টলিউড

Aindrila-Sabyasachi: শত চেষ্টার পরেও মৃত্যুর কাছে হার মানলো সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার ভালোবাসা, সব হারিয়ে নিঃস্ব অভিনেতা

Advertisement

Advertisement

তারার দেশে ঐন্দ্রিলা। এবার আর তার ঘরে ফেরা হল না। লড়াকু মেয়েটা সব চেষ্টা ব্যার্থ করে লড়াই থামালো রবিবার দুপুর ১২’টা ৫৯ মিনিটে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয় তার, হাসপাতাল সূত্রেই মিলেছে সেই খবর। সবাই মন প্রাণ দিয়ে তার ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলেন। চেয়েছিলেন আরো একবার মিরাকেল হোক। কিন্তু তা আর হওয়ার নয়। এই মুহূর্তে তার প্রয়াণে স্তব্ধ সাধারণ থেকে গোটা তারকামহল। তবে এত কিছুর মধ্যেও যে মানুষটা ঐন্দ্রিলার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন, পাশে ছিলেন তার প্রাণশক্তি হয়ে তিনি আজ সর্বহারা।

Advertisement

Advertisement

২০১৫ সালে বোনম্যারো ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী। কেমোথেরাপির পর ২০১৬’তে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছিলেন তিনি। অভিনয় জগৎ’এও পুরোদমে কাজ করতে শুরু করেছিলেন তিনি।তবে এরপরেও নিস্তার মেলেনি।২০১৭’তে ‘ঝুমুর’ ধারাবাহিকের সূত্র ধরেই পরিচয় হয়েছিল তাদের। সেইসময় ছোটপর্দায় তাদের অনস্ক্রিন রসায়ন নজর কেড়েছিল সকলের। তবে ধারাবাহিক শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও তাদের বন্ধুত্ব আলগা হয়নি। বরং ধীরে ধীরে আরো গভীর হয়েছিল। পরে একে অপরের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন তারা। তবে তাদের সেই সুখের জীবনে আবারো থাবা বাসায় ক্যান্সার।

Advertisement

২০২১ সালে ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে তার। তবে সেখান থেকেও লড়াই করে ফিরে এসেছিলেন অভিনেত্রী। ২০২২ সালের শুরুর দিকেই তার সুস্থতার খবর পাওয়া গিয়েছিল। আর তার সেই সুস্থ হয়ে ওঠার প্রতিটি মুহূর্তে তার পাশে ছিলেন সব্যসাচী চৌধুরী। তার সঙ্গী, বন্ধু ও অভিভাবক।

শেষ কয়েকমাস সব চলছিল নিজের মতো। তবে ১’লা নভেম্বর আবারো তার ভালো থাকায় বাদ সাদলো তার শরীর। ১’লা নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোক হয় তার। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ২০ দিন টানা মৃত্যুর সাথে লড়াই করে গেছেন তিনি। বাড়ির সকলের পাশাপাশি তার পাশে ছিলেন সব্যসাচী। বলাই বাহুল্য, তাকে ফিরিয়ে আনার সবরকম চেষ্টা করেছিলেন ডাক্তাররাও। সাধারণ থেকে তারকা সকলেই তার জন্য নিঃস্বার্থভাবে প্রার্থনা করে গিয়েছিলেন। আশা করছিলেন আবারো হয়তো কোন মিরাকেল হবে! আবারো সুস্থ জীবনে ফিরে আসবেন তিনি। তবে শনিবার রাতে পরপর ১০ বার হৃদরোগে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। আর তারপরেই নিজের সমস্ত ফেসবুক পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা থেকে মুছে দিয়েছিলেন সব্যসাচী।

পরপর বেশ কয়েকবার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে শনিবার রাত থেকেই ধীরে ধীরে হার্টবিট কমতে শুরু করেছিল অভিনেত্রীর। সিপিআর সহ একাধিক সাপোর্টের সাহায্যে ঐ মুহূর্তে বাঁচানো গিয়েছিল অভিনেত্রীকে। তবে নিজের সবথেকে কাছের মানুষটাকে এইভাবে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে যেতে দেখে ভেঙে পড়ছিলেন অভিনেতা। তাও হাল ছাড়েননি তিনি। শেষপর্যন্ত জারি রেখেছিলেন তাদের একে অপরকে জড়িয়ে বেঁচে থাকার লড়াই। শারীরিক কষ্টে হাত অসাড় হয়ে গিয়েছিল ঐন্দ্রিলার। ফুলে গিয়েছিল ঐন্দ্রিলার মুখ ও পাও। হয়তো আর কিছুই হওয়ার নয়, জানার পরেও নিজের উদ্যোগে সব্যসাচী চালিয়ে গিয়েছিলেন মিউজিক থেরাপি। শেষপর্যন্ত আইসিইউতেই রাখা হয়েছিল অভিনেত্রীকে।

রবিবার অভিনেত্রীর প্রয়াণের পর পুরোপুরি ভেঙে পড়েছেন অভিনেতা। নিজের গোটা ফেসবুক অ্যাকাউন্টটাই ডিলিট করেছেন তিনি। ঐন্দ্রিলার সাথে তিনিও লড়ে গিয়েছিলেন। নিজের সব থেকে কাছের মানুষটাকে আবারও ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। তবে শত চেষ্টার পরেও মৃত্যুর কাছে হার মানলো সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার ভালোবাসা। তবে তাদের এই ভালোবাসার গল্প যে বহু মিথ্যের মাঝেও একটা সত্যিকারের ভালোবাসার উদাহরণ হয়ে থেকে যাবে, তা আলাদাভাবে না বললেও চলবে।

Recent Posts