যে কয়টি ফসল ভারতে সবথেকে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়ে থাকে তার মধ্যে অন্যতম হলো সেলারি বা যাকে সহজ ভাষায় বলে জোয়ান। বিভিন্ন খাবারে মসলা হিসেবে এই জিনিসটির ব্যবহার হয় এবং এই মসলার বেশ কিছু ঔষধি গুন রয়েছে যার কারণে জোয়ান বেশ জনপ্রিয় ভারতে। প্রত্যেকদিন ভারতীয় খাবারে এই জিনিসটির ব্যবহার হয়ে থাকে। কলেরা থেকে শুরু করে বদহজমের মতো বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এই জোয়ান। গলা ব্যথা কানের ব্যথা চর্মরোগ হাঁপানি ইত্যাদি রোগের ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে এই জোয়ান গাছ। যদি আপনি এই জোয়ান চাষ করেন তাহলে আপনি মোটা অংকের টাকা আয় করতে পারেন। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে প্রাচীনকাল থেকেই এই জোয়ানের আয়ুর্বেদে একটা আলাদা স্থান রয়েছে এবং প্রাচীনকাল থেকেই ঔষধে ব্যবহার করা হতো এই জোয়ান।
সেলারি আগে আমেরিকা মিশর ইরান আফগানিস্তানে চাষ করা হলেও বর্তমানে ভারতে বেশ জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে সেলারি। মহারাষ্ট্র পশ্চিমবঙ্গ রাজস্থান উত্তরপ্রদেশ তামিলনাড়ু বিহার অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশে মূলত সেলারি চাষ হয়ে থাকে। রাজস্থানের চিতোরগড় এবং ঝালুড়া জেলায় প্রচুর পরিমাণে সেলারি চাষ হয়ে থাকে। এছাড়াও ভিলোয়ারা, বুন্দি এবং বাসোয়াড়া জেলাকে সেলারি উৎপাদনের একটি শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে বিচার করা হয়।
সেলারি চাষ করার জন্য ভালো নিষ্কাশন সহ উর্বর মাটি প্রয়োজন হয়। এই জিনিসটি অবশ্যই দোআঁশ মাটিতে চাষ করা উচিত। জমির পিএইচ মান ৬.৫ থেকে ৮ এর মধ্যে হওয়া উচিত। রবি মৌসুমে অর্থাৎ শীতের মৌসুমে জোয়ান চাষ করা উচিত। জোয়ান গাছের জন্য অতিরিক্ত তাপ খুব একটা ভালো নয় এবং এই গাছ চাষের জন্য সেচের পরিমাণ খুব কম। তাই রবি মৌসুমে এই গাছ সাধারণত চাষ করা হয়ে থাকে। বপনের সঠিক সময় হল আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এবং ৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রায় এই গাছ খুব ভালোভাবে তৈরি হতে পারে।
সেলারির জাত অনুসারে প্রতি একরে গড়ে ১০ কুইন্টাল পর্যন্ত আপনি উৎপাদন পেয়ে যেতে পারবেন। এই গাছের বাজার মূল্য ১২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত এই মুহূর্তে। এর সাহায্যে আপনি এক একর জমিতে সেলারি ফলন করে আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত রোজগার করতে পারেন।