জন্ম থেকেই নেই দুই হাত, কিন্তু এই কন্যা একজন সফল গাড়ির চালক

Advertisement

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি : পৃথিবীতে যে সমস্ত মানুষেরা তাদের অক্ষমতাকে তাদের শক্তিতে পরিণত করে, তারাই সমস্ত মানুষের কাছে আদর্শ মানুষ হয়ে ওঠেন। এদের মধ্যে একজন হলেন ২৮ বছরের কন্যা জিলুমল ম্যারিয়ট থমাস। যিনি জন্ম থেকেই থ্যালিডোমাইড সিনড্রোমে আক্রান্ত। যার ফলে জন্ম থেকেই তিনি তার দুই হাত না নিয়েই জন্মেছেন।

Advertisement

এমন অবস্থায় যে কোনো মানুষই শারীরিকভাবে না হোক মানসিকভাবে দমে যাবেন, কিন্তু জিলুমল তা হননি । কোনমতেই তিনি কোন কিছু থেকেই পিছিয়ে থাকেননি। তার ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল গাড়ি চালানোর। এমন স্বপ্ন কেও তিনি বাস্তবে রূপান্তরিত করেছেন। শুধুমাত্র তার মনের জোরে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কে জয় করে তিনি গাড়ি চালিয়েছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন : আগামী ৬ মাস বিনামূল্যে রেশন পাবে রাজ্যবাসী, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

Advertisement

ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল তার নিজের একটি গাড়ি হবে এবং সে গাড়িটি চালিয়ে তিনি করিমপুর এর রাস্তা দিয়ে চালাবেন, যে জায়গাটি তার গ্রাম থোডুফুঝার কাছে।২০১৪ সালে জিলুমল থোডুফুঝার রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসে অনুমতি নিতে যান যে, তিনি কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন কিনা? তাদের তরফ থেকে কিন্তু তাদের অফিসাররা পরিষ্কার জানিয়ে দেন তার এই শারীরিক অক্ষমতার জন্য তাকে কোনো রকম ড্রাইভিং লাইসেন্স তারা দিতে পারবে না। কিন্তু যদি এমন কোনো উদাহরণ তাদেরকে দেখাতে পারেন যে, এমন শারীরিক অক্ষমতা নিয়েও আগে অনেকে গাড়ি চালিয়েছে তবে তারা তাকে লাইসেন্স দেবে বলে জানায়। এরপরেও তিনি ভেঙে পড়েননি। তিনি ক্রমশ খুঁজতে শুরু করলেন এমন কে আছে যে এ রকম শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে লাইসেন্স যোগাড় করতে পেরেছেন, অবশেষে তিনি সফল হন। তিনি খুঁজে পান বিক্রম অগ্নিহোত্রীকে, যিনি প্রথম মানুষ হাত ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছেন।

দু’বছর আগে জিলু মল প্রথম তার নিজের গাড়ি কেনেন। এবং তার স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়ে যান। তিনি একটি গ্রাফিক ডিজাইনার কোম্পানিতে চাকরিও করেন। তবে গাড়িটি কেনার আগে তার তাকে তার মা-বাবাকে অনেক ভাবে বোঝাতে হয়েছিল। তার বাবা একজন চাষী মা একজন গৃহবধূ। ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ২০১৮ সালে তিনি হাইকোর্টে পর্যন্ত যান। কিন্তু তারপরেও তিনি কিছুতেই লাইসেন্সটি পারছিলেন না। সব জায়গা থেকেই তাকে শারীরিক অক্ষমতার জন্য লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছিল না, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এমন একটি দিন আসে, যেদিন তার স্বপ্ন সেদিন বাস্তব হয়।

আরও পড়ুন : ‘ডরেঙ্গে নেহি, লড়েঙ্গে’, মোদীকে বললেন মমতা

এই কন্যাকে দেখে সত্যি বলতে ইচ্ছা করে ‘আমরা নারী, আমরা সব পারি’। এমনিতেই মেয়েরা দশোভূজা। তারা ইচ্ছা করলে সবকিছু করতে পারে। কিন্তু দুই হাত না থাকা সত্বেও কিভাবে তিনি গাড়ি চালানোর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করলেন এইটাই বিস্ময়ের এবং একই সাথে আনন্দের। এই সমস্ত কন্যারাই তো আমাদের দেশের মানুষ এর কাছে আদর্শ মানুষ হয়ে উঠতে পারে।

Recent Posts