করোনায় বদলে ফেলেছেন পেশা, অভিনয় ছেড়ে মাছ বিক্রি করছেন টলিপাড়ার অভিনেতা

Advertisement

Advertisement

করোনা ভাইরাস দুবছরে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। দিন যত যাচ্ছে, করোনা পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। দ্বিতীয় ওয়েভ সামাল দিতে না দিতে তৃতীয় ওয়েভ খুব শীঘ্রই আছড়ে পড়তে পারে। করোনা আর লকডাউন দুইয়ের জেরে অনেকে পেশা পরিবর্তন করেছে। এক দশকের বেশি সময়ের অভিনয় জীবন ছেড়ে, এখন মাছ ব্যবসায় হাত পাকাচ্ছেন টালিগঞ্জের পরিচিত মুখ। এক সময় সুর্বণলতার খোকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। আজ এই খোকাই মাছ বিক্রেতা।

Advertisement

এই খোকা আর কেউ নয় অভিনেতা অরিন্দম প্রামাণিক। হিরোর ভূমিকায় অভিনয় না করলেও পাশ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা। তবে করোনার জন্য লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন এখন অতীত হয়ে গিয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের মেমারি শহরের সোমেশ্বরতলার বাসিন্দা অরিন্দম। বাড়িতে বাবা-মা ছাড়াও রয়েছেন স্ত্রী। গত বছর লকডাউনের সময় টালিগঞ্জ ছেড়ে মেমারির বাড়িতে চলে আসেন। হাতে কাজ ছিলনা।

Advertisement

তবে কোনো কাজই ছোট নয়। দুবছরে দুবার লকডাউনে স্টুডিও পাড়াতে তালা পড়েছে। তাই ভাগ্যের পরিহাস এমনই যে এই তরুণ অভিনেতাকে রাস্তায় এনে ফেলেছে করোনা অতিমারি।ক্যামেরার সামনে আর কোনো ডায়লগ বলেননা তার বদলে বাজারে কাকভোরে বেরিয়ে পড়েন। সামক্নে রুই, কাতলা, ইলিশ, চিংড়ি, ভেটকি হরেক রকম মাছ নিয়ে বসেন। বেলা বাড়তেই মাছের দর হাঁকছেন মেমারির এই তরুণ– ‘বড় বড় কাতলা দেড়শো টাকা দেড়শো টাকা’। অনেক সময় ক্রেতা নিজের দিকে আকর্ষিত করতে বিভিন্ন ধারাবাহিকের সংলাপ আওড়াতে ভোলেননা।

Advertisement

দশ বছরের বেশি সময় ধরে অভিনয় জগতে বিচরণ ছিল অরিন্দমের। তবে পেটের টানে সেই শিল্পীসত্তা ছেড়ে এখন নিখাদ পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য একেই ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছেন অভিনেতা। ছোট থেকেই অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা ছিল অরিন্দমের। একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় নাট্যকার ও নির্দেশক চন্দন সেনের নাটকের দলে অভিনয়ে হাতেখড়ি দিয়েছিলেন অরিন্দম। এরপর ২০১১ সালে সুবর্ণলতা মেগা ধারাবাহিকে খোকা চরিত্রে অরিন্দমের প্রথম টেলিভিশন জগতে পা রাখা।এই ধারাবাহিক টেলিপাড়াতে পরিচিতির পরিসর বাড়িয়ে তোলে। রাশি, অগ্নিপরীক্ষার মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন এই তরুণ অভিনেতা ।এছাড়াও তোর নাম, হারকিউলিস এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন অরিন্দম।

অরিন্দম জানিয়েছেন, মাছের ব্যবসা শুরু করার পর কাজের সুযোগ এসেছিল একবার।কিন্তু করোনার জন্য সেই কাজের ওপর ভরসা করতে পারেননি। তবে এদিকে এই ব্যবসা তিনি অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছেন তাই তো নিজের অভিনয়ের জন্য এই ব্যবসাকে না দেখা করতে পারেননি। তাই অভিনয়ের সেই কাজ ডিনাই করেছিলেন। অরিন্দম দরিদ্র পরিবারের ছেলে। বাবার সব্জির দোকান ছিল। গত বছর লকডাউনে সেইরকম কোনো সব্জি বিক্রি হতোনা তাই তো বাবার সেই দোকানে মাছ বিক্রি করে সংসার টানছেন খোকা।