‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি তোলা মুসকানকে ৩ কোটি টাকা দিয়েছেন সালমান ও আমির, খবরটা কি সত্যি?

কর্নাটকের উদুপী এলাকার ঘটনা রীতিমতো সাড়া ফেলেছে নেট দুনিয়ায়

Advertisement

Advertisement

সারা ভারতে বর্তমানে মুসকান খানের ভিডিও রীতিমতো সাড়া ফেলেছে নেট দুনিয়ায়। কলেজের সামনে বোরখা পরে একটি মেয়ে রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছে এবং স্লোগান দিচ্ছে আল্লাহু আকবার। অন্যদিকে তাকে লক্ষ্য করে গলায় গেরুয়া ওড়না জড়িয়ে একদল ছেলে ছুটে আসছে এবং তাদের গলায় স্লোগান ‘জয় শ্রীরাম’। এই ঘটনার ভিডিও বর্তমানে নেট মাধ্যমে সবাই একবার না একবার অন্তত দেখেছেন। কর্নাটকের উদুপি এলাকায় এই ঘটনাটি বর্তমানে নেট মাধ্যমে সাড়া ফেলেছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরব হয়েছে প্রত্যেক মহল। প্রতিবাদী ওই ছাত্রীর নাম মুসকান খান। একইভাবে মুসকান নিজেও সোশ্যাল মিডিয়াতে বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

Advertisement

অন্যদিকে খবর রটেছে নাকি, আল্লাহু আকবার শ্লোগান দিয়ে নিজের ধর্মকে তুলে ধরার জন্য মুস্কানকে ৩ কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন অভিনেতা সালমান খান এবং আমির খান। তার পাশাপাশি তুরস্কের সরকার নাকি তাকে দু’কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যে ইউটিউবে এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এই খবরটি ছড়িয়ে পড়েছে। বহু ইউটিউব এর এই তথ্য শেয়ার করে ফেলেছেন যাদের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক। একাধিক জায়গায় এই খবর ছড়িয়ে পড়েছে এবং অনেকেই বিষয়টি বিশ্বাস করছেন। ফলে একদিকে যেমন মুখ পুড়ছে প্রত্যেকটি ধর্মের, তেমনি অপমানিত হতে হচ্ছে আমির এবং সালমানকে। কিন্তু, এই খবরটি কি আদৌ সত্য? নাকি পুরোটাই রটনা?

Advertisement

এই ঘটনার তদন্ত করার জন্য নেমে পড়েছিল সংবাদসংস্থা ফ্যাক্টলি। তারা তদন্ত করে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, এই খবরটি সম্পূর্ণরূপে ভুয়ো এবং মুস্কানকে কেউ কোন টাকা দেননি। এই খবরটা সম্পূর্ণরূপে একটি রটনা। এর মাধ্যমে ইসলাম এবং হিন্দু ধর্মকে অপমান করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং পাশাপাশি ভারতের দুইজন ইসলাম ধর্মাবলম্বী অভিনেতা সালমান খান এবং আমির খানের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই, সালমান এবং আমির দুজনেই এই জাল খবর নিয়ে সরব হয়েছেন।

Advertisement

চলতি মাসের ৫ ফেব্রুয়ারি কর্ণাটক সরকার সমতা অখন্ডতা এবং জনসাধারণের আইন-শৃঙ্খলাকে বিঘ্নিত করে এমন সমস্ত পোশাকের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সমস্ত স্কুল এবং কলেজে একটি নির্দিষ্ট ড্রেসকোড বাধ্যতামূলক করার আদেশ জারি করে। কিন্তু তারপরেই শুরু হয় পুরো বিতর্কের। ইতিমধ্যেই বর্ষিয়ান গীতিকার এবং চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার, অভিনেত্রী শাবানা আজমি, স্বরা ভাস্কর এবং হেমা মালিনী সহ আরো অনেকেই এই হিজাব বিতর্ক নিয়ে মত দিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়ে বৃহস্পতিবার জাভেদ আখতার টুইট করেন, “আমি কখনোই হিজাব বা বোরখা পরার পক্ষে ছিলাম না। আমি এখনো এই পক্ষে। কিন্তু একই সঙ্গে এই গুন্ডারা যারা একটি মেয়েকে হিজাব পরার জন্য ভয় দেখানোর চেষ্টা করে এবং ব্যর্থ হয়, তাদের জন্য ধিক্কার। এটাই কি শুধুমাত্র তাদের কাছে পুরুষত্বের ধারণা?”

অন্যদিকে, জাভেদ আখতারের এই পোস্ট এর বিরোধিতা করে স্বঘোষিত হিন্দুত্ববাদী অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত লিখলেন, “যদি সত্যি সাহস দেখাতে হয়, তাহলে আফগানিস্তানের গিয়ে বোরখা পরবেন না। স্বাধীনভাবে থাকতে শিখুন, কখনো খানে যাই নিজেকে বন্দী করে রাখবেন নাম।” অন্যদিকে এই টুইট বিতর্কে অংশ নেন অভিনেত্রী শাবানা আজমি। তিনি লেখেন, “ভুল হলে আমাকে সংশোধন করুন, কিন্তু আফগানিস্তান একটি ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এবং আমি শেষবার যা দেখেছি, ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র।” যদিও বিতর্ক এখানেই শেষ হয়নি। এখনো কর্নাটকে এই হিজাব ইস্যু নিয়ে পরিস্থিতি থমথমে। তার মধ্যেই আমির খান এবং সালমান খানের এই পুরস্কার ঘোষণার খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ।