বিশ্ব সেরিব্রাল পলসি ডে : চেষ্টা করলে ওরাও পারে!

Advertisement

Advertisement

মনে পড়ে অপর্ণা সেন পরিচালিত বিখ্যাত চলচ্চিত্র পারমিতা একদিনের সেই ছোট বাবলুর কথা। আশাকরি প্রত্যেকেরই মনে আছে। বাচ্চাটি সেরিব্রাল পলসি এই রোগে আক্রান্ত ছিল। চরিত্রটি ভোলার নয়। ছোট্ট একটা চরিত্রের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছে মায়ের যন্ত্রণা, সংসারে তাকে নিয়ে অশান্তি এবং সমাজের নানা বাস্তব দিক। সিনেমাতে ঐরকম একটি চরিত্র দেখানো হলেও, ঐরকম কত কত বাবলু আমাদের ঘরে ঘরে জন্মায় প্রতিনিয়ত। বিয়ের পরে প্রতিটি মেয়েই চায় মা হতে।

Advertisement

কিন্তু এমন সন্তান জন্ম দিলে স্বাভাবিক ভাবে যে সমাজে চলা যায় না, বা নিজের মনের কষ্ট কাউকে বলা যায়না একথা সত্য। এই নিয়ে শুরু হয়ে যায় স্বামীর সঙ্গে তর্ক বিতর্ক। চিড় ধরে সংসারে। স্বামী মানুষটাও স্ত্রীকে ক্রমাগত দোষারোপ করতে থাকে। কিন্তু বিষয়টা দোষারোপের নয়, সচেতনতার। কেউ কাউকে দোষ দিয়ে সুরাহা মিলতে পারে না।

Advertisement

গর্ভাবস্থায় প্রতিটি নারীকেই নিতে হবে উপযুক্ত যত্ন। নিম্নবিত্ত পরিবারের নারীরা এই বিষয়ে একটু বঞ্চিতই থাকেন, তাদেরকে গর্ভাবস্থায় বাড়ির সমস্ত কাজ করতে হয়। এই অবস্থায় সেই নারীর পেটে যদি কোন ভাবে আঘাত লাগে তো সেখান থেকে হতে পারে সমস্যা সৃষ্টি । সন্তান নেওয়ার জন্য স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই আগে প্ল্যান করতে হবে।দুজনেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সুস্থ থেকে তারপরে সন্তান আনার জন্য চেষ্টা করতে হবে। নারীকে এই সময় উপযুক্ত খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে রাখতে হবে। সবুজ শাকসবজি, ফল, দুগ্ধজাত দ্রব্য যেন তাদের খাবারের তালিকায় থাকে।

Advertisement

এই রোগের লক্ষণ কি?
১)শিশুর ধারাবাহিক উন্নতির বিলম্ব ঘটবে, যেমন আট মাস বয়সে বসা,অথবা 18 মাস বয়সে হাটতে পারবে না।
২) শিশুটিকে গম্ভীর অথবা নিস্তেজ দেখাবে
৩) বাহু দুর্বল থাকবে।
৪)মাংসপেশির সংকোচন।
৫) হাত পা কাঁপা।
৬) সর্বদা এলোমেলো ভাবে চলাফেরা।
৭)একনাগাড়ে অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলাফেরা।
৮)কথা বলতে না পারা।
৯)পড়ালেখার অক্ষমতা।

কি কারনে এই রোগ টি হয়?
১)বাচ্চার ব্রেনে রক্ত ক্ষরণ অথবা ব্রেইনে পর্যাপ্ত পরিমান রক্ত এবং অক্সিজেন না পাওয়া
2) গর্ভাবস্থায় কোন সংক্রমনে আক্রান্ত হওয়া।
৩) জন্মের পূর্বে কার সমস্যা কোন সংক্রামক রোগ দ্বারা আক্রান্ত হলে। যেমন রুবেলা চিকেন পক্স সাইটোমেগালো ভাইরাস ইত্যাদি।
৪) জন্মের পর সমস্যা সংক্রমণ হলে, মাথা মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হলে, রক্তে সুগারের পরিমাণ কমে গেলে, স্ট্রোক হলে।

চেষ্টা করলে ওরা করতে পারে?
এদের ভবিষ্যৎ যাতে বৃথা না যায় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেক শিশুই মেইনস্ট্রিম স্কুলে যায় কিন্তু কারো কারো বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজন হয় এবং তারা যাতে এই বিশেষ সেবা থেকে লাভবান হতে পারে সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। এই শিশুদের কর্মতৎপর এবং স্বাধীনতা অনেক ক্ষেত্রে খুবই কম। তাদের স্বাধীনতায় যাতে কেউ হস্তক্ষেপ না করে সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। বিভিন্ন কারণে সেরিব্রাল পলসি শিশুর জীবন প্রতিদ্বন্দী মূলক হচ্ছে এবং পিতা-মাতার এই ধরনের বাচ্চাদের নিয়ে অনেক ধরনের সমস্যায় আছেন এবং তারা হতাশায় ভুগছেন। তাদের দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। তাই সবশেষে তারা যেন বলতে পারে আমরা করব জয় নিশ্চয়।

Written by – শ্রেয়া চ্যাটার্জী