা যায়। দণ্ডায়মান, নৃত্যরত, দৈত্যনাশে উদ্যত, শিশুরূপে পরিবারের সঙ্গে ক্রীড়ারত, মাটিতে বা সিংহাসনে উপবিষ্ট অবস্থায় অথবা বিভিন্ন ধরনের আধুনিক অবস্থানে তাঁকে চিত্রিত করা হয়।
খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতাব্দী থেকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে গণেশের মূর্তি নির্মাণ প্রাধান্য লাভ করেছিল। গাণপত্য সম্প্রদায়ে একজন স্বাধীন দেবতা রূপে সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর খ্রিস্টীয় ৯০০ থেকে ১২০০ অব্দের মধ্যবর্তী সময়ে যে সব গণেশ মূর্তি নির্মিত হয়েছিল, তাতে গণেশের মাথাটি হাতির এবং তাঁর উদরটি স্ফীত। এই মূর্তিতে গণেশের চারটি হাত দেখা যায়। গণেশের চতুর্ভূজ মূর্তিই সর্বাধিক পরিচিত। নিচের ডান হাতে তিনি নিজের একটি ভাঙা দাঁত (তাঁর হস্তীমুণ্ডের বাইরের দাঁত) ধরে থাকেন। নিচের বাঁ হাতে থাকে একটি মিষ্টান্ন। এটি তিনি নিজের শুঁড় দিয়ে স্পর্শ করে থাকেন। গণেশের প্রাচীন মূর্তিগুলির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, শুঁড়টি বাঁ দিকে বাঁকানো থাকে, যাতে গণেশ তাঁর নিচের বাঁ হাতের মিষ্টান্নটি আস্বাদন করছেন, সেটি বোঝা যায়। ইলোরা গুহাসমূহে খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীর এই ধরনের একটি প্রাচীনতর মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। সাধারণত মূর্তিগুলিতে দেখা যায়, গণেশ উপরের একটি হাতে একটি কুঠার বা অঙ্কুশ ধরে আছেন এবং অপর হাতে ধরে আছেন একটি ফাঁস। অল্প কয়েকটি মূর্তিতে দেখা যায়, তাঁর হাতে রয়েছে একটি নরমুণ্ড।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowএই প্রাচীন মূর্তিতত্ত্বগত উপাদানগুলির প্রভাব গণেশের আধুনিক মূর্তিগুলির মধ্যেও দেখা যায়। অবশ্য গণেশের নৃত্যরত মূর্তিটিও বেশ জনপ্রিয়।