সনাতনের বিজেপি যোগ স্পষ্ট, কলকাতা পুলিশের হাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি

শুধু বিজেপি নয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে জাল সিবিআই আইনজীবী সনাতন রায়চৌধুরীর, দাবি পুলিশের

Advertisement

Advertisement

গড়িয়াহাট কান্ডে আটক সনাতন রায় চৌধুরীর সঙ্গে বিজেপি যোগের প্রমাণ পেল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে এদিন সনাতন রায়চৌধুরীর বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এর কার্যকর্তাদের সার্টিফিকেট এবং একাধিক নথি। এর মাধ্যমে সনাতন রায় চৌধুরীর সঙ্গে বিজেপি যোগের সরাসরি প্রমাণ পেয়ে গেল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। শুধু বিজেপি নয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে জাল সিবিআই আইনজীবী সনাতন রায়চৌধুরীর, দাবি পুলিশের।

Advertisement

দক্ষিণবঙ্গ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট চন্দ্র নাথ দাসের লেখা একটি চিঠি বা নথি পাওয়া গেছে যেখান থেকে প্রমাণ মিলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সনাতন রায়চৌধুরী। ২০১৭ সালের ২৫ শে জুন তারিখের ওই সার্টিফিকেট বাজেয়াপ্ত করে ফেলেছে ইতিমধ্যেই পুলিশ। অন্যদিকে আবার, সনাতন রায়চৌধুরিকে জেরা করে একাধিক প্রমাণের নথি মিলেছে যার থেকে বোঝা যাচ্ছে সনাতন রায়চৌধুরী সরাসরি বিজেপির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

Advertisement

তার বাড়ি থেকে মিলেছে বিজেপির প্রাক্তন ভাইস-প্রেসিডেন্ট সিলেকশন কমিটি মেম্বার কৃষ্ণ ভট্টাচার্যের লেখা একটি চিঠি যেখানে সনাতন এর সঙ্গে তা সরাসরি যোগের প্রমাণ মিলেছে। এছাড়াও সনাতন একটি আইন নিয়ে বই লিখেছিলেন এবং তার উল্লেখ রয়েছে ওই বাজেয়াপ্ত চিঠিতে। ২০১৮ সালের ১৭জুলাই লেখা ওই চিঠি বা সার্টিফিকেট এর একটি কপি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তার পাশাপাশি, সনাতন রায় চৌধুরীর সঙ্গে বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষের যোগাযোগ রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। যদিও রুদ্রনীল ঘোষ জানাচ্ছেন, “পাঁচ বছর আগে একজন পরিচিত এর মাধ্যমে আইনজীবী হিসেবে পরিচিত হয়েছিল এবং তখন তিনি একটি ছবি তুলেছিলেন। এই সমস্ত মানুষের মত যারা ভুয়ো সরকারি অফিসার সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাদের অত্যন্ত কঠোর শাস্তির প্রয়োজন।”

Advertisement

তবে আগে শুধু মিলেছিল বিজেপি নেতার সঙ্গে ছবি, আর এবারে সরাসরি দেখা গেল বিজেপি এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গেসরাসরি যোগাযোগের প্রমাণ। এমনকি জানা যাচ্ছে, সনাতন নাকি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলন এবং ইন্ডো জাপান বিজনেস সামিট অংশগ্রহণ করেছিলেন একজন ভারতীয় প্রতিনিধি হিসেবে। কিন্তু যদি তার সঙ্গে যোগাযোগ না থাকে বিজেপির তাহলে একজন ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে ওই অনুষ্ঠানে কি করে পৌঁছে গেল সনাতন? যতটা জানা যায়, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি এবং প্রটোকল প্রয়োজন হয় এই সমস্ত অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য।

একজন এত বড় জাল আধিকারিক হবার পরেও কিভাবে এত সহজে আইনের ফাঁক বেয়ে গলে গেলেন সনাতন রায়চৌধুরী, সেটাই এখন ভাবাচ্ছে পুলিশকে। তার পাশাপাশি, আরো সন্দেহজনক বিষয়টি হলো সনাতন রায়চৌধুরীর টাকার সোর্স। লন্ডন থেকে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অন্যান্য দেশে যাওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণ টাকা প্রয়োজন। এত টাকা সনাতন রায় চৌধুরীর কাছ থেকে আসছিল কোথা থেকে? তার কি কোন রকম অজানা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে? বর্তমানে সনাতন এর সমস্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। ব্যাংক কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে গড়িয়াহাট থানা। অর্থাৎ স্পষ্ট, সনাতন রায়চৌধুরী কাণ্ড নিয়ে রীতিমতো তেতে উঠেছে বঙ্গ রাজনীতি।