ন্যাশেনাল গ্র্যান্ড প্যারেন্টস ডে : আয়-আয় দাদু গলাগলি ধরি কেঁদে যদি হয় সুখ!

Advertisement

Advertisement

আয়-আয় দাদু গলাগলি ধরি কেঁদে যদি হয় সুখ

Advertisement

কবি জসীমউদ্দীনের লেখা কবর কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে দাদু আর নাতির অনবদ্য সংলাপ। দিদা মারা যেতে মনের দিক থেকে ভগ্নপ্রায় দাদু স্মৃতিরোমন্থন করছেন তার এক চিলতে নাতির সঙ্গে। ঠাকুমা বলতেন ‘দাদু খুব বেশি দিন তো আর বাঁচবো না তাই এখন সাধ্যমত আলগা দিয়ে থাকি’ কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা এটি।

Advertisement

তিনি বলেছেন যেখানে ঠাকুমা তার নাতিকে দাদু বলে সম্বোধন করেছেন। বয়স বেড়ে গেলে ঠাকুমাদের একমাত্র ভরসা দাদুভাই কিংবা দিদিভাই অর্থাৎ নাতি-নাতনি। বয়সের ভারে কুচকে যাওয়া হাত দুটোর উপরে থাকে ছোট্ট ছোট্ট দুটো হাত। জীবনের শেষ আর জীবনের শুরুর মধ্যে অপূর্ব এক মেলবন্ধন তৈরি হয়। হয়তো তখন ঠাকুরমা মনে মনে বলে ওঠেন  ‘এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি’।

Advertisement

নাতি-নাতনি হওয়ার আগে থেকেই ঠাকুমারা একটার পর একটা শাড়ী কেটে পরম স্নেহে করতে থাকেন কাঁথা। তারমধ্যেই লেগে থাকে ঠাকুমা দিদার গায়ের গন্ধ যার সবরকম পারফিউম কে হার মানিয়ে দেয়। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে এই ঠাকুমা দিদার হাত ধরেই চলতে থাকে এক পা এক পা করে হাটা। দাদুর সঙ্গে প্রথম বাড়ির বাইরে বেরোনো। ঠাকুমার পাশে রান্নাঘরে বসে একটা দুটো আলু-বেগুন গুনতে গুনতে প্রথম অক্ষর জ্ঞান হওয়া। আর মাঝেমধ্যে পছন্দের গরম গরম খাবারে কামড় দেওয়া।

রাত হলেই ঠাকুরমার ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ে একটার পর একটা রাজপুত্র রাজকন্যা দের গল্প। লোডশেডিং রাতে ছাদে বসে মাদুর পেতে আকাশের তারা গুনতে গুনতে ঠাকুমার কোলের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া, আর পাখার বাতাস করতে করতে গায়ে লেগে গেলে ঠাকুমার গলায় মাঝে মাঝেই বলা সাট সাট।

মা বাবার কাছে বকা খেয়ে একমাত্র আশ্রয় ঠাকুমার কোল,কিংবা অনেকদিন ধরে মা-বাবার কাছে চেয়ে যা পাওয়া যায়না তাই একমাত্র পাওয়া যেত দাদুর কাছে গেলে দাদু যখন বিকেলবেলা নিয়ে বের হতেন তখন যত আবদার।

এইভাবে আস্তে আস্তে বড় হয়ে ওঠা। আজকাল পরিবার অনেক ছোট হয়েছে। অনেকেই দাদু ঠাকুমার সাহচর্য পায়না। তাদের কাছে দাদু ঠাকুমার লাঠি, চশমা বোতাম, ঘড়ি এসব স্মৃতি হয়েই থেকে যায়।

কখনোবা তারা অপেক্ষা করেন দেশ-বিদেশের নাতি কখন একবার তাদের কোলে ছুটে এসে পড়বে। আর জড়িয়ে ধরে বলবে ‘কে বলে ঠাকুমা তোমার বয়স পেরিয়ে গেছে আশি’।

Written by – শ্রেয়া চ্যাটার্জী