এমন অনেক নারী আছে যাদের পিরিয়ডের সময় অথবা শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের সময় তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণা হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা এই বিষয়গুলোকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এর ফলে অজান্তেই তারা ডেকে আনছে বড় বিপদ। ঘন ঘন এই রূপ যন্ত্রণার আড়ালে জন্ম নিচ্ছে এক মহামারি অসুখ যা ‘এন্ডোমেট্রিওসিস’ নামে পরিচিত। একটি গবেষণায় দেখা যায় বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ১৭ কোটি ৬০ লাখ নারী এই সমস্যায় ভুগছে। তাই সময় থাকতেই এই অসুখটির প্রতি সতর্ক হন। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই রোগের কিছু লক্ষণ।
বয়ঃসন্ধির সময় থেকে সন্তান ধারণের সময় পর্যন্ত মেয়েদের জরায়ুতে নানা পরিবর্তন ঘঘটতে থাকে। এন্ডোমেট্রিয়াম হল ইউটেরাস বা জরায়ুতে থাকা একটি প্রয়োজনীয় আবরণ। প্রতিবার ঋতুস্রাবের পরেই আবরণটি পরিপূর্ণতা পায়। এরপর কোন মেয়ে গর্ভবতী না হলে ২৮ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে আবরনটি জরায়ু থেকে খসে পড়ে যায়, ফলে আবার পুনরায় ঋতুস্রাব শুরু হয়। পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব এর আগে কমবেশি পেটে ব্যথা সকলেরই হয়। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় এই ব্যথার পরিমাণ তীব্র হয়। অনেক এই ব্যথা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, আবার অনেকে এই ব্যথা কমাতে পেইনকিলার সেবন করে। এর ফলে ধীরে ধীরে জন্ম নেয় ‘এন্ডোমেট্রিওসিস’। এক্ষেত্রে সচেতন মূলক পদক্ষেপ হিসেবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। পলিসিস্টিক ওভারি হলে এক্ষেত্রে ওভারিতে সিস্ট থাকে, তবে সেই সিস্ট গুলো খুব বেশি সমস্যা সৃষ্টি করে না। কিন্তু এই সিস্ট গুলো যদি রক্তে পরিপূর্ণ হয় তবে সেক্ষেত্রে এন্ডোমেট্রিওসিস-এর লক্ষণ।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowএন্ডোমেট্রিওসিসে আক্রান্ত রোগীর জরায়ুর ভিতরে ছাড়াও বাইরের দিকে ডিম্বাশয়ে, ডিম্ববাহী নালী বা গর্ভনালীতে এমনকি কখনও কখনও রেক্টাম বা মলাশয়ের গায়ে এন্ডোমেট্রিয়াম আবরণ তৈরি হয়। ঋতুস্রাবের সময়এই সব অস্বাভাবিক এন্ডোমেট্রিয়াম টিস্যুগুলোও ছিঁড়ে গেলে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হতে থাকে যার ফলে এই সময় তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণা হয়। এই সময় ওভারিতে যে সিস্ট তৈরি হয় তাকে ‘চকোলেট সিস্ট’ বলা হয়। এই সমস্যাকে অবহেলা করলে অনেক সময় এই সিস্ট টিউমার এর আকৃতি ধারণ করে। সে ক্ষেত্রে সমস্যা আরও গুরুতর হয়ে পড়ে।
এন্ডোমেট্রিওসিসের সমস্যা অবহেলা না করে এই সময় প্রতিনিয়ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এন্ডোমেট্রিওসিস এমন একটি অসুখ যা সম্পূর্ণভাবে সারিয়ে তোলা কখনোই সম্ভব হয়ে ওঠে না। একমাত্র ডায়াথার্মি, লেসার বা ল্যাপারোস্কোপির সাহায্যে এন্ডোমেট্রিওসিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।