নারীশক্তি যে কোনও কঠিন পরিস্থিতি জয় করতে পারে, মহাষষ্ঠীতে পুজোর উদ্বোধননে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছাবার্তা প্রধানমন্ত্রীর

Advertisement

Advertisement

নয়াদিল্লি: আজ, বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠী। মায়ের বোধন হয়েছে আজ। আর এই শুভলগ্নে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গবাসীর উদ্দেশ্যে দূর্গাপুজোর শুভেচ্ছা বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি সল্টলেকের একটি পুজো, যেটি বিজেপি মহিলা মোর্চা করছেন, সেই পুজো উদ্বোধন করেন তিনি। ভাষণ পর্ব এবং উদ্বোধনী পর্বে অনুষ্ঠিত হয় ভার্চুযালি। অনুষ্ঠানের শুরুতেই রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে সকলের মন ভরিয়ে তোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী বাবুল সুপ্রিয়।

Advertisement

ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সকল মুনি-ঋষিদের ভারতের ইতিহাসে যে অবদান রয়েছে, তাকে স্যালুট জানিয়েছেন। এমনকি এর পাশাপাশি মা সারদা, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, মাতঙ্গিনী হাজরা থেকে শুরু করে মহিলা যোদ্ধাদেরও তিনি নিজের সশ্রদ্ধ প্রণাম জানিয়েছেন।

Advertisement

Advertisement

তিনি দূর্গাপুজো সম্পর্কে ভাষণ দিতে গিয়ে, পশ্চিমবঙ্গবাসীকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘আমি রয়েছি নয়াদিল্লিতে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ভার্চুয়ালি এই শুভেচ্ছা জানাতে হচ্ছে। কিন্তু আমার মনটা রয়েছে বাংলায়। মা দূর্গা এমন একটা শক্তি, এই শক্তির সকলের মনকে উদ্বুদ্ধ করে। যে কোনও পরিস্থিতির মধ্যেই সব মেয়েদের সম্মান করা শিখতে হবে। দেশ থেকে নারী অত্যাচার মুছে ফেলতে হবে। মা দুর্গার পুজো শুধু একটা পুজো নয়, এটা হচ্ছে শক্তির আরাধনা। মা দুর্গাকে দুর্গতিনাশিনী বলা হয়। অর্থাৎ তিনি দুঃখ-দুর্দশা দুর করেন। এইজন্য দুর্গাপুজো তখনই সম্পূর্ণ হবে, যখন আমরা কারোর উপকার করব। কোনও গরীবকে উপকার করব, তার দুঃখ দূর করব।’

এর পাশাপাশি নারী শক্তি নিয়েও ভূয়শী প্রশংসা শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর গলায়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারী শক্তি যুগ যুগ ধরে যে কোনও কঠিন পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করার ক্ষমতা রাখে। তাই প্রত্যেকের উচিত নারী শক্তির আরাধনা করা। এইজন্য দেশের মধ্যে নারী শক্তি বৃদ্ধি করার অভিযান জোর গতিতে এগোচ্ছে। সেটা মুদ্রা যোজনা হোক, প্রধানমন্ত্রী যোজনা হোক, এরকম মহিলাদের স্বনির্ভর করার প্রকল্প করা হয়েছে। ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’-এর মাধ্যমে মেয়েদের শিক্ষা দেওয়ার বার্তা দেওয়া হচ্ছে। তিন তালাকের মাধ্যমে মেয়েদেরকে অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুখ খোলার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গ্রামে গ্রামে শৌচালয় করে মেয়েদের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এমনকি রাত্রে পুরুষের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে মেয়েদের কাজ করার সুবিধাও দেওয়া হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বাকালীন ছুটি বাড়ানো হয়েছে। নারীশক্তিকে বৃদ্ধি করার জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছে সরকার।’

এর পাশাপাশি বাংলার গৌরব এবং উদ্যোগ নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলার সমৃদ্ধিকে নতুন শিখরে পৌঁছে দিতে হবে। বাংলাকে বিশ্ব দরবারে তুলে আনার জন্য নিরন্তরভাবে কাজ করা হচ্ছে। 30 লাখ দরিদ্র মানুষের জন্য ঘর বানানোর কাজ হয়েছে। উজ্জ্বল যোজনার আওতায় 90 লাখ মহিলাদের বিনামূল্যে গ্যাস দেওয়া হয়েছে। বাংলার পরিকাঠামো এবং প্রযুক্তিগত যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করার কাজ চলছে।

পরিশেষে রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে বাংলায় ভাষণ দেন মোদি। তিনি বলেন, মা দুর্গা ও মা কালীর কাছে এই প্রার্থনা করি, যেন প্রতি বছর আমরা এভাবে মানুষের, দেশের সেবা করে যেতে পারি। মা দুর্গা, মা কালী সকলকে রক্ষা করুক। এই দেশকে রক্ষা করুক। সবার উন্নতি করুক। জয় হোক। জয় মা দূর্গা। জয় হিন্দ।’ এই বলেই নিজের বক্তব্য শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী। তার বক্তব্য শেষে ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নৃত্য মহাষষ্ঠীর শুভক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আরও জমজমাট করে তুলেছিল, তা বলাই যায়।

Recent Posts