বর্ণবৈষম্যের শিকার আমেরিকায়, কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে হাঁটু চেপে মারল পুলিশ অফিসার
শ্রেয়া চ্যাটার্জি- ১০ মিনিটের একটা ভিডিও ফুটেজ গোটা বিশ্বের সামনে এক মর্মান্তিক ঘটনাকে তুলে ধরেছে। জর্জ ফ্লয়েড নামে এক ব্যক্তি নিশ্বাস না দিতে পেরে কাতরাচ্ছেন, এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসারের কাছে ছেড়ে দেওয়ার আর্তি জানাচ্ছেন। এই কৃষ্ণাঙ্গ খুনের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের ঝড় উঠেছে। গোটা বিশ্ব জুড়ে যখন লকডাউন চলছে তখন লকডাউন এর তোয়াক্কা না করেই ১০ হাজারের বেশি মার্কিনে বসবাসকারী মানুষজন প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। এ বিষয়ে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জানিয়েছেন, “২০২০ সালে দাঁড়িয়ে এমন ঘটনাকে স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া একেবারেই উচিত হবে না।” মিনিয়াপোলিস এ একটি রেস্তোরায় নিরাপত্তা কর্মী হিসাবে কাজ করতেন ৪৬ বছর বয়সের জর্জ ফ্লয়েড।
এক শ্বেতাঙ্গ পুরুষের হাঁটুর চাপে ওই কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির গলা চেপে ধরা হয়েছে। তবে কৃষ্ণাঙ্গদের উপর অত্যাচার এই প্রথম নয়, এর আগেও ২০১৪ সালে মাইকেল ব্রাউন নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে গুলি করে মারা হয়। ওই বছরই নিউইয়র্কে পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হয় এরিক গার্নার নামে আরো এক কৃষ্ণাঙ্গের। বারবারই বর্ণবৈষম্যের শিকার হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গরা। সভ্যতা এগিয়েছে কিন্তু বিশ্বের সুসভ্য, শক্তিধর, উন্নত দেশ গুলিকে সত্যি সত্যিই সুসভ্য হতে পেরেছে? অন্তত এই দৃশ্য তা প্রমাণ করে না। জর্জ ফ্লয়েড এর মৃত্যুর প্রতিবাদের আগুন দাবানলের আকারে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
মিনিয়াপোলিস ছাড়াও ১৬ টি স্টেট এ ছড়িয়ে পড়েছে। সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকে, টিয়ার গ্যাস ছড়াতে হয়েছে পুলিশকে। গত দুই রাত ধরে বিক্ষোভ চলছে ওয়াশিংটন হাউজের বাইরে। সেখানে রাখা হয়েছে ন্যাশনাল গার্ড। কারফিউ জারি করা হয়েছে লস এঞ্জেলেস, নিউইয়র্ক এর বড় বড় শহরগুলিতে। সেখানকার বাসিন্দারাতো বটেই, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে গোটা বিশ্ব রাগে ফুঁসছে। বারবার শক্তিধর দেশ প্রমাণ করেছে, তারা শক্তিবলে সমস্ত দেশের নাগরিককে ছোট করে। মেরে ফেলতেও তাদের এতটুকু হাত পা কাঁপে না। তবে কি সত্যিই তাদেরকে সুসভ্য, শক্তিধর দেশ বলা চলে! এ প্রশ্ন, এখন গোটা বিশ্বের মানুষের মনে তোলপাড় করছে।