রাজ্যের বকেয়া ডিএ মামলায় ফের বিতর্ক। সুপ্রিম কোর্টের সাফ নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়সীমার আগে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আরও ছ’মাস সময় চাওয়ায় এবার মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবকে আদালত অবমাননার নোটিশ ধরাল কর্মী সংগঠন।
গত ১৬ মে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিলেন, পঞ্চম বেতন কমিশনের আওতায় পড়া রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার অন্তত ২৫ শতাংশ ছয় সপ্তাহের মধ্যে মিটিয়ে দিতে হবে। কিন্তু সময়সীমা পেরোনোর মুখে এসে, অর্থাৎ ২৭ জুন রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়, আরও ছয় মাস সময় দেওয়া হোক এই নির্দেশ কার্যকর করতে।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowএই পদক্ষেপে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ। তাদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের তরফে নবান্নে পাঠানো হয়েছে আদালত অবমাননার নোটিশ। সেখানে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশকে ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করার সাহস কীভাবে দেখাল রাজ্য প্রশাসন?
এর আগে, একই মামলায় আদালতের নির্দেশ না মানায় কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবকে নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। এবার আবারও একই পথে হেঁটে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “DA দিতেই হবে। পালিয়ে যাওয়ার পথ নেই।”
অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের দাবি, কোনও অবমাননা করা হয়নি। বরং সুপ্রিম কোর্টের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই তাঁরা আইনি পথে সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। কাজেই আইন ভঙ্গের প্রশ্নই ওঠে না বলে জানিয়েছে নবান্ন। কিন্তু সরকারি কর্মী সংগঠন এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয়। তাঁদের অভিযোগ, বারবার সময় চেয়ে কেবলমাত্র সিদ্ধান্ত কার্যকর করার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের রাস্তায় নামার ঘোষণা করেছে।
জানা গিয়েছে, ২১ জুলাই শহিদ মিনারে বকেয়া ডিএ ইস্যুতে কর্মসূচি পালন করবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এই তারিখটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ একই দিনে তৃণমূল কংগ্রেস শহিদ দিবস পালন করে। বিধানসভা ভোটের আগে এটাই শেষ ২১ জুলাই সভা। ফলে সরকারি কর্মীদের কর্মসূচি এবং শাসকদলের রাজনৈতিক সভার সংঘাত ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা।
প্রশ্নোত্তর (FAQs):
১. সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে কী নির্দেশ দিয়েছিল?
সুপ্রিম কোর্ট ১৬ মে রায়ে জানায়, ছয় সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া ডিএর অন্তত ২৫ শতাংশ মেটাতে হবে।
২. রাজ্য সরকার কেন আদালতের কাছে নতুন করে সময় চাইল?
সরকারের দাবি, কার্যকর করতে সময় লাগছে, তাই আরও ছয় মাস সময় প্রার্থনা করা হয়েছে।
৩. কর্মী সংগঠন কেন ক্ষুব্ধ?
তাদের মতে, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নির্দেশ মানছে না এবং কর্মীদের ন্যায্য প্রাপ্য আটকে রাখছে।
৪. আদালত অবমাননার নোটিশে কী বলা হয়েছে?
নোটিশে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দেশ কার্যকর না করে সরকার কেন সময় বাড়ানোর আবেদন করল?
৫. সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের কর্মসূচি কবে এবং কোথায়?
২১ জুলাই শহিদ মিনারে কর্মসূচির ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।