রাখি হলো একধরনের উৎসব। রাখি নিয়ে বাঙালিদের একটা বরাবরেই আবেগ রয়েছে। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মধ্যেই এই উৎসব সীমাবদ্ধ থাকেনা। গোটা ভারতজুড়ে এই উৎসব পালিত হয়। এছাড়াও বাংলাদেশেও এই উৎসব পালিত হয়। শুধুমাত্র ভাই-বোনের মধ্যেই এই উৎসব সীমাবদ্ধ থাকেনা। বন্ধু-বান্ধুব, আত্মীয়-স্বজন এমনকি ভিন ধর্মের মানুষদের মধ্যেই এই উৎসব পালন হয়।
আর এই রাখি-বন্ধন উৎসব নিয়ে বড়সড় ভূমিকা পালন করেছে সকলের প্রিয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। জানুন সেই অজানা কাহিনী। ১৯০৫ সালের ২০ জুলাই বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়। আর ঐ বছরেই ১৬ অক্টোবর থেকে তা কার্যকর করার কথা বলা হয়। শ্রেণি বর্ণ নির্বিশেষে বাংলার সকল মানুষই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হন। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে সামিল হন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও। তিনি বলেন, আইনের সাহায্যে বাংলা ভাগ হতে চলেছে ১৬ ই অক্টোবর, কিন্তু ঈশ্বর বাংলার মানুষকে বিভক্ত করেননি। সেই কথা মাথায় রেখে এবং তা প্রকাশ্যে তুলে ধরতে ঐ দিনটি বাঙালির ঐক্যের দিন হিসেবে উদযাপিত করা হবে। তারই এক নিদর্শন তুলে ধরতে তারা একে অপরের হাতে বেঁধে দেবেন হলুদ সুতো। মুখে বলবেন- ভাইদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না। আর এই দিনটিকে রাখি বন্ধনের দিন হিসেবে পালন করার ডাক দেন বিশ্বকবি।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowসেই মতো রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে ঐ দিন এক বিশাল মিছিল গঙ্গার উদ্দেশে রওনা হয়। মিছিলে অংশ নেন সমাজের বিশিষ্ট ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। ঐদিন সমস্ত দোকানপাট বন্ধ থাকে। রাস্তায় কোনও যানবাহনও ছিল না। বাংলার স্বাভাবিক জীবন ছিল সেদিন অচল । গঙ্গায় ডুব দেওয়ার পর তারা একে অপরের হাতে রঙিন সুতো বেঁধে দেন। বাংলা তথা বাঙালির ঐক্য, বাঙালির সংস্কৃতি, তাদের আশা আঙ্কাক্ষা তুলে ধরে গান লিখলেন রবীন্দ্রনাথ। সেদিন সারাদিনই কলকাতা তথা সমগ্র বাংলা জুড়ে ঐ গানটি ধ্বনিত হতে থাকে- “বাংলার মাটি বাংলার জল বাংলার বায়ু বাংলার ফল – পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান।”