এলপিজি গ্যাসের ক্রমবর্ধমান দাম সাধারণ মানুষের জন্য বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি ও তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্যও বেড়ে চলেছে, যা পরিবারের বাজেটের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। যদিও সরকার এলপিজি ভর্তুকি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, তবুও এই খরচ অনেক পরিবারের জন্য চাপের কারণ হতে পারে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এলপিজি গ্যাসের দাম রাজ্য ও শহরভেদে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণ মানুষের আর্থিক স্বস্তি নিশ্চিত করতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ বিবেচনা করছে।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowসরকার এলপিজি ভর্তুকি প্রকল্পের মাধ্যমে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলিকে ত্রাণ প্রদানের চেষ্টা করছে। এই প্রকল্পের আওতায়, গ্রাহকরা গ্যাস সিলিন্ডার কেনার সময় ভর্তুকি পান, যা তাদের ব্যয় কমাতে সহায়ক হয়। এই উদ্যোগটি “প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা” নামে পরিচিত, যা দরিদ্র ও গ্রামীণ পরিবারগুলিকে এলপিজি গ্যাস সংযোগ প্রদান করে।
এই প্রকল্পের আওতায়, মহিলাদের বিনামূল্যে এলপিজি সংযোগ দেওয়া হয় এবং ভর্তুকির মাধ্যমে সিলিন্ডারের দামে ছাড় দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে পরিবারগুলোকে নিরাপদ ও পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়, যা তাদের স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এই উদ্যোগ কেবল রান্নাঘরে ধোঁয়া কমায় না, বরং নারীদের জন্য কাঠ বা কয়লার পরিবর্তে নিরাপদ ও সহজ জ্বালানির সুযোগও নিশ্চিত করে।
প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হলেন গ্রামীণ এলাকার মহিলারা, যারা বিনামূল্যে এলপিজি সংযোগ পেয়ে নিরাপদ ও পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহার করতে সক্ষম হচ্ছেন। এর ফলে তারা ধোঁয়া ও কাঠ বা কয়লা থেকে সৃষ্ট দূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাচ্ছেন।
এলপিজি গ্যাস ব্যবহারে হাঁপানি, ফুসফুসের রোগ এবং চোখের জ্বালার মতো স্বাস্থ্য সমস্যা কমে। এছাড়া, এটি রান্নার সময় কমায় এবং নিরাপদ হওয়ায় পরিবারগুলোর জন্য আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে।
এই প্রকল্পটি নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাও বাড়িয়ে তুলেছে, কারণ তাদের আর জ্বালানির জন্য বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করতে হয় না বা অন্যান্য কষ্টকর পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় না। তাছাড়া, এটি গ্রামীণ নারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে এবং তারা পরিবারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজে আরও মনোযোগ দিতে পারেন।
বর্তমানে সরকার এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দিচ্ছে, যা সরাসরি গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এই ভর্তুকির মূল উদ্দেশ্য হল ক্রমবর্ধমান গ্যাসের দাম নিয়ন্ত্রণ করা এবং নিম্ন ও মধ্যম আয়ের পরিবারগুলিকে আর্থিক স্বস্তি প্রদান করা।
এই প্রকল্পের অধীনে, গ্রাহকরা বছরে সর্বাধিক ১২টি সিলিন্ডারে ভর্তুকি পেতে পারেন, যা তাদের বার্ষিক গ্যাসের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।
ভর্তুকির টাকা সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের ফলে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয় এবং গ্রাহকরা কোনও মধ্যস্থতাকারীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই উপকৃত হন।