সাক্ষাৎকার

তৃণমূলের সব নেতা প্রশান্ত কিশোরের কথায় চলে : বিজেপি নেতা রাজু ব্যানার্জি

Advertisement
Advertisement

অমিত শাহের ভার্চুয়াল জনসভার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে গরম হাওয়া বইতে শুরু করে দিয়েছে। একদিকে করোনা দাপট ও অন্যদিকে রাজনৈতিক তরজা দুই মিলিয়ে এখন জল্পনা তুঙ্গে।গতকাল শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপিকে তুলোধোনা করে।

Advertisement
Advertisement

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মতামত নেওয়ার জন্য ভারত বার্তার প্রতিনিধি প্রীতম দাস যোগাযোগ করেছিলেন মাননীয় বিজেপি নেতা রাজু ব্যানার্জি সঙ্গে। তিনি তার মতামত আমাদের ভারত বার্তার প্রতিনিধিকে জানান।

Advertisement

১) অমিত শাহের সোনার বাংলা গড়ে তোলার মন্তব্য করে এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ চ্যাটার্জি বলেন – বিজেপি সোনার বাংলা গরে সোনা নিয়ে পালিয়ে যাবে। কি বলবেন এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ?

Advertisement
Advertisement

রাজু ব্যানার্জি : তৃণমূলের সব নেতা প্রশান্ত কিশোরের কথায় চলে। তিনি যেমন ভাবে বলেন তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরা সেই অনুযায়ী কথা বলে। আজকে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার পরিস্থিতি কেমন বলুনতো ? পার্থ চট্টোপাধ্যায় বড় বড় কথা বলছে। শিক্ষাঙ্গনগুলোতে গুন্ডাদের তাণ্ডব চলছে। যাদবপুরে কিভাবে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে হেনস্থা করা হলো তার কোন প্রতিবাদ নেই। প্রত্যেকটা শিক্ষাঙ্গনে তৃণমূলের বাহিনী। প্রফেসরদের কে ভয় দেখানো হচ্ছে , রেজিস্টার – উপাচার্য নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। শিক্ষায় তো একদম তৃণমূলীকরণ হয়ে গেছে। শিক্ষায় গুন্ডারাজ চলছে আর সেই গুন্ডারাজ দের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মমতা ব্যানার্জিও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শিক্ষার অবক্ষয় ও অবমূল্যায়ন হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষায় যে নাম ছিল তার বদনাম করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার।

২) আজ একইদিনে বন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন যে বাংলা দখলের লক্ষ্যে কখনো আয়ুষ্মান ভারত ও কখনো কৃষক সম্মান ইত্যাদির নাম দিয়ে মানুষকে ভাওতা দিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে ও এর পাশাপাশি বলেন বিগত বিজেপি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি ভাওতা প্রতিশ্রুতি ও সবটাই মিথ্যে। কি বলবেন এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ?

রাজু ব্যানার্জি : অন্য সব রাজ্যে আয়ুষ্মান ভারত সবাই পাচ্ছে ও অন্য রাজ্যে কৃষকরা 6000 টাকা করে এবং কোভিদ কে কেন্দ্র করে 2000 টাকা করে পাচ্ছে। এই রাজ্যে জনধন একাউন্টে মহিলাদের কে 500 টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এই রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কয়েক লক্ষ বাড়ি গরে দিয়েছি। সেখান থেকে তৃণমূল কাটমানি খেয়েছে। শৌচাগার করে দেয়া হয়েছে সেখান থেকেও তৃণমূল কাটমানি খেয়েছে। এই রাজ্যে কাটমানি সরকার চলছে। এই রাজ্যে ভাওতার সরকার চলছে। এরা প্রেসে ঘোষণা করবে আর বাস্তবে কোন জায়গায় নেই। কেন্দ্রীয় সরকার গরিব মানুষদের জন্য যেভাবে উজ্জ্বলা যোজনায় তিনটে করে ফ্রিতে গ্যাস দিচ্ছে , এটাই তো হাতের সামনে উদাহরণ। মানুষ তো দেখছে। বনমন্ত্রী কি বলল তাতে কি আসে যায় ? মমতা ব্যানার্জি মিথ্যায় পিএইচডি করেছেন আর তার ভাইয়েরা সেই পথ অনুসরণ করছে। মানুষ তাদের বিশ্বাস করছে না আর এই মিথ্যা বলে মানুষকে ভোলানো যাবে না। যারা চাল চুরি করে গরীব মানুষের , যে তৃণমূল চাল চোর তাদের আর কিছু বলার নৈতিকতা আছে ?

৩) অমিত শাহের ভার্চুয়াল জনসভার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে একটা ঝড় উঠেছে বলা যেতেই পারে। একই দিনে শিক্ষামন্ত্রীও বনমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রীর করোনা এক্সপ্রেস মন্তব্য নিয়ে ডিফেন্সিভ হওয়া। সবমিলিয়ে আপনি কি মনে করছেন ?

রাজু ব্যানার্জি : পরিষ্কার বিষয় হচ্ছে মানুষকে ঠকিয়েছে ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়ে গেছে। তার জন্য তার ভাই রাস্তায় নামিয়েছে। কিন্তু মানুষ তা বিশ্বাস করে না। আপনারা যে কোন টিভির ফুটেজ দেখুন তো প্রত্যেকটা ফুটেজে পাবেন মমতা ব্যানার্জি স্পষ্ট বলছেন করোনা এক্সপ্রেস চালু করেছে। আমরা শ্রমিক এক্সপ্রেস বলছি আর উনারা করোনা এক্সপ্রেস বলছেন। মানুষ তো দেখছে মুখ্যমন্ত্রী ওই চেয়ারটাই দামই জানেনা। মিথ্যাচার মিথ্যাচার আর মিথ্যাচার। বাংলার মানুষদের অপমান করছে ও চেয়ারটার অপমান করছে।

৪) এদিনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আরো একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করে বলেছেন আমারে রাজ্যে প্রায় 1 লক্ষ কোটি টাকা খরচ হয়েছে কেন্দ্র সেখানে মাত্র এক হাজার কোটি টাকা সাহায্য করেছে যেখানে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে। তো পরোক্ষভাবে শিক্ষা মন্ত্রী আজকে কেন্দ্রের উপরে যে আঙুল উঠিয়েছেন কি বলবেন এটি নিয়ে ?

রাজু ব্যানার্জি : অ্যাম্ফান হবার পরের দিনই নরেন্দ্র মোদি এসেছিলেন। দেখার পর 24 ঘন্টার ভিতর আপৎকালীন 1000 কোটি টাকা দিয়েছিলে। তারপর তো আর ক্ষয়ক্ষতির বিশ্লেষণ হবে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষেরা এর আগেও বুলবুল দেখেছেন , ফনি দেখেছেন, তার আগে আইলা দেখেছেন। যারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত হয় তারা টাকা পায় না। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলেছি এখানে একটা নোডাল অফিসার দিন আর ক্ষয়ক্ষতি কত হয়েছে আজকাল স্যাটেলাইট আছে সবকিছুই দেখা ও জানা যায়। আমরা বলেছি যারা প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারাই টাকা পাক। তৃণমূলের হাতে যেন কোনো টাকা না আসে , আসলে তারা দলবাজি করবে , গোষ্ঠী বাজি করবে ও ইলেকশন ফান্ড করবে। উনারা মিথ্যাচার করে আসছে। 6 হাজার 400 কোটি টাকা খরচ হয়েছে আবার এদিকে বলছে টাকা নেই। ক্লাবগুলোকে 1300 – 1400 কোটি টাকা দিয়ে দিল দান-খয়রাতি। সুতরাং এই সরকারটা আছে বলেই কেউ মনে করছে না। কভিডে ব্যর্থ , স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ব্যর্থ , খাদ্য ব্যবস্থায় ব্যর্থ। আজ কোন রাজ্যে বলুনতো খাদ্য সচিব , পুর সচিব , স্বাস্থ্যসচিব চেঞ্জ করে দিয়েছে ? আমফান এর পরে সিইএসসির ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। এই সরকার টার কোনো অস্তিত্ব আছে বলেই আমরা মনে করছি না। মিথ্যাচার ও এই অভিযোগ ব্যর্থতাগুলো থেকে কেন্দ্রের দিকে নজর ঘুরিয়ে দেবার জন্য খেলা খেলছে প্রশান্ত কিশোরের নির্দেশে। কিন্তু এত সস্তা না বাংলার জনগণ বুঝে গেছে আর বাংলার মানুষ তাই যোগ্য জবাব যোগ্য সময় দিয়ে দেবে।

[ সাক্ষাৎকার গ্রহণ : প্রীতম দাস]

Advertisement

Related Articles

Back to top button