ভয় না পেয়ে করোনার ভ্যাকসিন নিন, ভরসা জোগালেন কলকাতার এক যোদ্ধা

Advertisement

Advertisement

কলকাতা: অপেক্ষার অবসান। দেশ জুড়ে আজ, শনিবার (Saturday) থেকে করোনা ভ্যাকসিন (Cirona Vaccine) প্রয়োগ পর্ব শুরু হয়েছে। সকল স্বাস্থ্যকর্মীকে এই ভ্যাকসিন সবার প্রথমে দেওয়া হলেও মানুষের মধ্যে কোথাও আজও করোনা টিকাকরণ (Corona Vaccination) নিয়ে একটা ভীতি রয়ে গিয়েছে। যদি কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া (Side Effect) হয় বা যদি জীবন নিয়ে সংকট তৈরি হয়। এমন ধারণা বা এমন ভয় মানুষের মধ্যে বাসা বেঁধেছে। আর মানুষের ভয় দূর করার বার্তা দিয়েছে বাকচি পরিবার।

Advertisement

রাই বাকচি স্বামীর সঙ্গে রাজ্যে যখন করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়েছিল, তখন সেই ট্রায়াল পর্বে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। তবে সেই ভ্যাকসিন ছিল কো-ভ্যাকসিন। আর আজ যেই ভ্যাকসিন দিয়ে টিকাকরণ শুরু হয়েছে, সেটি হল কোভিশিল্ড। তবে ভ্যাকসিন যাই হোক মানুষের মধ্যে ভীতি সেটাতো এক। কিন্তু ‘ভয় পাবেন না। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভ্যাকসিন অনায়াসেই আপনি নিতে পারেন।’ এমন বার্তাই দিয়েছেন স্বামীর সঙ্গে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে যোগ দেওয়া রাই বাকচি।

Advertisement

রাই বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সব মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া অত্যন্ত দরকার। তাহলেই একমাত্র করোনার হাত থেকে মুক্তি মিলবে। আমি একটাই কথা বলব, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। নির্ভয় ভ্যাকসিন নিন। কারণ, করোনাকে মোকাবিলা করার জন্য ভ্যাকসিন ছাড়া অন্য কোনও বিকল্প নেই।”

Advertisement

কো-ভ্যাকসিন তৈরি করেছে ভারত বায়োটেক। যা কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে সবার মধ্যেই একটা প্রশ্ন জেগেছিল। অনেকেই কো-ভ্যাকসিনের থেকে এগিয়ে রেখেছিল সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনকে। তবুও গোটা দেশের পাশাপাশি তৃতীয় পর্যায়ে কো-ভ্যাকসিন দিয়েই ট্রায়াল শুরু হয়েছিল এ রাজ্যে আর তাতে এক পরিচিত চিকিৎসকের থেকে খবর পেয়ে অংশ নিয়েছিলেন রাই এবং তার স্বামী সপ্তর্ষি। রাই নিজে পেশায় জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ। আর তার স্বামী সপ্তর্ষি ব্যাঙ্কে চাকরি করেন। ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার কারণে প্রথমে ভয় লাগলেও পরে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে এই দম্পতি।

জানা গিয়েছে, প্রথম ডোজ নেওয়ার পর সপ্তর্ষির সামান্য জ্বর এবং গায়ে, হাত-পায়ে ব্যথা হয়েছিল। কিন্তু দু’তিনদিন পর সমস্যা কেটে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তারা দ্বিতীয় ডোজও নেন। এবার বাড়ির অন্যান্য সদস্য অর্থাৎ বৃদ্ধা শাশুড়ি এবং ছয় বছরের মেয়েকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ভাবছেন রাই। যদিও শাশুড়িকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় জেনে নিতে হবে। কারণ তার শাশুড়ি অনেক ওষুধ খান। তাই সাবধানতা অবলম্বন করেই ভ্যাকসিন নিতে হবে। এমনটাই বার্তা দিয়েছেন তিনি। তবে শুধু রাই নন, তার পাশাপাশি সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধ্রুবজ্যোতি ভট্টাচার্যও এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন। তবে আর কোন ট্রায়াল নয়। এবার আজ থেকে সরাসরি শুরু হয়ে গেল টিকাকরণ প্রক্রিয়া। আর ভয় না পেয়ে এই প্রক্রিয়ায় যেন সকলে সহযোগিতা করে, এমনটাই পরামর্শ দিয়েছেন রাই এবং ধ্রুবজ্যোতিবাবু।