গতকাল থেকে উত্তরকন্যা অভিযানে গেরুয়া শিবির ও রাজ্য পুলিশের খন্ডযুদ্ধ নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে প্রবল চাপানউতোর চলছে। মৃত্যু হয়েছে উলেন রায় নামক এক বিজেপি কর্মীর। এরই মধ্যে বিজেপি রাজ্য সভাপতি ও অন্যান্য বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন রাজ্য পুলিশের নির্মম অত্যাচারে মারা গিয়েছেন বিজেপি ওই কর্মী। এছাড়াও পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত একাধিক বিজেপি কর্মী। গতকাল বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছিল, উলেন রায়কে গুলি করেছে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আজকে উলেন রায় নামক ব্যাক্তির ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে ওই ব্যক্তি শটগানের গুলি বা ছবরার আঘাতে মারা গিয়েছে। এই রিপোর্ট প্রকাশ করার পর পুলিশ জানিয়ে দেয়, “রাজ্য পুলিশ কোন ধরনের শটগান ব্যবহার করে না। তাহলে প্রশ্নটা এল বিক্ষোভের মাঝে শটগান এলো কোথা থেকে?” পুলিশের প্রাথমিক দাবি, মিছিল থেকেই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। এরপর ঘটনার বিস্তারিত জানতে এই কেসের তদন্তভার সিআইডির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য পুলিশ ট্যুইট করে জানিয়েছেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী শটগানের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। আর পুলিশ শটগান ব্যবহার করে না। তাই এটা স্পষ্ট গতকাল শিলিগুড়িতে বিক্ষোভের সময় সশস্ত্র লোকজনদের নিয়ে আসা হয়েছিল এবং তাদের আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চলেছিল। খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়ে মারা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে।”
পুলিশের এই ট্যুইটের পর ব্যাপারটি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন বিজেপি সহ-সভাপতি মুকুল রায়। পুলিশের গুলির মৃত্যুতে তদন্ত সিআইডি করবে এই ব্যাপারটাকে সর্বশ্রেষ্ঠ রসিকতা বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, “এর আগে তো ২০১১ সালে প্রতিটি কথায় কথায় দিদি সিবিআই তদন্ত চাইতেন।” তিনি তৃণমূল সরকারকে সরাসরি কটাক্ষ করে বলেছেন, “উত্তরবঙ্গে একজন মানুষকে গুলি করে মেরেছে। হয়তো সেই কাজটা পুলিশ করেছে। এদিকে তার তদন্ত করবে নাকি সিআইডি। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে। কোশ্চেনটা করছে তার মামা এবং খাতা দেখবে তার কাকা। সিআইডিকে তদন্তভার দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সর্বশ্রেষ্ঠ রসিকতা করল তৃণমূল সরকার।”
মুকুল রায় এদিন আরো বলেন, “এর আগে তো ২০১১ সালে দিদি কথায় কথায় সিবিআই তদন্ত দাবি করতেন। তাহলে এখন কি হল? আর উত্তরকন্যা’-র বিজেপির মিছিলে কারোর কাছে আগ্নেয় অস্ত্র ছিল না। আর পুলিশ যদি কাউকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দেখতে পেত তাহলে তাকে কি গ্রেফতার করতে না?” এছাড়াও তৃণমূলকে বিদ্রূপ করে তিনি বলেন, “আমি যখন থেকে দল ছেড়েছি তখন থেকেই তৃণমূলের শেষের শুরু। দলে আর কিছু নেই। এবার শুভেন্দু বাবুর পদক্ষেপ বুঝিয়ে দেবে দলটা পুরো ফাঁপা।”