জোড়াবাগানকাণ্ডে নয়া মোড়! ধর্ষণ ও খুনের পর ঘুরে বেরিয়েছিল অভিযুক্ত দারোয়ান

Advertisement

Advertisement

কলকাতা: জোড়াবাগানের ((Jorabagan) ৯ বছরের বালিকার রহস্য মৃত্যু ঘিরে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনার মূল অভিযুক্ত বাড়ির কেয়ারটেকার। নাম রাম ওরফে লম্বু। জানা গেছে, প্রথমে বেহুঁশ করে চলে যৌন নির্যাতন। তারপর শ্বাসরোধ করে গলা কেটে খুন করা হয় ওই বালিকাকে। খুন করার পর ঘুরতে বেরিয়ে পরে বাড়ির দারোয়ান লম্বু। গতকাল, বৃহস্পতিবার (Thursday) যে বাড়ি থেকে বালিকার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, সেই বাড়িতেই দারোয়ানের কাজ করত মূল অভিযুক্ত।

Advertisement

উল্লেখ্য, শোভাবাজার থেকে জোড়াবাগানে মামার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল বছর ৯ ওই বালিকা।  বুধবার রাত থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না নাবালিকার। শিশুর পরিবার সুত্রে জানান হয়, পরশু রাত থেকেই নিখোঁজ ছিল নাবালিকা। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও পওয়া যায়নি তাকে। অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে দীর্ঘ তল্লাশির পর জোড়াবাগানের বৈষ্ণব সেখ স্ট্রিটের একটি বাড়ি থেকে  উদ্ধার করা হয় ওই নাবালিকার দেহ।

Advertisement

পুলিশ তরফে জানানো হয় যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল ওই নাবালিকা। এবং সেই অপরাধ ঢাকতেই খুন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে জোড়াবাগান থানার পুলিশ ছাড়াও ছিল লালবাজারের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা। আনা হয়েছিল পুলিশের স্নিফার ডগ। কলকাতা পুলিশের সায়েন্টিফিক উইং-ও যায় ঘটনাস্থলে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছিল পরিচিত কেউ নিজেদের  লালসা চরিতার্থ করতেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্তে পুলিশ আটক করে তিন সন্দেহভাজনকে। তাদের মধ্যেই একজন মূল অভিযুক্ত রাম ওরফে লম্বু। জেরা করা হয় তাঁদের। পুলিশের জেরায় বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

Advertisement

জানা গেছে, যে বাড়িটি থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সেই বাড়িতেই দীর্ঘদিন যাবৎ দারয়ানের কাজ করে মূল অভিযুক্ত। পুলিশি জেরাই অভিযুক্ত স্বীকার করে,  নাবালিকার উপর নির্যাতন করে খুন করে সে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী খুনের আগে বালিকাটিকে যৌন নির্যাতন করা হয়। বালিকার পাকস্থলি থেকে বিরিয়ানি ও চিপস জাতীয় খাবারও মিলেছে। এই পরই ওই দারোয়ানের উপর সন্দেহ বারে পুলিশের। কারণ জেরার সময় সে পুলিশকে বলেছিল, ঘটনার দিন সে তার বন্ধুদের সাথে ছিল। এবং মদ ও মাংস খেয়েছিল। জেরায় পুলিশ জানতে পারে, বুধবার রাতে সে নিজের ঘরে মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও দেখছিল। সেই সময়ে নাবালিকাটি ঘুরতে ঘুরতে ওই বাড়িতে ঢুকে পরে।

তখন সেই নাবালিকাকে খাবারের লোভ দেখিয়ে ঘরে ডাকে অভিযুক্ত দারোয়ান। বালিকাকে অচেতন করার জন্য মাদক মেশানো খাবার খাওয়ানো হয়। তারপর চলে যৌন নির্যাতন। তারপর শ্বাস্রোধ করে গলা কেটে তাঁকে খুন করে অভিযুক্ত। এবং মৃতদেহ ফেলে দেয় ছাদের সিঁড়ির কাছে। তারপর নিশ্চিন্তে রাস্তায় ঘুরতে বেরিয়ে যায় সে।  ভোরে ঞ্জের ঘরে এসে ঘুমিয়ে পরে। পর দিন সকালে বাড়ির এক পরিচারিকা বাড়ির ছাদে কাপর শুকোতে উঠতেই নাবালিকার মৃত দেহ তার চোখে পরে।

পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের মোবাইলে মিলেছে বহু শুশু পর্নগ্রাফির ভিডিও। এই ঘটনা সামনে আসার পর এলাকায় ফের বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা৷ স্থানীয়দের দাবি, তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে অভিযুক্ত দারোয়ানকে। রাজ্যের মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক শশী পাঁজা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় বাসিন্দারা।

Recent Posts