জীবিত অবস্থায় যদি কোন একটা ভালো কাজ করে থাকি তো, সেটি হল গান্ধী কে হত্যা করা : নাথুরাম গডসে

Advertisement

Advertisement

মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ওরফে গান্ধীজীর হত্যাকান্ড উপমহাদেশের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। গান্ধীর হত্যাকারী ছিলেন তার মতই একজন উচ্চশ্রেণীর ব্রাহ্মণ নাথুরাম গডসে। গান্ধীকে হত্যা করার জন্য তিনি যে যুক্তি দেখিয়েছিলেন, সেই যুক্তি কিন্তু তার একার কথা ছিল না। হিন্দুদের একটি বিরাট অংশ গডসের এই যুক্তিকে সঠিক বলে মনে করেছিলেন। গডসের ফাঁসি হয়েছিল একথা ঠিক, তবে তিনি যে চিন্তায় আলোড়িত হতেন, সে চিন্তার কিন্তু মৃত্যু হয়নি। এখনো ভারতের কট্টরপন্থী ও উগ্রবাদী হিন্দু তার চিন্তা ও চেতনায় আলোড়িত হয় এবং তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। আদালতে দেওয়া জবানবন্দির আলোকে নাটক মঞ্চস্থ করে।

Advertisement

1934 সালের জুলাই থেকে 1944 সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ছয়বার গান্ধীকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। নাথুরাম 1946 সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমবার গান্ধীকে হত্যার চেষ্টা করেন, ব্যর্থ হয়ে তিনি আবার 1948 সালের 20 জানুয়ারি একই চেষ্টা চালান। পরপর দু’বার ব্যর্থ হয়ে তৃতীয়বার 1948 সালের 30 শে জানুয়ারি তিনি সফল হন। সেদিন গান্ধী এক প্রার্থনা সভায় যোগদান করেছিলেন, সেখানেই নাথুরামের গুলিতে তিনি নিহত হন। গান্ধীকে হত্যা করার জন্য তার কোন অনুতাপ ছিল না। তিনি প্রাণভিক্ষা চাননি। প্রাণদণ্ডের জন্য তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ প্রস্তুত।তিনি বলেছিলেন ‘জীবিত অবস্থায় যদি কোন একটা ভালো কাজ করে থাকি তো, সেটি হল গান্ধী কে হত্যা করা ’ ।

Advertisement

তিনি মৃত্যুকে হাসিমুখে বরণ করে নেন। কিন্তু কেন? এই কেনর জবাবও রয়েছে গডসে নিজের জবানিতে। সব কথাই বলে গেছেন গডসে তার জবানবন্দিতে। জবানবন্দি দিয়েছিলেন আদালতে। তার জবানবন্দি একটি ঐতিহাসিক দলিল। এটি পাঠ করলে বহু জিজ্ঞাসার জবাব পাওয়া যাবে। জানা যাবে গান্ধী হত্যাকাণ্ডের জন্য কেন তার কোনো অনুশোচনা ছিলনা। শুধু যে ব্যক্তিগত যন্ত্রণারই নাগাল পাওয়া যাবে তাই নয়, জানা যাবে হিন্দুদের একটি অংশের উগ্রবাদী মানসিকতাও ভারতীয় রাজনীতির আরেকটি পরিচয়।

Advertisement

তিনি বলেছিলেন ‘আমি বলতে চাই যে আমি এমন এক ব্যক্তির প্রতি গুলিবর্ষণ করেছি যার নীতি ও কার্যকলাপ কোটি-কোটি হিন্দুর দুঃখ-দুর্দশা ও ধ্বংস ডেকে এনেছে। দেশে এমন কোনো আইন নেই যার আওতায় এমন এক অপরাধীর বিচার হতে পারে। তাই আমি তার প্রতি মৃত্যুবাণ নিক্ষেপ করেছি।’

Written by – শ্রেয়া চ্যাটার্জি