বিশ্বের ১০ সুন্দরী মহিলার তালিকায় আছে মহারাণী গায়েত্রী দেবীর নাম

Advertisement

Advertisement

১৯১৯ সালে ২৩ শে মে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মহারাণী গায়েত্রী দেবী। ইনি জন্মসূত্রে কোচবিহারের রাজকন্যা ছিলেন গায়ত্রী দেবী। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যরা ভালোবেসে আয়েশা নামে ডাকতেন। প্রথমে শান্তিনিকেতন ও পরে সুইৎজারল্যান্ডে পড়াশোনা করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি নানান খেলাধূলোয় পারদর্শী ছিলেন। ঊনিশ শতকের মেয়েদের থেকে একটু অন্যরকম ছিলেন। খুব ভালো পোলো খেলতেন। তাঁর আরো দুটি শখ ছিল গাড়ি ও শিকার করা। মাত্র ১২ বছর বয়সে কোনো ভয় না পেয়ে তিনি চিতা বাঘ শিকার করেছেন। এছাড়া গায়িত্রী দেবীর সংগ্রহে ছিল নানা ধরনের দামি বিদেশি গাড়ির সমাহার। যার মধ্যে অন্যতম ছিল মার্সেডিস বেনজ ডাব্লু ১২৬ এবং ৫০০ সেল এছাড়া ছিল বেশ কয়েকটি রোলস রয়সেল, ছিল ব্যক্তিগত এয়ারক্রাফট।

Advertisement

১৯৪০ সালে ৯ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে তাঁর সঙ্গে জয়পুরের মহারাজা দ্বিতীয় সাওয়াই মান সিং বাহাদুরের বিয়ে করেন। শোনা গিয়েছিল প্রথম দেখাতেই রাজকন্যা গায়েত্রী দেবীকে মন দিয়ে দিয়েছিলেম মান সিংহ। ঊনিশ শতকে উচ্চ বংশের মহিলাদের বিয়ের রাজপ্রাসাদে পর্দার আড়ালে নিজেকে বন্দী রাখাই ছিল সমাজের নীতি। তবে গায়েত্রী দেবী নিজের জীবনকে কখনোই পর্দার আড়ালে বন্দী থাকেননি। বরং তিনি সেই সময় ঘোড়ায় চড়ে পোলো খেলা থেকে গাড়ি চালাতেন।

Advertisement

ঊনিশ শতকে একটা ট্রেন্ড ছিল সেই সময়ে মহিলারা বেশ জাঁকজমকপূর্ণ সাজসজ্জা করার। ১৯৬০ সালের মহিলাদের সাজসজ্জার ফ্যাশনের উত্তরণ ঘটিয়েছিলেন গায়েত্রী দেবী।উত্তর ভারতের মহিলারা নানান উজ্জ্বল রঙিন শাড়ি, সেই শাড়িতে ভারি সুতো বা পাথরের কাজ, ভারী সোনার অলঙ্কারই ছিল মহিলাদের প্রিয়। এক্ষেত্রেও গায়েত্রী দেবী এনেছিলেন নতুনত্ব। তিনি এসব সাজ নয় হাল্কা প্যাস্টেল শেডের শিফন শাড়ি সাথে গলায় মুক্তোর হার আর ওভারসাইজড সানগ্লাসেসকে পড়েই ফটোশুট করতেন। ইতিহাস লেখা হলে তাঁর নাম অবশ্যই উল্লেখ করা হয়। আজ ও অনেকে গায়েত্রী দেবীর সাজকে অনুকরণ করেন।

Advertisement

মহারাণী গায়েত্রী দেবীর রুপে মুগ্ধ ছিলেন বহু জন। তাঁর অপরূপ সৌন্দর্য্য ঘায়েল করেছিল পুরো বিশ্বকে। ১৯৬০ সালে ব্রিটেনের জনপ্রিয় ভোগ ম্যাগাজিনের বিশ্বের সুন্দরীতম ১০ মহিলার তালিকায় গায়েত্রী দেবীর নাম উল্লেখ করা হয়। যা ভারতের কাছে বেশ গর্বের বিষয়। বলিউডের সুপারস্টার বিগ বিও মুগ্ধ ছিলেন গায়িত্রী দেবীর রূপে। তিনি নিজের ব্লগে অমিতাভ স্বীকার করেছেন এ কথা। তিনি বলেছিলেন, গায়েত্রী দেবী যখন সিল্কের পোশাক পরে পোলো গ্রাউন্ডে আসতেন। তাঁকে দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে যেতেন। তিনি খেলা দেখতে নয় মহারাণীকে দেখতে যেতেন। জয়পুরে তিনি যখন শ্যুটিং এ গিয়েছিলেন সেই সময়ে অমিতাভ বচ্চনকে নৈশভোজের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রাজমাতা। 

মহারাণী গায়েত্রি দেবীর রুপের প্রশংসা করেছিলেন রোম্যান্স কিং শাহরুখ খান। উল্লেখ্য, মহারাণী গায়েত্রী দেবী নারীদের শিক্ষার প্রসারের জন্য নানান কাজ করেছেন। তিনি মনে করতেন, নারীদের উন্নতিতে এগিয়ে আসতে হবে নারীদেরই। আর মেয়েদের পড়াশোনার জন্য ১৯৪৩ সালে জয়পুরে স্থাপন করেছিলেন মহারাণী গায়ত্রী দেবী গার্লস পাবলিক স্কুল। ২০০৯ সালে ২৯ শে জুলাই মহারাণী গায়েত্রী দেবী পরলোকগমণ করেন।