বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে, শিশু দিবসের প্রাক্কালে বলতেই হয় এখনকার শিশুদের শৈশব বিপন্ন

Advertisement

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি : মাগো আমায় ছুটি দিতে বল সকাল থেকে পড়েছি যে মেলা

Advertisement

এখন বোধহয় ঘরে ঘরে প্রত্যেকটি শিশুর এই একটাই বক্তব্য। বাবা ছুটছে কাজের সন্ধানে, মাও হয়তো চাকুরীজীবী। শিশুদের খেলার সঙ্গী নেই, পাশের বাড়ির বাচ্চাটিও তো মন দিয়েছে তার লেখাপড়ায়। অবুঝ শিশুটি পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আর আশেপাশে কোন খেলার জায়গাও নেই যে সেখানে একটু সে প্রাণভরে খেলতে যাবে। তাই কবি বোধহয় বহুদিন আগেই এই ছোট্ট শিশুর ভবিষ্যতের মনের কথা পড়তে পেরেছিলেন।

Advertisement

স্কুলের ব্যাগটা বড্ড ভারী আমরা কি আর বইতে পারি

Advertisement

এখন ছোট ছোট শিশুদের দেখলে মনে হয় তাদের উচ্চতার থেকে তাদের ব্যাগগুলি অনেক বড় বড় হয়। আগেকার দিনে একটা স্ক্রিপ্ট পেন্সিল নিয়ে গেলেই পড়াশোনা হয়ে যেত। মাস্টারমশাইদের আদর স্নেহ এবং তাদের অগাধ জ্ঞান তারা এমনি বিলিয়ে দিতেন, এর জন্য হয়তো মোটা মোটা বই বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হতো না।

নামতা পড়ে ছেলেরা সব পাঠশালার ওই ঘরে

আপনি যদি কোন স্কুলের পাশ দিয়ে যান তাহলে আর জোরে জোরে একসঙ্গে পড়ার কোন শব্দ আপনি শুনতে পারবেন না। পড়াশুনাটা হয়েছে অনেক অডিও ভিজুয়াল ভিত্তিক। বাচ্চাদের কম্পিউটারের মাধ্যমে শেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যেটা হয়তো এখন সমাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য খুবই দরকারী। কিন্তু কোথাও যেন শিক্ষক আর ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয় তার মধ্যে একটা ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।

বাজলো ছুটির ঘন্টা

ঢং ঢং করে স্কুলে চারটের সময় বেল পড়ছে। একদল ছাত্র ছাত্রী স্কুল থেকে বেরিয়ে আসছে মুখে একরাশ হাসি নিয়ে। এমন ছবিতে আজকাল দেখতে পান? বোধহয় না কারণ এখন শিশুরা প্রাণ মন খুলে হাসতে ভুলে গেছে তাদের মাথায় রয়েছে পড়াশোনার চাপ, প্রোজেক্টের চাপ। স্বপ্ন দেখার তাদের সময় নেই। স্কুল ছুটি হওয়ার পরে হয়তো তাদের স্কুল থেকেই যাওয়া টিউশন পড়তে বা বাড়িতে গিয়েই হয়তো স্যার ম্যাডাম বসে আছেন তাকে পড়াবেন বলে। শৈশবকাল তো কেটেই গেল তারই পড়াশুনার বোঝা নিতে নিতে। তবে বোঝা নেওয়ার তো এই তো সবে শুরু। ছুটির ঘন্টা বোধহয় আর কোনদিনই বাজবে না।

এ বিশ্বকে এ শিশুর, বাসযোগ্য করে যাব আমি

কবি কবেই না এই লাইনটি লিখে গেছেন। সত্যি তো আমরা কি পেরেছি শিশুদের উপযুক্ত জায়গা দিতে? দুবেলা পেট ভরা খাবার আর বাসস্থান দিলেই তো হবে না তাদেরকে সঙ্গ দিতে হবে। আজকাল আমাদের বাচ্চারা সত্যিই খুব সঙ্গীহীন। তাই আমাদের তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। একটা সুন্দর সাজানো গোছানো পৃথিবী তাকে আমরাই পারবো একমাত্র উপহার দিতে।

Recent Posts