চাকরিরত সরকারি কর্মচারীদের বেতন সংশোধনের দাবিতে রাজ্যে ফের সরব হল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। কেন্দ্র যেখানে অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের কথা ঘোষণা করেছে, সেখানেই পশ্চিমবঙ্গের কর্মচারীরা এখন সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকরের দাবি জানাচ্ছেন।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার যখন পঞ্চম ও ষষ্ঠ বেতন কমিশনের বকেয়া মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখনই নতুন করে সপ্তম বেতন কমিশন চালুর দাবিতে আন্দোলনে নামলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর করতে হবে—এই দাবিতে মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন কর্মীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Now২০১৯ সালে ঘোষিত ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হয় ২০২০ সাল থেকে। তবে এখনো পর্যন্ত সেই কমিশনের সব সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি। ২৫ শতাংশ বকেয়া মেটানো বাকি আছে, যা নিয়ে রাজ্য এবং কর্মচারীদের মধ্যে টানাপোড়েন চলছেই। তার মধ্যেই এবার সপ্তম বেতন কমিশন গঠনের দাবিতে শোরগোল পড়ে গেল প্রশাসনিক মহলে।
কী বলছে কর্মচারীদের সংগঠন?
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে দাবি করা হয়েছে, যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সপ্তম বেতন কমিশন গঠন না করা হয়, তবে লক্ষাধিক কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। কমিশনের রিপোর্ট জমা দেওয়ার শেষ সময় হিসেবে ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর। সময়মতো সুপারিশ কার্যকর না হলে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে মূল বেতনের কমপক্ষে ৫০% হারে Interim Relief (IR) বা অন্তর্বর্তী আর্থিক সহায়তা দিতে হবে—এমন দাবিও জানানো হয়েছে।
রাজ্যের প্রতিক্রিয়া কী?
এই মুহূর্তে রাজ্য সরকার ষষ্ঠ বেতন কমিশনের বকেয়া মেটানোর বিষয়েই চাপে রয়েছে। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে বেশ কিছু সময় চেয়ে আবেদন করেছে সরকার। এখন সপ্তম কমিশন গঠনের দাবি সামনে আসায় অর্থ দফতরের ওপর চাপ আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক মহলের অনেকে।
পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর:
সপ্তম বেতন কমিশন কবে কার্যকর করার দাবি উঠেছে?
২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার দাবি জানানো হয়েছে।
কাদের তরফে এই দাবি তোলা হয়েছে?
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ নামে একটি রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন এই দাবি জানিয়েছে।
আগের বেতন কমিশনের বকেয়া কী মেটানো হয়েছে?
না, পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে এখনও ২৫% বকেয়া মেটানো হয়নি।
কমিশনের রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময়সীমা কত?
২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কমিশনের অন্তর্বর্তী বা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলে দাবি উঠেছে।
রিপোর্ট দেরিতে এলে কী দাবি করেছেন কর্মীরা?
রিপোর্ট প্রকাশে বিলম্ব হলে ৫০% হারে অন্তর্বর্তী আর্থিক সহায়তা (Interim Relief) চালু করার দাবি জানানো হয়েছে।
যেখানে কেন্দ্র অষ্টম বেতন কমিশনের রূপরেখা তৈরি করছে, সেখানে রাজ্যে এখনও ষষ্ঠ কমিশনের সুপারিশ পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে সপ্তম কমিশনের দাবি নিয়ে যে প্রশাসনিক চাপ বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য। সামনে বিধানসভা নির্বাচনও রয়েছে। ফলে এই দাবি আগামী দিনে রাজনৈতিক মঞ্চেও জোরদার হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।