দেশনিউজ

করোনা সংক্রমণ কমছে, তাহলে কবে খুলবে স্কুল?

কোভিড পরিস্থিতি এখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও স্কুল খোলার ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না কোন রাজ্য সরকার

Advertisement
Advertisement

করোনার প্রকোপ বর্তমানে অনেকটাই কমে গিয়েছে সারা ভারতে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তেলেঙ্গানা সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পয়লা জুলাই থেকে, কিন্তু অভিভাবকদের চাপে পড়ে এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন এখন বিশবাঁও জলে। উত্তরপ্রদেশ সরকার ইতিমধ্যেই অভিভাবকদের কাছ থেকে মতামত জানতে চেয়েছে এই মর্মে। অন্যদিকে হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর, গোয়া, দিল্লি ইত্যাদি রাজ্যে গ্রীষ্মের ছুটি ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু, বাকি রাজ্যগুলিতে কবে স্কুল কলেজ খুলবে? সেই নিয়েই এখন ধন্দে রয়েছেন অভিভাবকরা।

Advertisement
Advertisement

ভারতে অগাস্ট থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনার বেশ খানিকটা ক্ষতি হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এরকম পরিস্থিতিতে আনলকিং এর ক্ষেত্রে স্কুল খোলা হবে কিনা, সেই নিয়ে এখনও চিন্তায় রয়েছে রাজ্য সরকার। অভিভাবকদের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হচ্ছে তাদের মতামত। পাশাপাশি রাজধানী দিল্লিতে অন্যান্য রাজ্যের মত করণা মহামারীর কারণে স্কুল প্রায় দেড় বছর হল বন্ধ রয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে উঁচু ক্লাসে পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলা হয়েছিল কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার কারণে স্কুল বন্ধ করে দিতে হয়। তারপর থেকে আবার অনলাইন ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে দিল্লিতে।

Advertisement

হরিয়ানা জুন মাসের শেষ পর্যন্ত গ্রীষ্মের ছুটি চালু রেখেছে। জুলাই মাসের স্কুল চালু করা হবে কিনা সেই নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু করোনাভাইরাস এর তৃতীয় ঢেউ যেভাবে আসতে চলেছে, তাতে মনে হচ্ছে না জুলাই মাস থেকে স্কুল খোলা সম্ভব হবে। রাজস্থানের স্কুল গুলি জুন মাস থেকে চালু হয়েছে তবে কেবল মাত্র অর্ধেক কর্মী দিয়ে স্কুল খোলা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক এবং অন্যান্য একাডেমিক কর্মীদের জন্য পহেলা জুলাই থেকে খোলা হবে। অন্যদিকে পাঞ্জাবে গ্রীষ্মের ছুটি ২৩ জুন পর্যন্ত রাখা হয়েছে। আপাতত অনলাইন ক্লাস চললেও শিক্ষামন্ত্রী বিজয় ইন্দোর সিঙ্গলা ২০২১ এর মে মাসে জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যের সমস্ত সরকারি, বেসরকারি এবং আধা সরকারি স্কুল ২৪ মে থেকে ২৩ জুনের মধ্যে বন্ধ থাকবে।

Advertisement
Advertisement

হিমাচল প্রদেশের করোনাভাইরাস এর কেস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ১১ জুন মেডিক্যাল, আয়ুর্বেদিক, ডেন্টাল, নার্সিং, এবং ফার্মেসি কলেজ পুনরায় চালু করার ঘোষণা করে দিয়েছে হিমাচল প্রদেশ। অনেক রাজ্য করোনার প্রটোকল মেনে স্কুল পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তবে সে ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর কোন জোর দেওয়া হচ্ছে না। যদি কেউ আসতে চায় তাহলে আসতে পারে এরকম ভাবে চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সেই রাজ্যের সরকার। তবে সবকিছুর জন্য আগে প্রয়োজন একটি লিখিত অনুমতির, যেটা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না। অসম থেকে শুরু করে জম্মু-কাশ্মীর এবং ওড়িশা রাজ্যে এখনও পর্যন্ত স্কুল খোলার ব্যাপারে কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ওড়িশা সরকার জানিয়ে দিয়েছে আগামী দিনগুলি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পরে স্কুল খোলার বিষয় বিবেচনা করা হবে। তবে উড়িষ্যায় গ্রীষ্মের ছুটি শেষ হয়ে গেছে এবং বর্তমানে অনলাইনে শিক্ষাদানের কাজ চলছে। তেলেঙ্গানায় বর্তমানে অনলাইনে শিক্ষাদানের কাজ চলছে।

ভারতের আরও বেশকিছু রাজ্য যেমন কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মনিপুর, গোয়া এখনো পর্যন্ত স্কুল খোলার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। কর্ণাটক বিধানসভায় ১৫ জুন থেকে নতুন অধিবেশন শুরু হচ্ছে এবং এখানেই লকডাউন শেষ হওয়ার পরে শিক্ষকদের স্কুলে আসতে বলা হয়েছে। আগামী দিনে করণা পরিস্থিতি বিচার বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে তামিলনাড়ু সরকার। খোদ নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় সরকার এখন স্কুল খোলার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন না দুটি কেন্দ্রীয় শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে সম্প্রতি। ওই দুটি বোর্ড জানিয়ে দিয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের পূর্ব পারফরমেন্সের উপর নির্ভর করে তাদের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর মার্কশিট তৈরি করা হবে। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তবে পশ্চিমবঙ্গের এবং কেন্দ্রের মার্কশিট তৈরি করার ফর্মুলা একটু আলাদা। কিন্তু স্কুল খোলার ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সরকার কোনো রকম সিদ্ধান্তে উপনীত হতে চাইছেন না। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী পরিস্থিতি কি রকম থাকবে সেই ব্যাপারে ভালোভাবে বিচার বিবেচনা করে তারপর স্কুল কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Advertisement

Related Articles

Back to top button