নিউজরাজ্য

স্নাতকে ফার্স্ট ক্লাস হয়েও আজ এনআরএসের ডোমপদের চাকরিটা চাইছেন স্বর্ণালী, জানালেন সংগ্রামের কথা

স্বর্ণালির কথায়, তার একটি পার্মানেন্ট চাকরি অত্যন্ত প্রয়োজন, তাই ছোট বড় যেকোনো চাকরি তিনি করতে পারেন

Advertisement
Advertisement

তিনি স্নাতকে ইতিহাসে ফার্স্ট ক্লাস। শিক্ষাগত যোগ্যতায় অনেকের থেকেই অনেকটা উপরে। কিন্তু তবুও তিনি আজকে আবেদন জানিয়েছেন এনআরএস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডোম পদের জন্য। তার নাম স্বর্ণালী সামন্ত এবং তিনি থাকেন হাওড়া শিবপুরে। যে পরীক্ষায় বসতে হলে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে অষ্টম শ্রেণী পাস, সেই পরীক্ষার জন্য এবারে আবেদন জানিয়েছেন একজন ইতিহাসে গোল্ড মেডেলিস্ট ছাত্রী এবং এক সন্তানের মা। অভূতপূর্ব হলেও, এই ঘটনাটি আমাদের বাংলার বেকারত্বের আসল চিত্রটাকে প্রস্ফুটিত করে।

Advertisement
Advertisement

যদিও, এই পদের জন্য এপ্লাই করেও স্বর্ণালী জানাচ্ছেন, ” কাজের আবার ছোট-বড় কি? ” জানা যাচ্ছে, খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল স্বর্ণালী সামন্তের। খুব অল্প বয়সে বিয়ে করে স্বামীর সাথে সংসার পাতলেন স্বর্ণালী। তার স্বামী একজন উবের বাইক চালক। কিন্তু সংসার শুরু করলেও পড়াশোনা যেন তার রক্তে ছিল। তাই পড়াশুনা তিনি চালিয়ে গেলেন।

Advertisement

স্নাতকে ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করলেন। ভালো রেজাল্ট করে ফার্স্ট ক্লাস পেলেন। তারপর বেশ কিছু সরকারি চাকরির চেষ্টা করলেন কিন্তু সেগুলো সবকিছু বৃথা চেষ্টা। তারপরে ডালহৌসির একটি বেসরকারি সংস্থায় রিসেপসনিস্টের কাজে যোগ দিলেন তিনি। কিন্তু করোনাভাইরাস এর কারণে সেই কাজেও ইতি পড়লো। টানা লকডাউন এর কারণে স্বর্ণালী এবং দেবব্রতর এই ছোট্ট সংসার বর্তমানে বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে। একজন সামান্য উবের চালকের পক্ষে তিন মাসের জন্য এইভাবে বাড়িতে বসে থেকে খরচ চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত কষ্টের। তার সঙ্গে আবার দুজনের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। সেই মেয়েটির সমস্ত খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা, সংসার টেনে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে পড়ছিল দুজনের পক্ষে।

Advertisement
Advertisement

তারপরেই এনআরএস মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল এই ডোমপদে চাকরির অ্যাপ্লিকেশন বেরোলো। এপ্লাই করে ফেললেন স্বর্ণালী সামন্ত। তিনি জানালেন, নিয়োগের বিজ্ঞাপনে লেখা ছিল ল্যাবরেটরি এটেনডেন্ট। তবে এই পদ যে ডোমের সেটা জানতেন না তিনি। জানার পরেও তিনি পিছিয়ে আসেন নি। তার কথায়, “আমার একটা নিরাপদ চাকরি খুব প্রয়োজন। যদি হাসপাতালে ডাক্তার নার্স আয়া থেকে শুরু করে সবকিছুই মহিলারা করতে পারে তাহলে ডোম কেন বাদ যাবে? আমার পরিবার আমাকে সমর্থন করেছে। আপাতত রবিবার এনআরএস মেডিকেল কলেজে গিয়ে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে এসেছি। আপাতত ফল প্রকাশের অপেক্ষা।”

Advertisement

Related Articles

Back to top button