‘অ্যায় মেরে ওয়াতান কে লোগো’ গানটি গাইতে রাজি হননি লতা, যখন তিনি গাইলেন, নেহরুর চোখে জল

লতা মঙ্গেশকর প্রথমে এই গানটি গাইতে চাননি কারণ এই গানের লেখকের সঙ্গে তার বনিবনা খুব একটা ভালো ছিলনা

Advertisement

Advertisement

সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর গত রবিবার পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নিয়েছেন। করোণা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে প্রায় এক মাস ধরে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেই হাসপাতালেই নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়েছিলেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। চিকিৎসকরা বলেছিলেন তাঁর অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। কিন্তু অবশেষে রবিবার জীবনের যুদ্ধে হেরে যান তিনি।

Advertisement

রবিবার ৯২ বছর বয়সে এই প্রবীণ গায়িকা আমাদের ছেড়ে চলে যান। প্রায় ৩০ হাজারের বেশি গান গেয়েছেন তিনি নিজের সঙ্গীত জীবনে। প্রিয় গায়িকাদের মধ্যে লতা মঙ্গেশকর ছিলেন একজন। তার প্রত্যেকটি গান অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল সকলের মাঝে। তার প্রতিটি গানের মধ্যে একটি গান ছিল ‘এই মেরে ওয়তন কে লোগো’। সবার মনে এই গানটি বিপ্লবীদের কথা মনে করাত। দেশাত্মবোধ জাগানোর ক্ষেত্রে এই গানটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। দেশাত্মবোধক প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে এই গানটি বাজানো হবেই।

Advertisement

কবি প্রদীপ রচিত এই গানটি তিনি গেয়েছিলেন বছর কয়েক আগে। মুম্বাইয়ের মাহিম বিচে তিনি যখন হাঁটছিলেন, তখন তিনি এই গানের লাইনগুলো মনে করেন। তার কাছে পেন এবং কাগজ না থাকায় তিনি একজন পথচারী অজানা ব্যক্তির কাছে কলম চেয়ে নিয়ে সিগারেটের অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের উপরে এই গানটি লিখেছিলেন। লতা মঙ্গেশকারকে দিয়ে তিনি এই গানটি গাওয়াতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু প্রথমে লতাজি এই গানটি গাইতে অস্বীকার করেন। কারণ, কবি প্রদীপের সঙ্গে তার কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল।

Advertisement

তবে লতা মঙ্গেশকর এর পরিবর্তে তার বোন আশা ভোঁসলেকে গাইতে বলা হয় এই গান। কিন্তু কবি প্রদীপ সবসময় লতাকে দিয়ে এই গানটি গাওয়াতে চেয়ে ছিলেন। তাই যে কোনো মতেই কবি প্রদীপ লতা মঙ্গেশকরকে রাজি করিয়ে তাকে বিয়ে এই গানটি গাওয়ান। যখন লতাজি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর সামনে দাঁড়িয়ে এই গানটি গেয়েছিলেন তখন নেহেরুর চোখে জল চলে এসেছিল। এমনকি জওহরলাল নেহেরু নিজে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে ছিলেন।

প্রথমে লতা মঙ্গেশকর ভেবেছিলেন তিনি হয়তো কোন ভুল করেছেন। কিন্তু পরে যখন তিনি দেখা করলেন, তখন পন্ডিতজির চোখে ছিল জল। প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেছিলেন, ‘লতা তুমি আমাকে কাঁদিয়েছো। এই গানটি শুনে দেশের যে কোন মানুষ অনুপ্রাণিত হবে। এই গানটি শুনে সকলের মনেই নিজের দেশের প্রতি একটা ভালবাসা তৈরি হবে। যে মানুষ এই গান শুনে দেশের প্রতি অনুপ্রাণিত হতে পারবে না, আমার মনে হয় সে কোন ভারতীয় নয়।’ সেই থেকে শুরু, তারপর থেকে এই গান আজকেও একই রকমভাবে জনপ্রিয়।

Recent Posts