রুপা ভট্টাচার্য কেন বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন, দীলিপ ঘোষকে স্পষ্ট উত্তর দিয়ে দল ছাড়লেন

Advertisement

Advertisement

রাজনীতি ছাড়লেন অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য। একসময় টলিউডকে বিজেপিমুখী করেছিলেন জয় বাবা লোকনাথ খ্যাত অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য। আড়াই বছর আগে মুকুল রায়ের হাত ধরেই দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন একঝাঁক টলিউড তারকার দল। তবে ভোটের পর প্রথমে মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে শাসক দলে নাম লেখান। তবে এবার দল ছাড়লেন রুপা ভট্টাচার্য আর অনিন্দ্য পুলক বন্দোপাধ্যায়।

Advertisement

সম্প্রতি সিপিএমের শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন উদযাপনে উপস্থিত ছিলেন রুপা। তাহলে কি রুপা এবার বিজেপি ছেড়ে কমিউনিস্ট দলে নাম লেখালেন। তবে শ্রমজীবী ক্যান্টিনে রুপার উপস্থিতি ভালো চোখে দেখেননি শ্রীলেখা এবং রাহুল অরুণোদয় বন্দোপাধ্যায়। বিজেপি সভাপতি দীলিপ ঘোষ ও এই দুজনের বিজেপি ছাড়া নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন। তিনি বলেন,’ আমার হাত দিয়ে তো যোগ দেয়নি কেউ। ভিড়ের মধ্যে অনেকে বিজেপিতে এসেছেন। মেলা লেগেছে। এখন মনে হচ্ছে, এখানে সুবিধা হচ্ছে না, তাই ওদিকে যাচ্ছে’। এছাড়া তিনি আরো বলেন,সেলিব্রিটিরা কখনো আন্দোলন করেন না, শোভা বাড়ান’।

Advertisement

এরপরই দিলীপ ঘোষের কথাতে পালটা জবাব দিলেন রুপা ভট্টাচার্য। তিনি নিজের ফেসবুক পেজে বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে খোলা চিঠি লিখলেন রূপা ভট্টাচার্য। তিনি দিলীপবাবুকে স্মরণ করিয়ে লিখলেন দিল্লিতে রাজ্য সভাপতি তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দলে স্বাগত জানিয়েছিলেন বছর তিনেক আগে। তিনি স্পষ্ট ভাবে বলেছেন, ‘আমি এখন আর বিজেপিতে নেই। আমি দলের কোনও পদে নেই। যাঁরা আমায় চেনেনই না, তাঁদের আবার ইস্তফাপত্র দেব কেন?’

Advertisement

এরপর অভিনেত্রী দীলিপ বাবুকে উদ্দেশ্য করে আরো লেখেন, ‘ঠিক বলেছেন তিনি। তাঁরা এই কলাকুশলীদের চিনতেই পারেননি। সেই ক্ষমতাই নেই তাঁদের। আর সত্যি শুনলে তার থেকে নিজের পিঠ বাঁচাতে এটা তো বিজেপির বরাবরের সংলাপ। অবশ্য দিলীপবাবু শিল্পীদের রগড়ে দেন। তার প্রতিবাদ তখন করেছিলেন তাই এমনিও তাঁর জন্য কলাকুশলীরা বিড়ম্বনা। একটা কথা ভুলবেন না তাঁকে শিল্পী দীলিপ বাবু বা বিজেপি বানায়নি। মানুষ বানিয়েছে। তাদের প্রতি সৎ এবং দায়বদ্ধ তিনি থাকবেন।’

https://twitter.com/ReelnRealRupa/status/1427960119212474368?ref_src=twsrc%5Etfw Copy Code

তারপরই লেখেন, ‘এই দলের আমি আজ আর কেউ নই। আপনাদের কথায় কখনও কেউ ছিলাম না। একটা কথা বলে যাই আপনার দলের অ্যাসেস্ট আপনাদের সাধারণ কার্যকর্তারা। শিল্পীদের কদর করেননি তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। কিন্তু দলের কর্মীদের কদর করুন। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝুন।’

অবশ্য এরপর দীলিপ বাবুর ধান্দা কথাও বললেন অভিনেত্রী। নিজের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ‘দুটো ধান্দা’র কথা উল্লেখ করেন অভিনেত্রী। তিনি লেখেন, একনম্বর কারণ হল এখানে নৈরাজ্যর থেকে মুক্তি। কেন্দ্র ও রাজ্যে যদি এক সরকার হয় তাহলে রাজ্যে কর্মসংস্থান বাড়বে। তাহলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিক, পরিযায়ী ইঞ্জিনিয়ার, পরিযায়ী কর্পোরেট, পরিযায়ী শিক্ষক, এমনকি পরিযায়ী শিল্পীরা জীবিকার সন্ধানে নিজের ঘর ছাড়বে না। এটা একটা ধান্দা ছিল।

দুই নম্বর ধান্দার কথা উল্লেখ করলেন। তিনি লিখলেন, তিনি এই দল যোগ করেন নিজেদের ঘর বাঁচানোর জন্য। রাজনৈতিক কারণে ফিল্ম এবং টেলিভিশনের জগৎ কতটা সাফার করছিল,কতটা দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছিল সেটা সবাই জানে। সেই অবস্থা থেকে উদ্ধার পেতে তাঁরা কেন্দ্র সরকারের সাহায্য চেয়েছিলেন। যাতে রাজনৈতিক রঙ না দেখে শুধু যোগ্যতার নিরিখে ইন্ড্রাস্টিতে শিল্পী কলাকুশলী প্রোডিউসার সবাই শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ করতে পারে একসাথে। এটাই আসল ধান্দা ছিল সকলের একযোগে জয়েন করবার।

আড়াই বছর দলে থেকেও দলের হয়ে সকলের সাথে সংগ্রাম করেও এবছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচনের লড়াইতে লড়ার জন্য টিকিট পাননি। বরং সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া তারকারা টিকিট পান। তবু কষ্ট পেয়েও দলের লড়াইয়ে পাশে ছিলেন রূপা। খটকা লাগলেও তবুও সঙ্গে ছিলেন, প্রচার থেকে ডিবেটে অংশ নিয়েছিলেন। দলের হয়ে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন সর্বত্র। তবে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভে দলের মনোভাব দেখে তিনি এই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

Recent Posts