টলিউডবিনোদন

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা উদ্বেগজনক,বাড়ছে স্নায়বিক সমস্যা

Advertisement
Advertisement

বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও গত বৃহস্পতিবার থেকে স্টেরয়েডের ডোজ কমানোর ফলে তাঁর স্নায়বিক সমস্যা বেড়েছে। ফলে সৌমিত্রবাবুর আচ্ছন্নভাব ক্রমশ বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার তাঁর শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ায় সৌমিত্রবাবুকে রক্ত দিতে হয়। চিকিৎসকদের বক্তব্য, স্টেরয়েডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। সৌমিত্রবাবুর বয়স 85 বছর হওয়ার কারণে তাঁর পক্ষে অত্যধিক স্টেরয়েড ক্ষতিকর হতে পারে। এই কারণে স্টেরয়েডের ডোজ কমানো হয়েছে। কিন্তু স্টেরয়েডের ডোজ কমানোর ফলে সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবনতি হচ্ছে। সৌমিত্রবাবু অটোইমিউন এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে,অটোইমিউন এনসেফ্যালাইটিস না কাটলে সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়া সম্ভব নয়। সৌমিত্রবাবু এই মুহূর্তে দুর্বল। তিনি কথা বলতে বা মুখ দিয়ে খেতে পারছেন না। তাঁর ফিজিওথেরাপি ও স্পিচ থেরাপি করেও কোন লাভ হয়নি।

Advertisement
Advertisement

সৌমিত্রবাবুর শরীরে পুরানো ক্যান্সার ফিরে আসার কারণে তাঁর মস্তিষ্ক ও ফুসফুসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। স্টেরয়েডের জন্য সেই সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও স্টেরয়েডের ডোজ কমানোর ফলে আবার তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে। সৌমিত্রবাবুর মূত্রথলিতেও সংক্রমণ রয়েছে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সচল থাকলেও সৌমিত্রবাবুর অসংলগ্নতা রয়েছে। তাঁর মস্তিষ্কের চেতনাও কমে গিয়েছে। তাঁর শারীরিক অস্থিরতা ও তন্দ্রাচ্ছন্নতা চিকিৎসকদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। সৌমিত্রবাবুর শরীরে রক্তচাপ ও সোডিয়াম-পটাশিয়ামের সামান্য তারতম্য ঘটছে।

Advertisement

গত 6 ই অক্টোবর করোনা সংক্রমণ নিয়ে বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি হন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। 2006 থেকে সৌমিত্রবাবুর সিওপিডির সমস্যা রয়েছে। তার উপর করোনা হওয়ায় সৌমিত্রবাবুর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ক্রমশ তাঁর সোডিয়াম ও পটাশিয়াম লেভেল নেমে যেতে থাকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী 16 জন চিকিৎসকদের বিশেষ একটি টিম সৌমিত্রবাবুর শরীরে দুই বার প্লাজমা থেরাপি করেন। কিন্তু তার পরেও সৌমিত্রবাবুর কোনো শারীরিক উন্নতি হয়নি একসময় তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বাড়তে থাকে। সৌমিত্রবাবুর মস্তিষ্ক সূচক 6-এ নেমে যায়। চিকিৎসকরা তাঁকে বাইপ‍্যাপ ভেন্টিলেশনে রাখেন। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে দেওয়ার কথা ভাবা হয়।

Advertisement
Advertisement

কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। তাঁর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। সৌমিত্রবাবু অ্যান্টিবায়োটিকে ভালো সাড়া দিতে থাকেন। তাঁর তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব অনেকটা কেটে যায়। কিন্তু স্টেরয়েডের ডোজ কমানোর সঙ্গে সঙ্গেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এই মুহূর্তে চিকিৎসকরা তাঁর এমআরআই ও সিএসএফ রিপোর্ট বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করছেন। স্টেরয়েডের বিকল্প হিসাবে কোনো ওষুধের কথা ভাবা হচ্ছে। সৌমিত্রবাবুর স্নায়বিক সমস্যার চিকিৎসার জন্য 16 জন চিকিৎসকদের বিশেষ টিমে নতুন করে পাঁচ জন স্নায়ু বিশেষজ্ঞ যুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বেলভিউ কর্তৃপক্ষ। এদিকে অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন মুম্বই থেকে সৌমিত্রবাবুর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। তিনি সৌমিত্রবাবুর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। অপরদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সৌমিত্রবাবুর ভেন্টিলেশনে থাকাকালীন কিছু ফটো ভাইরাল হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁর কন্যা পৌলমী। পৌলমী সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে অভিনেতার ব্যক্তিগত পরিসর লঙ্ঘন ও মর্যাদাহানি না করার অনুরোধ করেন।

Advertisement

Related Articles

Back to top button