হেরিটেজ তকমা পেল ঐতিহ্যবাহী দেব সাহিত্য কুটিরের ‘চমৎকার বাড়িটি’

Advertisement

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি : ১৮৬০ সালের কোন এক নক্ষত্র খচিত সন্ধ্যায় খড়ের চালায় প্রদীপ জ্বালিয়ে যে সংস্থার পথ চলা শুরু, আজ সেই সংস্থা মহীরুহ হয়ে আজ “হেরিটেজ”-এর তকমা পেল কোলকাতার বহু ইতিহাসের সাক্ষী “দেব সাহিত্য কুটির”-এর বিখ্যাত বাড়িটি। ২০২০ সালের প্রথমেই কলকাতা এই ঐতিহ্যবাহী ঘটনার প্রত‍্যক্ষ সাক্ষী হয়ে রইল। ঝামাপুকুর লেনের “দেব সাহিত্য কুটির” তকমা পেল হেরিটেজের। প্রথমে এটি ছিল একটি চালা ঘরের মধ্যে। এই সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বরোদা প্রসাদ মজুমদার। তার নামানুসারে দেব সাহিত্য কুটিরের আগে নাম ছিল বিপিএম প্রেস।

Advertisement

এর কিছু দূরে সুখীয়া স্ট্রিটে অবস্থিত ছিল সংস্কৃত প্রেসের ছাপাখানা, যার মালিক ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর চন্দ্র বন্দোপাধ্যায়। এই সংস্কৃত প্রেস থেকে ছাপা হতো ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সমস্ত বই তবে বিধবা বিবাহ আন্দোলনে তিনি যোগদান করায় প্রায় ১৫ জন বিধবাকে পুনরায় বিবাহ দেওয়ার জন্য এত বিপুল পরিমান খরচ হয়েছিল যে তিনি তার সখের সংস্কৃত প্রেস বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তারপর ১৮৯০ সাল থেকে বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় ছাপা শুরু হয় এই বিপিএম প্রেসে। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে বিপি এম প্রেসের নাম বদলে রাখা হয় দেব সাহিত্য কুটির। সেই বছর থেকেই ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের সমস্ত বই ছাপার অধিকার পায় এই ঐতিহ্যবাহী সংস্থাটি।

Advertisement

উত্তর কলকাতায় এমন একটি সুন্দর জায়গায় অবস্থিত এই ঐতিহ্যবাহী বাড়িটির উপর শ‍্যেন দৃষ্টি পড়েছিল প্রোমোটারদের, তারা চেয়েছিল এই বাড়িটি ভেঙে সেখানে একটি বহুতল নির্মাণ করবেন। কিন্তু সত্যের জয় হয় সর্বদা, একথা মানতেই হবে। রাজ্য হেরিটেজ সংস্থা এ বিষয়ে তড়িঘড়ি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেন। যার ফলস্বরূপ এ যাত্রায় টিকে যায় ঐতিহ্যবাহী এই বাড়িটি। শুধুমাত্র বর্ণপরিচয়, কথামালা, উপক্রমণিকা, বোধোদয় নয়, শুকতারা, নবকল্লোল, হাদাভোদা, বাটুল দি গ্রেট সবই হয়েছে এই ছাপাখানার হাত ধরে। সেই ঐতিহ্য কে সম্মান জানাতে রাজ‍্য হেরিটেজ সংস্থা “দেব সাহিত্য কুটির”-কে “হেরিটেজ” ঘোষণা করে ২০২০ এর ১১ ই ফেব্রুয়ারি, যে দিনটি কলকাতার ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বল করবে একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে।

Advertisement

Recent Posts