একের পর এক প্লাস্টিকে মোড়া মৃতদেহের লাইন ধাপার মর্গে, করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ কলকাতায়

সরকারি হিসেব অনুযায়ী বাংলায় ৫৮ জন মৃত হলেও বাস্তব চিত্র অন্য কথা বলছে

Advertisement

Advertisement

গত বছরের মার্চ মাস থেকে পৃথিবীর বুকে করোনা ভাইরাসের দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ববাসী। চলতি বছরের শুরুতে করোনার প্রভাব কিছুটা কমলেও এপ্রিল মাসের শুরু থেকে ভারত ভূখণ্ডে এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ দেশবাসীর প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তুলেছে। আসলে কিছুদিন আগে এই করোনা তার নতুন মিউট্যান্ট স্ট্রেন নিয়ে ভারতে ছড়িয়ে পড়ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় ভারতে করোনা সংক্রমণ ৩ লাখের গণ্ডি অতিক্রম করেছে। গোটা দেশের পাশাপাশি বেহাল অবস্থা বাংলাতেও। পাল্লা দিয়ে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা এবং মৃত্যুহার। গত ২৪ ঘন্টায় সরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি এবং মৃতের সংখ্যা ৫৮ হলেও বাস্তব চিত্র একটু অন্যরকম ছিল।

Advertisement

গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে রাজ্য সরকারের ধাপা মাঠের চুল্লিতে দৃশ্য ছিল সম্পূর্ণ অন্যরকম। বিকেলের ৩ টে থেকে ৪ টের মধ্যে সারে সারে করোনায় মৃতের দেহ প্লাস্টিকের থলিতে বন্ধ করে আনা হয়েছে। আধঘণ্টার মধ্যে কম করে হলেও ২০ টি মৃতদেহ আসে ধাপার মাঠে। প্রত্যেকটি মৃতদেহ কালো প্লাস্টিকে মোড়া। কোন কোন মৃতদের সাথে এসেছে দু একজন আত্মীয়। আবার কোন মৃতদেহ নিয়ে এসেছে হাসপাতাল কর্মীরাই। একের পর এক হাসপাতাল থেকে গাড়ি করে শুধু প্লাস্টিকে মোড়া মৃতদেহ নিয়ে মর্গের একটি ঘরে ফেলে রাখা হয়েছে। তারপর একের পর এক দেহ রাখা হচ্ছে অস্থায়ী মর্গে। সেখান থেকে সরাসরি ইলেকট্রিক চুল্লিতে। বিরাম নেই চুল্লীর। অনর্গল বেরোচ্ছে মানুষ পোড়া ধোঁয়া।

Advertisement

আসলে কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় মৃতদের দেহ আনা হয় এই ধাপা মর্গে। আসলে সরকারি হিসাবে একদিনে মৃত ৫৮ হলেও বাস্তব চিত্রটা একটু অন্যরকম। কোন হাসপাতালে রোগী ভর্তি হলে তার করোনা রিপোর্ট হচ্ছে। তবে করোনা রিপোর্ট আসার আগে তারা মারা গেলে তাদের সরাসরি প্লাস্টিকে মুড়ে চুল্লিতে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সরকারি হিসেবে তাকে করোনা রোগী বলে গণনা করা হচ্ছে না। ধাপার ওই মর্গে এক ঘণ্টার মধ্যে ২০ টি মৃতদেহ এলে আপনি কল্পনা করে নিতে পারেন একদিনে কত মৃত্যু হচ্ছে এই গোটা রাজ্যে। রীতিমতো করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে বাংলাতে।

Advertisement