রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance) সংক্রান্ত মামলায় ফের নতুন মোড়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটানো সম্ভব নয়—এই যুক্তি দেখিয়ে আরও ছয় মাস সময় চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আর তাতেই চরম অসন্তোষে ফেটে পড়েছেন আন্দোলনরত কর্মীরা।
গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল, চার সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী সময়সীমা শেষ হয়েছে ২৭ জুন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফে কোনও অর্থমেটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowবাজেটে বরাদ্দ নেই, তাই বিলম্ব: নবান্ন
নবান্নের তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে বকেয়া ডিএ মেটানোর জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ ছিল না। তাই অর্থের অভাবে আগামী ছ’মাসের সময় চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ কর্মী সংগঠনগুলি।
মুখ্যসচিবকে ‘আদালত অবমাননার নোটিস’ দেওয়ার দাবি
রাজ্যের এই পদক্ষেপের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে রাজ্যের তিনটি প্রধান কর্মী সংগঠন—সরকারি কর্মচারী পরিষদ, কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ এবং ইউনিটি ফোরাম। সংগঠনগুলির তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে আদালত অবমাননার নোটিস দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস দাস বলেন, “আদালতের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও রাজ্য কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। বরং আজ ফের সময় চাইতে আদালতে আবেদন করেছে। এটা আদালত অবমাননার সমান। আমরা আজকেই নোটিস পাঠাব।”
আন্দোলনের পথে কর্মচারীরা, ঘোষণা হতে পারে ‘নবান্ন অভিযান’
শনিবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করতে চলেছে সরকারি কর্মচারী পরিষদ। জল্পনা, এবার সরাসরি নবান্ন অভিযান ডাকার সম্ভাবনা প্রবল। সরকারি কর্মীদের ক্ষোভের আঁচ এখন নবান্নের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে চলেছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
কনফেডারেশনের সভাপতি শ্যামল মিত্র বলেন, “রাজ্যের কোষাগারে বরাদ্দের অভাব নেই। আসলে রাজ্য চাইছে বিচারপতি কারোল ও বিচারপতি মিশ্রের বেঞ্চকে এড়িয়ে যেতে। এ ধরনের পন্থা গ্রহণে রাজ্যের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।”
FAQ (প্রায়শই জিজ্ঞাস্য):
১. কত দিনের মধ্যে বকেয়া ডিএ পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট?
১৬ মে নির্দেশ দিয়ে ৪ সপ্তাহের মধ্যে ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটাতে বলেছিল আদালত।
২. রাজ্য সরকার কী যুক্তি দেখিয়ে সময় চাইছে?
রাজ্য জানিয়েছে, বাজেটে ডিএ-র বরাদ্দ ছিল না, তাই আরও ৬ মাস সময় প্রয়োজন।
৩. কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি?
মুখ্যসচিবকে আদালত অবমাননার নোটিস দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে, আন্দোলনের ডাকও আসতে পারে।
৪. আন্দোলনের কোন কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে?
সম্ভাবনা, প্রেস ক্লাব থেকে নবান্ন অভিযানের ঘোষণা হতে পারে শনিবার।
৫. রাজ্যের কোষাগারে ডিএ দেওয়ার মতো অর্থ রয়েছে কি?
কর্মী সংগঠনের দাবি, বরাদ্দ রয়েছে; রাজ্য ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের নির্দেশ এড়িয়ে চলেছে।