মাইথোলজি

মহামায়ার দুই রূপ: দুর্গা ও কালী: এক বিশ্লেষণ

Advertisement
Advertisement

“শক্তি”, এমন এক শব্দ যা প্রতিনিয়ত আমাদের মনে করায় দেবী দুর্গা ও দেবী কালিকার কথা। পুরাণ মতে শক্তির এই দুই বহিঃপ্রকাশ, একই মুদ্রার দুটি অংশ। তবে জীবের অসীম কৌতুহল, মাঝে মধ্যেই এক প্রশ্ন সৃষ্টি করে: কে অধিক শক্তিশালী? মা দুর্গা না মাকালী। অনন্তকাল ধরে এই বিতর্ক চলে আসছে, যার সঠিক উত্তর আজও পাওয়া যায়নি।

Advertisement
Advertisement

পুরাণ কথা অনুযায়ী, শিবজায়া পার্বতী হলেন দেবী দুর্গা যিনি মহিষাসুরকে বধ করে মহিষাসুর মর্দিনী রূপে এই জগৎ সংসারে বিখ্যাত হয়েছেন। আবার এও বলা হয়, ত্রিদেব ও অন্যান্য দেবতাদের তেজরসে সৃষ্টি হয়েছিল দেবী দুর্গার কায়া। প্রকৃত অর্থ হল শক্তি সকলের মধ্যেই বিদ্যমান। সেই শক্তিপুঞ্জকে একত্রিত করে দেবীর নির্মাণ হয়েছিল। শুধুমাত্র নিরাকার ব্রহ্ম থেকে সাকার ব্রহ্মে রূপান্তরিত হয়েছিলেন দেবী। অন্যদিকে কোন কোন জায়গায় উল্লেখ আছে যে পার্বতীই দেবী কালিকা বা কালী। দেবী চামুণ্ডা, ছিন্নমস্তা ও চন্ডী রূপে পরিচিত। তবে আশ্চর্য লাগে যে মহাঅষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলির সময় ‘কালী’, এই নামটি কোথাও উচ্চারিত হয় না, বরং কৌশিকী রূপে মা পূজিতা হন। তবে কি এই কৌশিকীই দেবী মহাকালী! শুধুমাত্র নামের পার্থক্য!! শ্রী শ্রী চন্ডীচরণামৃততে দেবী কৌশিকী হচ্ছেন মহাকালী যার বিভিন্ন নাম রয়েছে তাঁর ভক্তবৃন্দের বুকের মাঝে। দেবী দুর্গা দশ হাতে দশ প্রহরণ ধারণ করেন। কিন্তু মা কালী কেবল রক্তস্নাত খড়্গ। সকল অহংকার ও অজ্ঞতার শিরছেদ করে চলেছে এই অস্ত্র, যার প্রতীক স্বরূপ রয়েছে এক শির। কিছু তথ্য অনুযায়ী এই শির হচ্ছে মহাবলশালী অসুর রাক্তবীজের।গলার মুন্ডমালা হচ্ছে প্রজ্ঞার প্রতীক এবং কটি দেশে যে হস্ত বিন্যাস বর্তমান, তা কর্মের প্রতীক, যার ফলাফল মা ই নির্দেশ করে থাকেন। দেবীর কর্ণালংকার মূলত শিশু সুলভ আচরণ নির্দেশ করে। দেবীর সারল্য ভীষণ পছন্দ। দেবীর রং কালো। উনি নির্গুণ। সকল মায়ার ওপরে।

Advertisement

তাই মা দুর্গা ও মা কালী, একে অপরের পরিপুরুক। দেবী দুর্গা নব দুর্গার মিলিত শক্তি ও দেবী কালী হলেন দশ মহাবিদ্যার মিলিত প্রকাশ। তাঁরা এক এবং অভিন্ন। সমরে তাঁদের পরাক্রম প্রদর্শনে কোন বৈষম্য নেই। তাঁরা দুজনেই ভক্তের ডাকে সাড়া দেন। আগামীকাল কালীপূজা। অনন্ত মহামায়ার এক বিশেষ রূপ। সকল নিবেদনের মাঝে , দিনটি ভরে উঠবে আনন্দ ও উল্লাসে। সাথে রয়েছে আলোর রোশনাই।

Advertisement
Advertisement

Written by – কুণাল রায়

Advertisement

Related Articles

Back to top button