Categories: দেশনিউজ

বিশাখাপত্তনম ঘটনা উসকে দিল ৮০ দশকের ভোপালের দুর্ঘটনার স্মৃতি

Advertisement

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – ১৯৮৪ সালের ডিসেম্বরের ২ তারিখ ভোরে ভোপালে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। একটি ট্যাংকের রাখা এম.আই.সি অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়, বাতাসের চেয়ে ভারী গ্যাস আকারে মাটি ঘেঁষে বের হতে হতে আশেপাশের রাস্তাঘাটে ছড়িয়ে পড়ে। বিশাখাপত্তনমে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা উস্কে দেয় ভোপালে স্মৃতিকে। শ্বাসকষ্টের জন্য আক্রান্ত হন প্রায় ৬০,০০০ মানুষ। এই রকম ভয়ংকর পরিস্থিতিতে একজন স্টেশনমাস্টার তার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন উদ্ধারের কাজে। স্টেশন মাস্টার গুলাম দস্তগীর পরের দিন অর্থাৎ ৩ তারিখ তার অফিসে বসে তার কাজগুলি শেষ করছিলেন। অফিস শেষ হয় রাত একটা নাগাদ।

Advertisement

যখন গোরক্ষপুর মুম্বাই এক্সপ্রেস আসছিল,তখন স্টেশনমাস্টার বুঝতে পারলেন তার চোখ জ্বালা করছে এবং গলার কাছেও জ্বালা করছে, কাশি শুরু হয়ে গিয়েছে। তখনও তিনি জানতেন না যে, তার ২৩ জন সহকর্মী, এমনকি তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মী হরিস ধুর্বে ইতিমধ্যে মারা গেছেন। সেই মুহূর্তে তিনি আশেপাশের সমস্ত স্টেশন গুলিতে তিনি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানাতে থাকেন যেমন বিদিশা, ইটারসী প্রভৃতি। গোরক্ষপুর লোকাল যখন সবেমাত্র এসে থেমেছে, তখনই তিনি জানান, এই মুহূর্তে এই ট্রেনটি ছেড়ে দিতে হবে। কারো সাথে কোন রকম আলোচনা না করেই তিনি এমন অসাধারণ সিদ্ধান্তটি নেন। কারণ সেই সময় আলোচনা করার সময় ছিল না। কিন্তু দস্তগীরের কথা শেষ পর্যন্ত শোনা হয়নি। পুরো স্টেশন ভরে গিয়েছিল যাত্রীতে। যার মধ্যে কেউ শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, কেউ বা বমি করছেন। দস্তগীর শেষ পর্যন্ত তার কাজে অটল ছিলেন। এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে গিয়ে তিনি রোগীর সেবা শুশ্রুষা করছিলেন।

Advertisement

রেলের হাসপাতালে হাসপাতালকে তিনি এই পরিস্থিতির কথা জানালেন। সেখান থেকে ডাক্তার আসেন এবং চারটে অ্যাম্বুলেন্স সাথে সাথে স্টেশনে চলে আসে এই ঘটনাটি শীতকালে হওয়ার জন্য বিষাক্ত গ্যাস অনেক নিচ পর্যন্ত জমাট বেঁধেছিল।গুলামের এই অসাধারণ সাহসিকতার জন্য বেঁচে গিয়েছিল হাজার হাজার প্রাণ। সবচেয়ে দুঃখের খবর সেই রাতেই সে তার এক পুত্রকে হারিয়েছিলেন, আর অন্য এক পুত্র আজীবন চর্ম রোগে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। গুলাম দস্তগীর আর বেঁচে নেই, ২০০৩ সালে তিনি যখন মারা গিয়েছিলেন, তার ডেট সার্টিফিকেটে বিষাক্ত গ্যাসের জন্য তার গলায় জ্বালা যন্ত্রণার কথা উল্লেখ ছিল। পরে তার স্মরণে একটি স্মৃতিসৌধ বানানো হয়েছে এক নম্বর প্লাটফর্মে। আজ বিশাখাপত্তনমের ঘটনার জন্য ভোপালের স্মৃতি উঠে আসার পাশাপাশি উঠে এসেছে অসাধারণ মানুষটির নামও।

Advertisement

Recent Posts