‘পৃথিবীর যে কোনও পুরুষ আমার বদলে হেমা মালিনীকে বেছে নেবে’, অপকটে স্বীকার ধর্মেন্দ্রের প্রথম স্ত্রী

Advertisement

Advertisement

সিনেদুনিয়ার রূপোলি পর্দার আড়ালে রয়েছে এক কঠিনতম বাস্তব। সেখানে নিরন্তর চলে সম্পর্ক ভাঙা-গড়ার খেলা। বিবাহিত নায়ক-নায়িকারা বারবার জড়িয়ে পড়েছেন পরকীয়া সম্পর্কে। কখনও তা নিয়ে ফিল্ম তৈরী হয়েছে। কিন্তু ধর্মেন্দ্র (Dharmendra) ও হেমা মালিনী (Hema malini)-র সম্পর্ক এহেন বলিউডকেও নাড়িয়ে দিয়েছিল। হেমা মালিনী বরাবর বলিউডের ‘ড্রিমগার্ল’। ধর্মেন্দ্র ও হেমা অভিনীত ‘ড্রিম গার্ল’ ফিল্মটি বহু পুরুষের মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল। বলা বাহুল্য, ধর্মেন্দ্রও মুগ্ধ হয়েছিলেন হেমার প্রতি। সেই সময় হেমার মা তাঁর জন্য রীতিমত পাত্র খোঁজা শুরু করে দিয়েছিলেন। অপরদিকে সঞ্জীব কুমার (sanjiv kumar)-ও আকৃষ্ট হয়েছিলেন হেমার প্রতি। তিনি সোজাসুজি হেমার বাড়িতে গিয়ে তাঁর মাকে বলেন, তিনি হেমাকে বিয়ে করতে চান। সঞ্জীবকে হেমারও ভালো লাগত। তাঁকে বিয়ে করতে হেমারও আপত্তি ছিল না। কিন্তু পাত্র ঠিক হয়ে যাওয়ার কারণে সঞ্জীবকে ফিরিয়ে দেন হেমার মা।

Advertisement

হেমার জন্য ঠিক হওয়া পাত্রটি আর কেউ নন, তিনি ছিলেন জিতেন্দ্র (Jeetendra)। হেমা কোনোদিন তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাননি। ফলে তিনি জিতেন্দ্রকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যান। কিন্তু বিয়ের দিন ঘটল একটি দুর্ঘটনা যা বদলে দিয়েছিল হেমা, জিতেন্দ্র ও হেমার ভালো বন্ধু ধর্মেন্দ্রর আগামী জীবন। জিতেন্দ্র ও হেমা বিয়ের মন্ডপে পৌঁছে মালাবদল করেছিলেন। এরপর বাকি নিয়ম সারার আগেই সেখানে এসে পৌঁছান ধর্মেন্দ্র। তিনি সেই সময় মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। জিতেন্দ্র ও হেমার সঙ্গে ধর্মেন্দ্র একটি বার কথা বলতে চান। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, জিতেন্দ্র, হেমা ও ধর্মেন্দ্র একটি ঘরে দরজা বন্ধ করে অনেকক্ষণ কথা বলেন। সেই সময় অপর কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। ফলে তাঁদের মধ্যে কি কথা হয়েছিল তা আজও অজানা। তবে এরপর হেমা নিজেই কাঁদতে কাঁদতে বিয়ের মন্ডপে এসে জানিয়েছিলেন, তিনি জিতেন্দ্রকে বিয়ে করতে পারবেন না। জিতেন্দ্র ‘বারাত’ নিয়ে ফিরে গিয়েছিলেন। কিন্তু এই ঘটনার জন্য কোনোদিন হেমাকে দায়ী করেননি জিতেন্দ্র।

Advertisement

ধর্মেন্দ্র বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে আসার আগেই মাত্র উনিশ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয়েছিল প্রকাশ কৌর (prakash kaur)-এর সাথে। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর জন্ম হয় সানি (sunny Deol) ও ববি(Bobby deol)-এর। নিজের ভরা সংসার থাকতেও ধর্মেন্দ্র হেমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে প্রকাশকে ডিভোর্স না দিয়ে তিনি ও হেমা মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। এই বিয়েতে মত দেননি হেমার মা। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অধিকাংশ ব্যক্তিত্ব ধর্মেন্দ্রকে চরিত্রহীন বলতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই সময় কখনও লাইমলাইটে না আসার প্রকাশ একটি সাক্ষাৎকারে ধর্মেন্দ্রর সম্পর্কে কুৎসা রটানোর বিরোধিতা করেছিলেন। সেদিন অদ্ভুত কথা বলেছিলেন প্রকাশ। তিনি বলেছিলেন, শুধু তাঁর স্বামীই নয়, পৃথিবীর সব পুরুষই হেমাকে নিজের স্ত্রী হিসাবে দেখতে চাইবেন। তিনি বলেছিলেন, বলিউডে এই ঘটনা খুব স্বাভাবিক। তবে ধর্মেন্দ্রকে সেরা পিতা বললেও সেরা স্বামী কখনও বলেননি প্রকাশ। অপরদিকে তিনি হেমা ও ধর্মেন্দ্রর বিয়ে নিয়ে বলেছিলেন, এই বিয়েকে তিনি স্ত্রী হিসাবে, মা হিসাবে মান্যতা দিতে রাজি নন।

Advertisement

বর্তমানে ধর্মেন্দ্র ও হেমা একে অপরের থেকে অনেকটাই দূরে সরে গিয়েছেন। ধর্মেন্দ্রর রক্ষণশীল মনোভাব মানতে পারেননি হেমা। ধর্মেন্দ্র থাকেন সানি দেওল-এর সঙ্গে। হেমা থাকেন তাঁর দুই মেয়ে এষা (Esha Deol) ও অহনা (Ahana Deol)-এর সঙ্গে। কিন্তু প্রকাশ নিজের সংসার থেকে দূরে থাকেন ধর্মেন্দ্রর পৈতৃক ভিটেতে যেখানে আজও পা রাখার অধিকার পাননি হেমা। 2015 সালে একবার অসুস্থ কাকা অজিত দেওল (Ajit deol)-কে দেখতে সেখানে গিয়েছিলেন এষা। তাঁর যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন সানি। সানি ও ববির সঙ্গে এষা ও অহনার সম্পর্ক ভালো হলেও তাঁরা হেমাকে পছন্দ করেন না। আর প্রকাশ? তিনি প্রতিশোধ নিয়েছেন নিস্তব্ধ থেকে। এক সময় যৌবনে ধর্মেন্দ্র তাঁকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের প্রকৃত সময় হল বৃদ্ধাবস্থা যখন একে অপরের সঙ্গ চান। দুজন দুজনের সঙ্গে নিভৃতে বসে স্মৃতি রোমন্থন করেন। সেই প্রকৃত সময়ে ধর্মেন্দ্রকে নিজের কাছে ফিরে আসার সুযোগ না দিয়ে প্রকাশ চলে গিয়েছেন তাঁর শ্বশুরবাড়িতে। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, তিনিই আইনত ও প্রকৃত মিসেস প্রকাশ কৌর, ধর্মেন্দ্রর স্ত্রী ও দেওল বংশের বধূ, হেমার মতো বড় নায়িকাও যাঁর স্থান কোনোদিন নিতে পারবেন না।

Recent Posts