বক্সিং ডে টেস্টে সেঞ্চুরি রাহানের, কোণঠাসা অস্ট্রেলিয়া

Advertisement

Advertisement

মেলবোর্ন: মেলবোর্ন টেস্টের দ্বিতীয় দিন অনবদ্য ব্যাটিং দক্ষতা দেখালেন অজিঙ্কা রাহানে। আজ, রবিবার ১৯৫ বলে তিনি শতরান করেন। এই সেঞ্চুরিটা ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের পাশাপাশি রাহানের স্মৃতির মণিকোঠায় একটু স্পেশাল হয়েই থাকবে। কারণ বিরাটের অনুপস্থিতিতে রাহানে কতটা অধিনায়কত্ব সামলাতে পারবেন, তা নিয়ে একটা গুঞ্জন চলছিলই। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন তিনি।

Advertisement

টেস্ট ক্রিকেটে এটা রাহানের দ্বাদশ শতরান। ২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করার পর ২০২০ সালের একেবারে শেষে এসে তিনি শতরান পেলেন। পাশাপাশি ২০১৭ সালের পর এই প্রথমবার তিনি বিদেশের মাটিতে শতরান পেলেন। তিন বছর আগে কলম্বোর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তিনি ১৩২ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এই নিয়ে দ্বিতীয় শতরান করলেন রাহানে। ২০১৪ সালে এই মাঠেই তিনি শতরান করেছিলেন। সুতরাং, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড যে মুম্বইয়ের এই ব্যাটসম্য়ানের কাছে যথেষ্ট পয়া, তা বলা যেতেই পারে।

Advertisement

মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম দুটো দিন বেশ ভালই কাটল রাহানের। বিরাট কোহলির অবর্তমানে তিনিই ভারতীয় ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে ক্রিকেট বিশ্বের প্রায় প্রত্যেকেই রাহানের এই নেতৃত্বগুণের প্রশংসা করছেন। সঠিক সময়ে বোলিং পরিবর্তন এবং আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজিয়ে তিনি বাজিমাত করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার গ্লেন ম্যাকগ্রা মনে করেন, ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব উপভোগ করছেন অজিঙ্কা রাহানে। মেলবোর্ন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে তাঁকে যেন আরও আত্মবিশ্বাসী লেগেছে।

Advertisement

আজhttps://twitter.com/BCCI/status/1343083517228412930?s=19 রাহানে তিনটি বড়বড় পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। প্রথমটি হনুমা বিহারীর সঙ্গে ৫২ রানের, পরেরটা ঋষভ পান্থের সঙ্গে ৫৭ রানের এবং সবশেষে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে তিনি ১০৪ রানের অপরাজিত পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। আর এই তিনটে পার্টনারশিপের দৌলতেই দ্বিতীয় দিনের শেষে রীতিমতো চালকের আসনে বসে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। দ্বিতীয় দিনের শেষে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ভারত ২৭৭ রান তুলেছে।

আজ দিনের প্রথম সেশনে বিধ্বংসী বোলিং করছিলেন প্যাট কামিন্স। তিনি একাই শুভমান গিল এবং চেতেশ্বর পূজারার উইকেট তুলে নেন। ২১.৬ ওভারে প্যাট কামিন্সের বলে টিম পেইনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন শুভমান গিল (৪৫)। অফসাইডের বাইরে গিল হালকা হাতে একটা শট খেলতে গিয়েছিলেন। বলটা চতুর্থ কিংবা পঞ্চম স্টাম্পে ফুল ডেলিভারি ছিল। কিন্তু গিলের সামনের পা’টা একটুও নড়েনি। বল ব্যাটের কানায় লেগে সোজা পেইনের দস্তানায় জমা পড়ে। এরপর মাত্র দু’ওভারের মধ্যেই আরও একটা উইকেট পড়ল ভারতীয় ক্রিকেট দল। এবার চেতেশ্বর পূজারা (১৭)। প্যাট কামিন্সের আরও একটা অসাধারণ বোলিংয়ের শিকার হলেন পূজারা। ক্যাচ ধরলেন পেইন। ২৩.৪ ওভারে কামিন্সের একটা লেংথ বল ডিফেন্ড করতে গিয়েছিলেন পূজারা। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে বলটা মুভ করতে শুরু করে। অবশেষে ব্যাটের বাইরের কানা লেগে পেইনের কাছে সরাসরি চলে যায়। পেইন ডান হাত ক্যাচটা ধরতে বিন্দুমাত্র ভুল করলেন না। ওই ২ ওভারের মধ্যে কামিন্স গোটা ম্যাচের রংটাই বদলে দিয়েছিলেন।

এরপর হনুমা বিহারী (২১) এবং ঋষভ পান্থের (২৯) সঙ্গে দুটো ৫০+ পার্টনারশিপ দলের ভিতটাকে অনেকটাই মজবুত করে দেয়। সেই মজবুত ভিতের উপরেই এবার একটা শতরানের পার্টনারশিপ জাদেজাকে নিয়ে গড়ে ফেলেন রাহানে। দ্বিতীয় নতুন বলে যাতে ভারত কোনও উইকেট না হারায়, সেটা নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক ছিলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। যদিও অজ়ি ফিল্ডাররা রাহানের ক্যাচ দু’বার মিস করেছেন। একবার ৭৪ রানের মাথায়। আর পরেরটা দিনের শেষ বলে (৯১.৩ ওভার) ১০৪ রানের মাথায়। তবে ওই যে কথায় আছে না, ‘নো রিস্ক, নো গেইন।’ আজ যেন সেটাই তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করলেন রাহানে।