প্রকাশ্যে মমতার প্রশংসার জের, গণশক্তির প্রাক্তন সম্পাদকের কন্যাকে শোকজ করল সিপিআইএম

আলিমুদ্দিনের তরফ থেকে অজন্তা বিশ্বাস এর কাছে তার এই পদক্ষেপের কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে

Advertisement

Advertisement

তৃণমূলের আনুষ্ঠানিক পত্রিকা তথা মুখপত্র জাগো বাংলার হয় কলম ধরেছিলেন প্রাক্তন বাম নেতা অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাস। তার লেখার মূল বিষয়বস্তু ছিল রাজনীতিতে মহিলাদের প্রভাব। প্রথম দুটি কিস্তিতে বিভিন্ন মহীয়সী মহিলার নাম থাকলেও, তৃতীয় কিস্তিতে ছিলেন শুধুমাত্র বাংলার প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বাংলার রাজনীতির ইতিহাসে মহিলাদের অবদান নিয়ে লিখছেন, কিন্তু মমতার নাম নেওয়া হচ্ছে না এটা সম্ভব নয়। কিন্তু, এই লেখনীর তৃতীয় কিস্তি প্রকাশ হওয়ার পরেই বিতরকের মুখে পড়েছেন প্রাক্তন বামনেতা কন্যা।

Advertisement

দলীয় মতাদর্শের বিরুদ্ধে গিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের পত্রিকায় গিয়ে কেন তিনি সম্পাদকীয় লিখেছেন? সেই বিষয়টি একেবারে খোলসা করে জানার জন্য এবারে অজন্তা বিশ্বাসকে সরাসরি শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিল আলিমুদ্দিন। সিপিআইএম এর তরফ থেকে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দলের ভাবমূর্তি এবং দলীয় শৃঙ্খলা অমান্য করে অজন্তা যেভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলের মুখপত্রতে বিরোধী নেত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, তা নিয়ে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট আলিমুদ্দিন।

Advertisement

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপিকা অজন্তা বিশ্বাসের লেখা সম্পাদকীয় কলম এর তৃতীয় কিস্তিতে একেবারে ছত্রে ছত্রে ভরে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসার কথা। ইতিহাসের সেরা বাঙালি মহিলা রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এছাড়াও, কন্যাশ্রী, রুপশ্রী এর মতো বিভিন্ন নারীকেন্দ্রিক প্রকল্পকে তিনি সাধুবাদ জানিয়েছেন। তৃতীয় কিস্তি প্রকাশিত হবার পরেই অজন্তা বিশ্বাসকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিআইএম। সিপিআইএমের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বামফ্রন্টের মুখপত্র গণশক্তির প্রাক্তন সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের কন্যার কাছ থেকে জানতে চাইবে, দলীয় মতাদর্শের বিরুদ্ধে গিয়ে কেন তিনি একজন বিরোধী নেত্রীর প্রশংসা করেছেন? তাও আবার একটি বিরোধী দলের মুখপত্রের একেবারে সম্পাদকীয় বিভাগে? এই লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকেই আবার মনে করছেন, তৃণমূলের দিকে পা বাড়ানোর জন্য অজন্তা বিশ্বাসের এটা প্রথম পদক্ষেপ। তবে এ নিয়ে মতান্তর থাকলেও, বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না অজন্তা বিশ্বাসের।

Advertisement

আলিমুদ্দিন সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজ্য কমিটির তরফ থেকে অজন্তার কাছ থেকে এহেন সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। যদি অজন্তা তাদের প্রশ্নের কোন সৎ উত্তর না দিতে পারেন তাহলে দলীয় সংবিধানের উপর ভিত্তি করে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বামফ্রন্ট শিবির। বামফ্রন্টের কলকাতার একজন স্থানীয় নেতা জানিয়েছেন, অজন্তা যেভাবে দলের কাউকে না জানিয়ে জাগো বাংলার জন্য কলম ধরেছেন, তাতেই নিচু তলার কর্মীরা অত্যন্ত অখুশি। তারপরে তৃতীয় কিস্তি প্রকাশিত হওয়ার পরেই সেখানে দেখা যাচ্ছে ছত্রে ছত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র ভূয়সী প্রশংসা। তার ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং দলীয় কর্মীদের মধ্যে অজন্তা বিশ্বাসের এই কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছিল। দলের তরফ থেকে এরকম কোনো পদক্ষেপ না গ্রহণ করা হতো, তাহলে কিন্তু দলীয় কর্মীদের কাছেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো পলিটব্যুরো সদস্যদের। তাই আগেভাগেই অজন্তাকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নিল সিপিআইএম।

Recent Posts