“প্যাঁচা কয় প্যাঁচানি
খাসা তোর চেঁচানি !
তোর গানে পেঁচি রে
সব ভুলে গেছি রে।”
পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী যেমন লক্ষ্মী দেবীর বাহন পেঁচা সেরকমই গ্রিক কাহিনী অনুযায়ী পেঁচা হল এথেনার প্রতীক। তিনি লক্ষ্মী দেবীর মতো ধন-সম্পদের দেবী নন তিনি স্বরস্বতীর মতো জ্ঞানের দেবী ।এথেনার বাহন হওয়ার পিছনে যুক্তি ছিল পেচা অন্ধকারেও দেখতে পাই সেটা তার দিব্যচক্ষু সেই অন্ধকারভেদী দৃষ্টিকেই শিক্ষার আলোকে সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে যা অন্ধকার আলোর দিশা দেখায়। এছাড়াও প্রাচীন মিশরের লিপিতে পেচার ব্যবহার দেখা যায়। আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ানরা পেঁচাকে জলের দানবের হাত থেকে বাঁচানোর রক্ষাকর্তা বলে মনে করতেন।
“এসো মা লক্ষী বোসো ঘরে
আমার এ ঘর রাখো আলো করে।”
আবার বলা হয় ধান বাঙালির কাছে লক্ষী কিন্তু এই ধান ইঁদুরে খেয়ে ফেলে ধানের গোলায় ইঁদুর ঢুকে নষ্ট করে খাদ্যশস্য তাই ধানের শত্রু ইঁদুর। আর ইঁদুরকে খায় পেঁচা অর্থাৎ ধানকে রক্ষা করে ইঁদুরের হাত থেকে। তাই লক্ষ্মী দেবীর বাহন এই রাত জাগা পাখি।
তবে এই প্যাঁচার কথা বাংলা সাহিত্যেও উঠে এসেছে জীবনানন্দের কল্পনা এসেছে একটি কবিতা –
তবু রোজ রাতে আমি চেয়ে দেখি আহা
থুরথুরে অন্ধ পেচা অশ্বত্থের ডালে এসে বসে
চোখ পালটায়ে কয়, বুড়ি চাঁদ গেছে বুঝি বেনো জলে ভেসে ?
চমৎকার ধরা যাক দু-একটা ইঁদুর এবার….
তবে লক্ষ্মীদেবীর বাহন হিসেবে পন্ডিতদের যে মতটি সর্বাধিক গ্রহনযোগ্য তা হলো যিনি লক্ষ্মী গুন অর্থাৎ সত্য প্রেম পবিত্রতা তপস্যা তিতিক্ষা পেতে চান তাকে পেচক ধর্ম পালন করতে হবে অর্থাৎ জাগতিক বস্তু থেকে একটু দূরে থেকে নির্জনে যোগৈশ্বর্য ও সাধন সম্পদ রক্ষা করতে হয় পেঁচা যদি দিনের বেলায় বের হয় অন্যান্য পাখিরা তাকে তাড়া করে অতি গোপনে পেচা বাস করে। সেরকমই পূর্ণতা লাভ না করা পর্যন্ত জাগতিক বিষয় ব্যক্তি দৈব সম্পদ নষ্ট করে।এসব কারনে পেচাকে লক্ষীর বাহন হিসেবে রেখে দিয়েছেন।
Written by – দেবস্মিতা ধর