প্রয়াত হলেন কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো মারাদোনা। ফুটবল জগতের শোকের ছায়া। সম্প্রতি মারাদোনার মাথায় অস্ত্রপচার হয়েছিল, এরপরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০। সূত্রের খবর অনুযায়ী, নভেম্বরের মাঝামাঝি তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। ঠিক ৮ দিন পর তাকে বুয়েনোস আইরেস এর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আ্যলকোহল তার প্রাণ কেড়ে নিল। মাথায় রক্ত জমাট বাঁধার জন্য তার অস্ত্রোপচার হয়েছিল, সে অস্ত্রোপচার সফল হওয়ার পর তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে এসেও শেষ রক্ষা হয়নি। নেশা মুক্তির জন্য রিহ্যাবে যুক্ত হন, কিন্তু রিহ্যাবও তাকে মাঠে ফেরাতে পারল না। সূত্রের খবর অনুযায়ী নিজের বাড়িতেই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে চলে যান।
সালটা ১৯৭৬, তখন বয়স মাত্র ১৬, সেই সময় প্রথম ফুটবলে মারাদোনার অভিষেক হয়। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত তিনি ১৬৭ টি খেলায় ১১৫ টি গোল করেন। ১৯৮২ বিশ্বকাপের পর বার্সেলোনায় যোগ দেন। ৮৩ তে জমিয়ে খেলছেন। ঠিক সেই সময় তিনি হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হন, পাশাপাশি গোড়ালিতেও আঘাত পান। চিকিৎসা করানোর পর আবার মাঠে ফেরেন তিনি। এই বার্সেলোনায় মারাদোনা ৫৮ টি খেলায় ৩৮ টি গোল করেন। সব থেকে গর্বের বিষয় হল আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে মারাদনা টানা চারটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন এবং এর মধ্যে একবার বিজয়ী হন সেই সালটি হল ১৯৮৬। ১৯৯০ এ একটু যেন জিততে পারেননি তবে রানার আপ হন। তবে মারাদোনার জীবনে প্রথম বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা ছিল ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপ। সেই সময় আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয় বেলজিয়াম। তার জীবনে আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হল ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের বিপক্ষে তিনি জোড়া গোল করেন। তিনি নিঃসন্দেহে যে একজন কৌশলী খেলোয়াড় ছিলেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একাই একশো হয়ে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন যে তিনিই সেরা।
খেলার সময় তিনি বাম পা বেশি ব্যবহার করতেন ডান পায়ের তুলনায়। ১৯৮৬ তে গোল অফ দ্য সেঞ্চুরি করার সময়ও ডানপায়ে একবারের জন্যেও তিনি ব্যবহার করেননি। পুরো খেলা তিনি বাম পায়ে চালিয়ে গেছেন। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় যে ফিফা তাকে ১৯৯৪ এর বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কার করেন। সেসময় ড্রাগ টেস্টে এফিড্রিন ডোপিং এর কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়। অবশ্য ওই টেস্ট সম্পর্কে পরবর্তীতে তিনি বলেন যে তার ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক তাকে এনার্জি ড্রিংক রিপ ফুয়েল দেন। এবং এটি একদমই অনিচ্ছাকৃত ভাবে ব্যবহার করা হয়, যার জন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়। ১৯৯৪ তেই তাঁর ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটে। মারাদনা তার জাদুকরী রণকৌশলের মাধ্যমে ৯১ টি খেলায় সর্বমোট ৩৪ টি গোল করেন।