ম্যাগাজিন

সৃজনশীলতার এক নতুন মোড়: “লাভ ইন সিএস্তা” (এ কালেকসন অফ শর্ট স্টোরিস)

Advertisement
Advertisement

সম্প্রতি মুক্তি পেল আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন লেখক, ভাষাবিদ ও গবেষক শ্রী অভীক গঙ্গোপাধ্যায়ের এক সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের বই, ” লাভ ইন সিএস্তা” ( এ কালেকশন অফ শর্ট স্টোরিস),পার্ক স্ট্রিট অঞ্চলে অবস্থিত, কলকাতার নামি ও আভিজাত্যপূর্ণ অক্সফোর্ড বুক স্তরে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ভারততত্ত্ববিদ ও তুলনা মূলক সাহিত্যের এক জনপ্রিয় নাম শ্রী জয়দীপ মুখার্জি এবং বিশিষ্ট চিত্র পরিচালক, সাংবাদিক, সম্পাদক ও ঢাকার নোটরে ডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক শ্রী আহমেদ তাহসিন শামস।

Advertisement
Advertisement

মূলত এক্সপ্রেস পাবলিকেশন ও অভ্যান্ট গার্ড, বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে বইটি মুক্তি পায়। অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন লেখকের স্ত্রী শ্রীমতি স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়ের সরস্বতী মন্ত্রেপাঠের মাধ্যমে। উনি একজন বিশিষ্ট কন্ঠ শিল্পী। এই অনুষ্ঠানের মূল সঞ্চালনায় ছিলেন অধ্যাপক কুণাল রায়। লেখকের বৈচিত্র্য তুলে ধরেন দর্শকদের সামনে। তিনি বলেন একজন সমালোচক কি নিখুঁত উপায় সৃজনশীল মূলক লেখাতেও স্বচ্ছন্দ বোধ করতে পারেন, তারই এক উজ্জ্বল প্রমাণ ” লাভ ইন সিএস্তা”। দর্শক বৃন্দ অবাক হয়েছিলেন যে লেখকের একুশটি বই প্রকাশিত এবং নটি বই ওনার সম্পাদিত, মূলত ইংরেজি ও বাংলায়। প্রসঙ্গত এটি লেখকের পঞ্চাশতম বছরের ৩১তম বই।

Advertisement

শ্রী অভীক গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যাপ্তি অসামান্য। একজন খ্যাতি সম্পন্ন ভাষাবিদ, যার কর্মের ক্ষেত্র ভাষা, ভাষার মৃত্যু এবং বিপন্ন ভাষার খোঁজ। অন্যদিকে “ট্রমা লিটারেচার” ওপর উনার কাজ যথেষ্ট প্রশংসনীও। লেখক বহু পুরস্কারে সম্মানিত।ওনার “সরস্বতী” গ্রন্থের জন্য ২০১৭ সালে “জ্ঞান সরস্বতী সম্মানে” ভূষিত করা হয় বরদা সিদ্ধি পিঠম তেলেঙ্গানার থেকে। পরবর্তীকালে রাজশাহী বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়ামের তরফ থেকেও ওনাকে “সরস্বতী” গ্রন্থের জন্য সম্মানিত করা হয়। এছাড়া” ভাষার মৃত্যু: লুপ্ত ও বিপন্ন ভাষার খোঁজ” গ্রন্থের জন্য লেখককে রারো ও বরেন্দ্রভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা পরিষদ ঢাকা,বাংলাদেশ থেকেও সম্মানিত করা হয়। বলাবাহুল্য জীবনে বহু পুরস্কার পেয়েছেন। বিদেশ থেকেও, যেমন এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়( স্কটল্যান্ড),হেনরিখ হাইনে বিশ্ববিদ্যালয়( জার্মানি), সরবয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে( ফ্রান্স), ইন্দো কানাডিয়ান ডিএসপরা কনফেডারেশন( কানাডা), সেন্টার ফর রিভিটালিজেসন অফ এনডেনজার্ড ল্যাংগুয়েজ( কানাডা), এশিয়া ইউরোপ ফাউন্ডেশন ( সিঙ্গাপুর), লাইব্রেরি অফ পোএট্রি (আমেরিকা) ,উনি পুরস্কৃত হন।

Advertisement
Advertisement

কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। একই ভাবে উনি সাবলীল সংস্কৃত, ফরাসি ও জার্মান ভাষায়। অন্যদিকে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ওনার লেখালেখি বিশেষভাবে উল্লেখ যোগ্য। বিবিধ বিষয়ে উনি লেখালেখি করেন ,মনস্তাত্ত্বিক বিষয়বস্তু থেকে ইতিহাসের পাতা থেকে সঙ্গীত, আধুনিকতার পরবর্তী যুগ, কি নেই সেখানে যেখানে পাঠক তাঁর আশ্রয় খুঁজে পাবে না! ডেইলি মেইল থেকে শুরু করে, জাপান টাইমস, ইন্ডিয়ান অবসার্ভার, বাংলাদেশ পোস্ট, কংনেকসিও মত নামি খবরের কাগজগুলো ওনার বিষয়বস্তু ও লেখনী শৈলীতে সমৃদ্ধ আজ!

অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রী জয়দীপ মুখার্জি ওনার বক্তব্যে উল্লেখ করেন লেখকের বিষয় চয়ন ও বৈচিত্র্য। প্রসঙ্গে উঠে আসে এলিয়ট, এরিস্টটল ও আধুনিক পরবর্তী যুগের কিছু আলোড়ন জাগানো তথ্য। এক সম্পূর্ন ভিন্ন স্বাদ প্রদান করে, নিঃসন্দেহে! অনুষ্ঠানে “লাভ ইন সিএসতা” ( এ কালেকশন অফ শর্ট স্টোরিস) উদ্বোধন হয় বিশিষ্ট অধ্যাপক শ্রী আহমেদ তাহসিন শামস এর হাত ধরে। অনুষ্ঠানের আকর্ষণ বৃদ্ধির অভিপ্রায় এ একটি টিজার শোএর এর ব্যবস্থা করা হয়।মূলত লেখকের তিনটি গল্প নিয়ে এই টিজার শো টি দর্শকদের সামনে দেখানো নয়। এর বিষয়বস্তু অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও প্রীতিকী সমৃদ্ধ, যা দর্শকদের মাঝে এক বিনোদনের সৃষ্টি করে! আহমেদের অনুসৃষ্টি, তার ব্যাপ্তি ও সীমানা নিয়ে বক্তব্য দর্শকদের অনুপ্রাণিত করে। লেখকের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি , এক কথায় অনবদ্য!!

বইটিতে মোট আটটি ছোট গল্প আছে। সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রেকে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। কোন কোন গল্প বহুযুগ আগের প্রেক্ষাপটে রচিত, আবার বেশ কিছু সৃষ্টি পুরুষ ও নারীর সম্পর্ককে কেন্দ্র করে। সম্পর্কের টানাপোড়েন, বহু বোঝাভুজি ও আরো বহু রঙের ছোয়া পেয়েছে গল্পগুলো। এক কথায় বলতে গেলে, সময়, মূল্যবোধ, চেতনা ও যৌক্তিকতার এক নির্ভেজাল উপস্থাপনা।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক শ্রী কুণাল রায় মূলত সমকালীন প্রেক্ষাপটে রচিত গল্পগুলো অনুবাদ করেছেন।এবং শ্রীমতি কমলিকা মজুমদার বহু শতাব্দী পূর্বে আর্থসামাজিক পটভূমিতে রচিত গল্পগুলো অনুবাদ করেছেন। এই মহাযজ্ঞ এর সাথে যুক্ত এই দুই অনুবাদক নিজেরদের অভিজ্ঞতাও দর্শকদের সাথে ভাগ করে নেন। অনুষ্ঠানের ধ্রুব তারা শ্রী অভীক গঙ্গোপাধ্যায় আলোকপাত করেন তাঁর এই অনবদ্য সৃষ্টির কিছু ‘অন্দরমহলের’কথা। উনি বলেন” লাভ ইন সিএসতা চেষ্টা করছে রহস্যময় মনুষ্য চেতনা, সময়ের আচরণ ও তার বিভিন্ন দিককে আটক করতে, মূলত মনুষ্য ইতিহাসের মাধ্যমে”।

অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণার পর পাঠকদের উৎসাহ, লেখকের অটোগ্রাফ নেওয়ার উন্মাদনা রীতিমত অনুপ্রেরণাদায়ক! সাথে ঠান্ডা পানীয়, কিছু আড্ডা, আলাপ আলোচনা সাফল্যমন্ডিত
করে তোলে অনুষ্ঠানকে। ” দ্বিপ্রহরের প্রেম” তার যথাযত মর্যাদাই সেদিন পেয়েছিল, সকলের মাঝে, সকলের প্রাণে!!

Written by –  কুণাল রায়

Advertisement

Related Articles

Back to top button