সংসারে টাকার অভাব, মায়ের চিকিৎসার জন্য কোভিদ আক্রান্ত মৃতদেহ সামলাচ্ছে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র

Advertisement

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আপাতত পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে করোনা আক্রান্ত মৃতদেহের দেখ ভালের কাজে নেমেছেন। মা র চিকিৎসার খরচ অনেক, তাছাড়া নিজের পড়াশোনার জন্য টাকার প্রয়োজন, তাই আপাতত পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে টাকার জন্য কাজের দরকারে এমন কাজ খুঁজে নিয়েছেন। চাঁদ মহম্মদ এর মা, দীর্ঘদিন ধরে থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত। প্রতিদিনের জন্য প্রয়োজন ওষুধ। কয়েকদিন আগে তার বড় ভাই কাজ হারিয়েছেন। কৃষ্ণনগরের একটি দোকানে তিনি কাজ করতেন। এক সপ্তাহ আগে, চাঁদ বাধ্য হয়ে একটি কোম্পানিতে কাজ করতে ঢোকেন, যারা তাকে লোক নায়ক জয় প্রকাশ নারায়ন হাসপাতালে কোভিদ রোগীদের মৃতদেহ কে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার কাজে নিয়োগ করেছেন। এই কাজে তাকে কোভিদে আক্রান্ত মৃতদেহ সামলাতে হবে। কোথাও করোনাভাইরাস এ কেউ আক্রান্ত হয়েছে শুনলেই আমরা তার থেকে দশ হাত দূরে হাঁটছি, বা ভয় বুকের ধুকপুকানি আরো দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। আর অর্থের জন্য এই ছেলেটি এমন ভয়ংকর একটি কাজ বেছে নিয়েছে।

Advertisement

দুপুর ১২টা থেকে ৮টা পর্যন্ত তাকে থাকতে হচ্ছে, কোভিদ আক্রান্ত মৃতদেহের সঙ্গে। তার বাড়িতে রয়েছে তিন বোন, দুই ভাই এবং মা, বাবা। চাঁদ জানায়, আপাতত তাদেরকে পেটের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। অনেকদিনই এক বেলা হাঁড়িতে ভাত চড়ছে। তার মতে, “এখন আমরা অবশ্যই লড়াই করছি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে, আমার সম্ভাবনাও রয়েছে এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার, কিন্তু পেটের জ্বালা কেও আমরা কেউই উপেক্ষা করতে পারবনা।” এই কাজের জন্য তাকে মাসে ১৭০০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন তাকে দুই থেকে তিনটি মৃতদেহ সামলাতে হচ্ছে।

Advertisement

মৃতদেহগুলি কে হসপিটালের বিছানা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলতে হচ্ছে, সেখান থেকে নিয়ে যেতে হচ্ছে কোন কবরস্থানে, সেখানে গিয়ে স্ট্রেচারে করে মৃতদেহটি বার করা হচ্ছে কবর দেওয়ার জন্য। তাছাড়াও নিজেদেরকে সুস্থ রাখার জন্য সব সময় যে পোশাকটি তাদের পড়তে হচ্ছে তা যথেষ্ট ভারী। এই গরমের সময় একটি মানুষের সারাক্ষণ এটি পড়ে থাকা যথেষ্ট কষ্টকর। চাঁদের পরিবার তার এই কাজের জন্য যথেষ্ট চিন্তিত। ছেলেটি পরিবারের কথা ভেবে টাকা রোজগারের জন্য নিজের জীবনের দিকটি না ভেবে প্রতিদিন যে কাজটি করে চলেছে তার জন্য সত্যিই তাকে কুর্নিশ জানাতে হয়। তবে এই মুহূর্তে তার সুস্থ থাকাটাও একান্ত প্রয়োজনীয়। চাঁদ জানান, তার পরিবারের লোকজন সারাক্ষণ প্রার্থনা করছেন এবং তার সুস্থতা কামনা করছেন।

Advertisement

Recent Posts